২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিহত অশোক সিংহের মৃতদেহ পরিবার কে দিতে বললো হাইকোর্ট

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, শনিবার
  • / 33

পারিজাত মোল্লা: শনিবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় মৃত অশোক সিংয়ের দেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। দেহ হস্তান্তরের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। সেই মামলায় এবার আমহার্স্ট স্ট্রিট-কাণ্ডে মৃত অশোক সিংয়ের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অনুমতি দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এর পাশাপাশি হাইকোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, ‘এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে মৃতের বাড়ি পর্যন্ত এবং শেষকৃত্য করার জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার জন্য। আদালতের নির্দেশ পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে সরকারি গাড়িতে মরদেহ নিয়ে যেতে হবে।’

উল্লেখ্য, এদিন আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঘটনা জনস্বার্থ মামলাটি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠলে আদালত জানায়, “আমাদের মৃত ব্যক্তির প্রতি সম্মান জানানো উচিত। কিন্তু সরকার পক্ষ উপস্থিত নেই। সরকার পক্ষ উপস্থিত থাকলে শুনানি হবে।” জনস্বার্থ মামলাকারী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত অশোক সিংয়ের পরিবারের আইনজীবী অনামিকা পাণ্ডেও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন এজলাসে। আদালত সরকার পক্ষের কারও উপস্থিত না থাকার বিষয়টি উত্থাপন করার পর, সরকার পক্ষের আইনজীবীও উপস্থিত হন এজলাসে। সব পক্ষ উপস্থিত হওয়ার সওয়াল-জবাব পর্ব শেষে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ মৃতের দেহ পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার অনুমতি দেয়।

আরও পড়ুন: জয়মাল্য বাগচী হতে চলেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি

গত বুধবার এক চোরাই মোবাইল কেনার জন্য আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ডেকে পাঠানোর পর হঠাত্‍ থানাতেই মৃত্যু হয় অশোক সিংয়ের। পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, ‘থানায় ডেকে মারধর করা হয়েছে তাঁকে”। এরপর মৃতের দেহের ময়নাতদন্তও হয়েছে এবং গোটা প্রক্রিয়া ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। যদিও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে, ‘মারধরের কোনও চিহ্ন নেই। স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে ওই ব্যক্তির’।পুলিশি নিরাপাত্তা দিয়ে যাতে দেহ সত্‍কার করা হয় সেই মর্মেও এদিন আবেদন জানানো হয়। শনিবার আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল আদালতে জানান, ‘তাঁর আর্জি দেহ যেন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার হয়’।

আরও পড়ুন: নবাব সিরাজের সম্পত্তি রক্ষায় কমিটি গড়ল হাইকোর্ট

তারপরই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ অশোক সাউয়ের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেবে’। অশোক সাউয়ের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। হাইকোর্ট জানায়, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সহমর্মিতা রয়েছে মৃতের পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার পর কোনওভাবেই যাতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে পুলিশ কে’।

আরও পড়ুন: রাজ্যপালের মানহানি মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী বদল

এদিন সকালে নিহত পরিবারের আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, ‘আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় মৃত অশোকের দেহ দিতে চাইছে না পুলিশ। আদালতের নির্দেশে দেহ এখন এসএসকেএম হাসপাতালেই রয়েছে’। দেহ দেওয়া হোক আবেদন নিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এদিন আইনজীবী জানান, ‘যেহেতু দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই পরিবার চাইছে দেহ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু পুলিশ তা দিতে রাজি নয়। তারা বলছে কোর্টের নির্দেশ ছাড়া মরদেহ দেওয়া যাবে না’। গত শুক্রবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছিল, ‘এখনই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজন নেই’। থানায় রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেশ করে আদালতে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ‘মৃত্যু হয়েছে ব্রেন হ্যামারেজে’।

গত শুক্রবারে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছিল, ‘আপাতত সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। মৃতের দেহ থাকবে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের দায়িত্ব থাকবেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার’। ওই শুনানি পর্বে মৃতের দেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজন আছে কি না? তা আগামী ২৩ নভেম্বর শুনানিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু এদিন সকালেই আইনজীবীরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানায়। তাতে সম্মতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নিহত অশোক সিংহের মৃতদেহ পরিবার কে দিতে বললো হাইকোর্ট

আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, শনিবার

পারিজাত মোল্লা: শনিবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় মৃত অশোক সিংয়ের দেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। দেহ হস্তান্তরের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। সেই মামলায় এবার আমহার্স্ট স্ট্রিট-কাণ্ডে মৃত অশোক সিংয়ের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অনুমতি দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এর পাশাপাশি হাইকোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, ‘এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে মৃতের বাড়ি পর্যন্ত এবং শেষকৃত্য করার জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার জন্য। আদালতের নির্দেশ পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে সরকারি গাড়িতে মরদেহ নিয়ে যেতে হবে।’

উল্লেখ্য, এদিন আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঘটনা জনস্বার্থ মামলাটি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠলে আদালত জানায়, “আমাদের মৃত ব্যক্তির প্রতি সম্মান জানানো উচিত। কিন্তু সরকার পক্ষ উপস্থিত নেই। সরকার পক্ষ উপস্থিত থাকলে শুনানি হবে।” জনস্বার্থ মামলাকারী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত অশোক সিংয়ের পরিবারের আইনজীবী অনামিকা পাণ্ডেও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন এজলাসে। আদালত সরকার পক্ষের কারও উপস্থিত না থাকার বিষয়টি উত্থাপন করার পর, সরকার পক্ষের আইনজীবীও উপস্থিত হন এজলাসে। সব পক্ষ উপস্থিত হওয়ার সওয়াল-জবাব পর্ব শেষে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ মৃতের দেহ পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার অনুমতি দেয়।

আরও পড়ুন: জয়মাল্য বাগচী হতে চলেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি

গত বুধবার এক চোরাই মোবাইল কেনার জন্য আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ডেকে পাঠানোর পর হঠাত্‍ থানাতেই মৃত্যু হয় অশোক সিংয়ের। পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, ‘থানায় ডেকে মারধর করা হয়েছে তাঁকে”। এরপর মৃতের দেহের ময়নাতদন্তও হয়েছে এবং গোটা প্রক্রিয়া ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। যদিও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে, ‘মারধরের কোনও চিহ্ন নেই। স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে ওই ব্যক্তির’।পুলিশি নিরাপাত্তা দিয়ে যাতে দেহ সত্‍কার করা হয় সেই মর্মেও এদিন আবেদন জানানো হয়। শনিবার আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল আদালতে জানান, ‘তাঁর আর্জি দেহ যেন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার হয়’।

আরও পড়ুন: নবাব সিরাজের সম্পত্তি রক্ষায় কমিটি গড়ল হাইকোর্ট

তারপরই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ অশোক সাউয়ের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেবে’। অশোক সাউয়ের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। হাইকোর্ট জানায়, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সহমর্মিতা রয়েছে মৃতের পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার পর কোনওভাবেই যাতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে পুলিশ কে’।

আরও পড়ুন: রাজ্যপালের মানহানি মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী বদল

এদিন সকালে নিহত পরিবারের আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, ‘আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় মৃত অশোকের দেহ দিতে চাইছে না পুলিশ। আদালতের নির্দেশে দেহ এখন এসএসকেএম হাসপাতালেই রয়েছে’। দেহ দেওয়া হোক আবেদন নিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এদিন আইনজীবী জানান, ‘যেহেতু দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই পরিবার চাইছে দেহ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু পুলিশ তা দিতে রাজি নয়। তারা বলছে কোর্টের নির্দেশ ছাড়া মরদেহ দেওয়া যাবে না’। গত শুক্রবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছিল, ‘এখনই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজন নেই’। থানায় রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেশ করে আদালতে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ‘মৃত্যু হয়েছে ব্রেন হ্যামারেজে’।

গত শুক্রবারে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছিল, ‘আপাতত সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। মৃতের দেহ থাকবে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের দায়িত্ব থাকবেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার’। ওই শুনানি পর্বে মৃতের দেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজন আছে কি না? তা আগামী ২৩ নভেম্বর শুনানিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু এদিন সকালেই আইনজীবীরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানায়। তাতে সম্মতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।