২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রেশন মামলায় ইডিকে রিপোর্ট দিতে বললো কলকাতা হাইকোর্ট

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৩ মে ২০২৪, সোমবার
  • / 48

মোল্লা জসিমউদ্দিন: সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে উঠে রেশন সংক্রান্ত মামলা।রাজ্যে রেশন দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত ৮৭টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এদিন রিপোর্ট দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জানালো রাজ্য। এর মধ্যে ৬৫টি মামলায় ইতিমধ্যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে রাজ্য। ২ টি মামলায় ত্রুটি আছে। বাকি ২০টি মামলার তদন্ত চলছে বলে ওই রিপোর্টে জানিয়েছে রাজ্য।রাজ্যের এই রিপোর্ট নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে চায় ইডি। আগামী ১৭ জুনের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি কে তাদের অবস্থান জানাতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ১৭ জুন ইডিকে ওই রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে রাজ্যের হাতে থাকা অন্তত ৬টি মামলার তদন্তে স্থগিত থাকবে আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত। গাইঘাটা থানার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সব রেশন দুর্নীতির মামলা ইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।এদিকে রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইডির হাতে উঠে এসেছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি, -’১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সেই দুর্নীতির টাকা পাঠানো হয়েছে বিদেশে’। দুর্নীতির তদন্ত যথাযথ হয়নি। উল্টে মূল এফআইআর রাজ্য পুলিশ নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। এবার রাজ্যে রেশন কার্ড কত? খাদ্য দফতরের থেকে জানতে চাইল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। খাদ্য দফতরের কাছে ইডির প্রশ্ন, রাজ্যে চালু রেশন কার্ড কতগুলি রয়েছে অর্থাৎ যে সমস্ত রেশন কার্ডে নিয়মিত রেশন তোলা হয়, তার সংখ্যা কত? রাজ্যে ২০১৯ সালের আগে কত রেশন কার্ড ছিল এবং এখন কত হয়েছে? রেশন কার্ড ডিজিটালাইজড হওয়ার সময় কত রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে? এইসব জানতে চেয়েছে ইডি।বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ১৭ জুন ইডিকে ওই রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও রাজ্যের হাতে থাকা অন্তত ৬ টি মামলার তদন্ত ২৪ জুন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে হাইকোর্টের তরফে।গাইঘাটা থানার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সব রেশন দুর্নীতির মামলা ইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে রাজ্যের কোন কোন থানায় রেশন দুর্নীতি নিয়ে কটি এফআইআর দায়ের রয়েছে, তা আদালতে জমা দেওয়ার আবেদন করে ইডি। ইডির সেই দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে রিপোর্ট পেশ করা হয়।হাইকোর্ট এর আগে রেশন দুর্নীতির ছটি মামলায় অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। আদালত জানিয়েছিল, এই ছটি মামলায় তদন্ত করতে পারবে না রাজ্যের পুলিশ। এদিন আদালতের তরফে সেই অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, রাজ্যের পেশ করা রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।২০১৯-এ বালিগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া এফআইআরের ভিত্তিতে রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা শুরু। গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে আদালত বলে, পুলিশ যদি সেই মামলার তদন্ত চালিয়ে যায়, তাহলে তা আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।রেশন দুর্নীতির ছটি মামলার তদন্তে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আদালতে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তারা বলেছিল, তদন্তে নেমে তারা জানতে পেরেছে ছটি এফআইআরের ক্ষেত্রে রাজ্যের পুলিশ কোনও পদক্ষেপই নেয়নি। তথ্যপ্রমাণ হাতে থাকার পরেও তদন্ত বন্ধ করে রাখে পুলিশ। এমন কী এইসব মামলায় যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিজিপিকে চিঠি দেওয়া হলেও, তার কোনও জবাব আসেনি বলেও আদানতে জানিয়েছিল ইডি।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করপে ইডি। তারপর এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে মন্ত্রীপদ থেকে অপসারণ করা হয়। এছাড়াও রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় বাকিবুর রহমান এবং বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে।পরবর্তীতে গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান এর বাড়িতে ইডির অভিযান ছিল এই রেশন সংক্রান্ত দুর্নীতির সুত্র ধরেই।

আরও পড়ুন: এসএসসি মামলায় রাজ্যের স্বস্তি, মামলায় জরুরি হস্তক্ষেপে ‘না’ হাইকোর্টের, নিয়োগে রইল না বাধা

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রেশন মামলায় ইডিকে রিপোর্ট দিতে বললো কলকাতা হাইকোর্ট

আপডেট : ১৩ মে ২০২৪, সোমবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে উঠে রেশন সংক্রান্ত মামলা।রাজ্যে রেশন দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত ৮৭টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এদিন রিপোর্ট দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জানালো রাজ্য। এর মধ্যে ৬৫টি মামলায় ইতিমধ্যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে রাজ্য। ২ টি মামলায় ত্রুটি আছে। বাকি ২০টি মামলার তদন্ত চলছে বলে ওই রিপোর্টে জানিয়েছে রাজ্য।রাজ্যের এই রিপোর্ট নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে চায় ইডি। আগামী ১৭ জুনের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি কে তাদের অবস্থান জানাতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ১৭ জুন ইডিকে ওই রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে রাজ্যের হাতে থাকা অন্তত ৬টি মামলার তদন্তে স্থগিত থাকবে আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত। গাইঘাটা থানার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সব রেশন দুর্নীতির মামলা ইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।এদিকে রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইডির হাতে উঠে এসেছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি, -’১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সেই দুর্নীতির টাকা পাঠানো হয়েছে বিদেশে’। দুর্নীতির তদন্ত যথাযথ হয়নি। উল্টে মূল এফআইআর রাজ্য পুলিশ নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। এবার রাজ্যে রেশন কার্ড কত? খাদ্য দফতরের থেকে জানতে চাইল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। খাদ্য দফতরের কাছে ইডির প্রশ্ন, রাজ্যে চালু রেশন কার্ড কতগুলি রয়েছে অর্থাৎ যে সমস্ত রেশন কার্ডে নিয়মিত রেশন তোলা হয়, তার সংখ্যা কত? রাজ্যে ২০১৯ সালের আগে কত রেশন কার্ড ছিল এবং এখন কত হয়েছে? রেশন কার্ড ডিজিটালাইজড হওয়ার সময় কত রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে? এইসব জানতে চেয়েছে ইডি।বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ১৭ জুন ইডিকে ওই রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও রাজ্যের হাতে থাকা অন্তত ৬ টি মামলার তদন্ত ২৪ জুন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে হাইকোর্টের তরফে।গাইঘাটা থানার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সব রেশন দুর্নীতির মামলা ইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে রাজ্যের কোন কোন থানায় রেশন দুর্নীতি নিয়ে কটি এফআইআর দায়ের রয়েছে, তা আদালতে জমা দেওয়ার আবেদন করে ইডি। ইডির সেই দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে রিপোর্ট পেশ করা হয়।হাইকোর্ট এর আগে রেশন দুর্নীতির ছটি মামলায় অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। আদালত জানিয়েছিল, এই ছটি মামলায় তদন্ত করতে পারবে না রাজ্যের পুলিশ। এদিন আদালতের তরফে সেই অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, রাজ্যের পেশ করা রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।২০১৯-এ বালিগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া এফআইআরের ভিত্তিতে রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা শুরু। গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে আদালত বলে, পুলিশ যদি সেই মামলার তদন্ত চালিয়ে যায়, তাহলে তা আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।রেশন দুর্নীতির ছটি মামলার তদন্তে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আদালতে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তারা বলেছিল, তদন্তে নেমে তারা জানতে পেরেছে ছটি এফআইআরের ক্ষেত্রে রাজ্যের পুলিশ কোনও পদক্ষেপই নেয়নি। তথ্যপ্রমাণ হাতে থাকার পরেও তদন্ত বন্ধ করে রাখে পুলিশ। এমন কী এইসব মামলায় যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিজিপিকে চিঠি দেওয়া হলেও, তার কোনও জবাব আসেনি বলেও আদানতে জানিয়েছিল ইডি।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করপে ইডি। তারপর এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে মন্ত্রীপদ থেকে অপসারণ করা হয়। এছাড়াও রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় বাকিবুর রহমান এবং বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে।পরবর্তীতে গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান এর বাড়িতে ইডির অভিযান ছিল এই রেশন সংক্রান্ত দুর্নীতির সুত্র ধরেই।

আরও পড়ুন: এসএসসি মামলায় রাজ্যের স্বস্তি, মামলায় জরুরি হস্তক্ষেপে ‘না’ হাইকোর্টের, নিয়োগে রইল না বাধা