২৫ বইয়ে নিষেধাজ্ঞা কাশ্মীরে, প্রতিবাদে সরব মেহবুবা মুফতি সহ অনেকে

- আপডেট : ৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
- / 21
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: সংবিধান, ফ্যাসিবাদ এবং ইতিহাস নিয়ে লেখা ২৫টি বইয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রশাসন। কাশ্মীর সংক্রান্ত ২৫টি বই নিষিদ্ধ করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি , সিপিআই(এম) নেতা মুহাম্মদ ইউসুফ তারিগামি সহ অন্যান্য রাজনীতিবিদরা।
এক্স হ্যান্ডেল পোস্ট করে মেহেবুবা মুফতি জানান, বই নিষিদ্ধ করলেই ইতিহাস মুছে যাবে না । ২৫ টি ঐতিহাসিক বই নিষিদ্ধ করে কাশ্মীরের গণতান্ত্রিক কণ্ঠস্বর এবং মৌলিক স্বাধীনতা দমন করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের সংজ্ঞা বদলে দিচ্ছে এরা। মুক্তভাবে চিন্তাভাবনার আদান-প্রদানের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয় গণতন্ত্র। অথচ এরা কি করছে ? এইভাবেই গোটা দেশে শিক্ষা এবং মুক্ত চিন্তার ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞা স্বৈরাচার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নির্লজ্জ আক্রমণ। বই নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। এই ভাবে কণ্ঠস্বর রোধ করা যাবে না।
সিপিআই(এম) নেতা মুহাম্মদ ইউসুফ তারিগামি বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে উপ রাজ্যপাল সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে চলেছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং সন্ত্রাসবাদে’ মদতের অভিযোগ তুলে যে পঁচিশটি বইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তার সবই কাশ্মীরের শিকড় এবং ইতিহাসকে বিশ্লেষণ করে বর্তমান পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করেছে। অবিলম্বে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হবে। আজ কাশ্মীরে হচ্ছে, কাল গোটা দেশে হবে। স্বাধীনতার মাসে কাশ্মিরের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। আরএসএস স্বাধীনতার আন্দোলনে ছিল না। অথচ এখন নির্দ্বিধায় মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে।
অন্য এক নেটাগরিক গোঁসা হয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহকে কাপুরুষ বলেও আখ্যা দেন। আর শুক্রবার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, আমি কখনও বই নিষিদ্ধ করিনি এবং করবও না। জম্মু ও কাশ্মীরের নিজস্ব একটা ইতিহাস, সংস্কৃতি রয়েছে। নিষিদ্ধ হওয়া বইগুলো সেই ইতিহাস উজ্জীবিত করে রাখত। তাই বই নিষিদ্ধকরণে আমার কোনও হাত নেই। জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রশাসন উপরিউক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বলা বাহুল্য, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনশৃঙ্খলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কাশ্মীর সংক্রান্ত ২৫টি বই নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছেন বুকারজয়ী সাহিত্যিক অরুন্ধতী রায়, ভারতীয় সংবিধান এবং কাশ্মীর বিশেষজ্ঞ এজি নুরানি শেখ এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও তুলনামূলক রাজনীতি বিষয়ের অধ্যাপক সুমন্ত্র বোস-সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট লেখকের লেখা বই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞার অন্যতম কারণ হল ‘রাজনীতি’ সম্ভবত বাজেয়াপ্ত করা বইগুলোর লেখক বা লেখিকাদের রাজনৈতিক বা আদর্শিক অবস্থানকে সমর্থন করে না সরকার পক্ষ। তাই এই ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই ভাবেই কাশ্মীরে ক্রমাগত মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।