দিনে ১০ ঘণ্টা কাজের নির্দেশ, বিতর্কের মুখে চন্দ্রবাবু সরকার
- আপডেট : ৮ জুন ২০২৫, রবিবার
- / 30
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ অন্ধ্রপ্রদেশে শ্রম আইন সংস্কার করে বিতর্কের কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। এবার থেকে রাজ্যের বেসরকারি দপ্তর ও কারখানাগুলিতে দিনে ১০ ঘণ্টা কাজ করতেই হবে – এমনই নির্দেশ জারি করল তাঁর সরকার। নতুন এই আইনে মহিলাদের রাতের শিফটেও যুক্ত করা হয়েছে। সন্ধে ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
সরকারি দাবি, এই সিদ্ধান্ত রাজ্যে বিনিয়োগ টানবে, তৈরি হবে কর্মসংস্থানের নতুন দিশা। কিন্তু এই যুক্তি মানতে নারাজ শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে শ্রমিকদের উপর শোষণ আরও বাড়বে। বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়ন সিআইটিইউ সহ বহু সংগঠন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হয়েছে। তারা বলেছে, এর আগেই কেন্দ্রীয় শ্রম কোডের মাধ্যমে শ্রমজীবীদের অধিকারে কোপ পড়েছে। এবার রাজ্যও সেই পথেই হাঁটছে।
অন্ধ্র সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ মন্ত্রী কে পার্থসারথি জানিয়ে দিয়েছেন, শ্রম আইনের ৫৪ নম্বর ধারায় দিনে ৯ ঘণ্টার বদলে ১০ ঘণ্টা কাজের নিয়ম করা হয়েছে। আবার ৫৫ নম্বর ধারায় যেখানে ৫ ঘণ্টা কাজের পর ১ ঘণ্টা বিরতি থাকত, তা বাড়িয়ে ৬ ঘণ্টা কাজের পর বিরতির নিয়ম করা হয়েছে।
চন্দ্রবাবু নাইডুর দাবি, “এই সিদ্ধান্ত কর্ম-জীবনের ভারসাম্য উন্নত করবে এবং রাজ্যে কর্মসংস্থান বাড়াবে।” তাঁর দল তেলুগু দেশম পার্টি মনে করছে, এই সংস্কারের ফলে রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত হবে। তবে বাস্তবের অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা। এর আগে ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তি এবং টেসলার কর্ণধার এলন মাস্কও দিনে ১৪ ঘণ্টা কাজের পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
কিন্তু তার ফলশ্রুতি— শ্রমিকদের জীবনে গতি আসেনি, বরং বেড়েছে বৈষম্য। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে ট্রেড ইউনিয়নগুলো ৯ জুলাই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার শ্রমিকস্বার্থে ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ তুলেছে। অন্ধ্রে চন্দ্রবাবু সরকারের এই সিদ্ধান্ত এবার সারা দেশের শ্রমজীবী ও শ্রমিক আন্দোলনের একটি নতুন ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে।