বালেশ্বরের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার এখনও পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু, মৃত বাসন্তীর তিন ভাই

- আপডেট : ৩ জুন ২০২৩, শনিবার
- / 8
মুহাম্মদ ফিরোজ , বারুইপুর: বালেশ্বরের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতও হয়েছেন অনেকে। এপর্যন্ত জেলা জুড়ে মোট ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
মৃতদের মধ্যে ৬ জন বাসন্তীর, ২ জন কাকদ্বীপের, ১ জন মগরাহাট-১ ব্লকের, ১ জন ক্যানিং-১ ব্লকের এবং ১ জন বারুইপুরের। মর্মান্তিক এই ঘটনায় গোটা জেলা জুড়ে হাহাকার। মৃতদের কেউ গিয়েছিলেন চাকরির খোঁজে আবার কেউ চাষের কাজে। আবার কেউ জন মজুরি করতে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিলছে এই সব শোক সংবাদ। আহতের সংখ্যা প্রায় সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। তবে শুধু নিহত বা আহতই নয়, এখনও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার সংখ্যা ৩৪ জন বলে জানা গেছে।
কাকদ্বীপের মধুসূদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং নস্কর পাড়ার বাসিন্দা মইনুদ্দিন শেখ ও শ্রীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগরের বাসিন্দা হালিম মোল্লা কাজে যোগ দিতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে তামিলনাড়ু যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে। এই দুঃসংবাদ এসে পৌঁছনোর পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
অন্যদিকে, বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাসন্তীর ছয় জনের। তাঁদের মধ্যে তিন ভাই হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন, দিবাকর গায়েনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও বাসন্তীর ছরানেখালি গ্রামের আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের নাম বিকাশ হালদার, সঞ্জয় হালদার। শুক্রবার সকাল ৯টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন এঁরা। এছাড়াও বারুইপুরের ধপধপি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব মল্লিকপুরের বাসিন্দা সৌরভ রায় (২২)। ভগ্নীপতীর সঙ্গে কাজের খোঁজে যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এই তরতাজা যুবক। তার ভগ্নীপতী বিশ্বনাথ চক্রবর্তী নিখোঁজ। বিশ্বনাথবাবুর বাড়ি বিষ্ণুপুর থানার জুলপিয়াতে। এই ট্রেন দুর্ঘটনায় বাসন্তী ও গোসাবা এলাকার আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। জয়নগরের এক যুবকও নিখোঁজ। সঞ্জীব মণ্ডল (২২) জয়নগর থানার সরবেড়িয়ার বাসিন্দা।
সঞ্জীবের পরিবার জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে দিনমজুরির কাজের জন্য কেরল রওনা দেন তিনি। জয়নগরের সরবেড়িয়া থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য শালিমার যান। পরিবারের লোকজন ট্রেন দুর্ঘটনার খবর জানতে পেরে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তাঁর ফোনে একাধিকবার যোগোযোগ করার চেষ্টা করলেও কথা বলতে পারেননি। উপায় না পেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এই পর্যন্ত খাওয়া খবরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৯৯ জন। নিখোঁজ রয়েছেন ৩৯ জন এবং অভিশপ্ত ট্রেন থেকে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে এসেছেন ১৬ জন।