০৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র প্রাপকদের সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিল হাইকোর্ট

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার
  • / 38

পারিজাত মোল্লা:  সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে মামলার শুনানি চলে। এদিন এজলাসে শুনানি পর্বে বিচারপতি জানান, ‘কলঙ্কের চাকরি বাতিল হবেই। সেই জায়গায় অপেক্ষমাণ চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা থেকে চাকরি পাবেন যোগ্য ও মেধাবীরা’। এর পাশাপাশি  রাজ্য সরকারকেও তীব্র ভর্ত্‍সনা করতে দেখা যায় বিচারপতিকে। সেইসঙ্গে ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিলেন বিচারপতি। সাতদিন  চূড়ান্ত সময় দেওয়া হল ভুয়ো শংসাপত্রে চাকরিপ্রাপকদের। সাত দিনের মধ্যে জাতিগত শংসাপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করতে হবে তাঁদের। এর মধ্যেই তাঁদের জানাতে হবে, -‘কেন তাঁদের চাকরি বাতিল করা হবে না?

এদিন মধ্যশিক্ষা  পর্ষদের কাছ থেকেও আলাদা করে চাওয়া হয়েছে অভিযুক্তদের জয়েনিং রিপোর্ট। তফশিলি জাতি-উপজাতির মামলা সংক্রান্ত রাজ্যের রিপোর্ট দেখে  হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, – “রিপোর্টের নামে হাইকোর্টের সঙ্গে তামাশা করছে রাজ্য। রাজ্য রিপোর্ট দিয়েছে? এটা কোনও রিপোর্টই নয়। সাংবিধানিক ক্ষমতার এই কায়দায় অপব্যবহার মেনে নেওয়া যায় না। যে কেউ আসবে আর ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে চলে যাবে! আর যোগ্যরা পিছনের সাড়িতে বসে হাত গুনবে, কাস্ট সার্টিফিকেট কবে পাব। এটা রাজ্যের সুপ্রশাসনের উদাহরণ হতে পারে না।” এই মন্তব্য করতে দেখা যায় বিচারপতিকে।

আরও পড়ুন: বুথে ভোটের তুলনায় গণনার সংখ্যা বেশি, ‘অবাক’ হাইকোর্ট

আদালত সূত্রে প্রকাশ,  শিক্ষক নিয়োগের অনিয়মের তদন্ত করতে করতে ২০২২-এর ২৮ ডিসেম্বরে সামনে আসে এক বিস্ফোরক  তথ্য। জানা যায়,  স্কুলের নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়েছে ‘ভুয়ো’ জাতিগত শংসাপত্র। কয়েক জনের জাতি শংসাপত্র সঠিক না থাকার কথা কলকাতা হাইকোর্টে স্বীকারও করে নেন সংশ্লিষ্ট জেলার মহকুমাশাসক।

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে দুই মহিলা গেরুয়া প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বললো হাইকোর্ট

৫৫ ওবিসি সার্টিফিকেট ভুয়ো থাকার অভিযোগে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। ৩২ জনের রিপোর্ট জমা পড়ে। তার মধ্যে ৪ জনের ওবিসি সার্টিফিকেট জালিয়াতির প্রমাণ মেলে। ওই ৪ জনেরই সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়।মণ্ডল পদবি তফশিলি জনজাতি নয় বলে স্বীকার করেন ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক।

আরও পড়ুন: শারীরিকভাবে অক্ষমদের পোলিং অফিসার করা যাবে না:  হাইকোর্ট

ওই মহকুমাশাসক  আদালতে জানান, -জাতি শংসাপত্রটি ভুল করে দেওয়া হয়েছে। বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে’। মাহাত পদবিধারী ব্যক্তিকে ভুল করে এসটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে বলে মেনে নেন লালবাগের মহকুমাশাসক। তিনিও ৬টি সার্টিফিকেট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলে হাইকোর্ট কে জানিয়েছেন। এদিনের নির্দেশ অনুযায়ী ৭ দিনের মধ্যে নিজেদের আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ পাবেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র প্রাপকদের সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিল হাইকোর্ট

আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার

পারিজাত মোল্লা:  সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে মামলার শুনানি চলে। এদিন এজলাসে শুনানি পর্বে বিচারপতি জানান, ‘কলঙ্কের চাকরি বাতিল হবেই। সেই জায়গায় অপেক্ষমাণ চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা থেকে চাকরি পাবেন যোগ্য ও মেধাবীরা’। এর পাশাপাশি  রাজ্য সরকারকেও তীব্র ভর্ত্‍সনা করতে দেখা যায় বিচারপতিকে। সেইসঙ্গে ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিলেন বিচারপতি। সাতদিন  চূড়ান্ত সময় দেওয়া হল ভুয়ো শংসাপত্রে চাকরিপ্রাপকদের। সাত দিনের মধ্যে জাতিগত শংসাপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করতে হবে তাঁদের। এর মধ্যেই তাঁদের জানাতে হবে, -‘কেন তাঁদের চাকরি বাতিল করা হবে না?

এদিন মধ্যশিক্ষা  পর্ষদের কাছ থেকেও আলাদা করে চাওয়া হয়েছে অভিযুক্তদের জয়েনিং রিপোর্ট। তফশিলি জাতি-উপজাতির মামলা সংক্রান্ত রাজ্যের রিপোর্ট দেখে  হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, – “রিপোর্টের নামে হাইকোর্টের সঙ্গে তামাশা করছে রাজ্য। রাজ্য রিপোর্ট দিয়েছে? এটা কোনও রিপোর্টই নয়। সাংবিধানিক ক্ষমতার এই কায়দায় অপব্যবহার মেনে নেওয়া যায় না। যে কেউ আসবে আর ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে চলে যাবে! আর যোগ্যরা পিছনের সাড়িতে বসে হাত গুনবে, কাস্ট সার্টিফিকেট কবে পাব। এটা রাজ্যের সুপ্রশাসনের উদাহরণ হতে পারে না।” এই মন্তব্য করতে দেখা যায় বিচারপতিকে।

আরও পড়ুন: বুথে ভোটের তুলনায় গণনার সংখ্যা বেশি, ‘অবাক’ হাইকোর্ট

আদালত সূত্রে প্রকাশ,  শিক্ষক নিয়োগের অনিয়মের তদন্ত করতে করতে ২০২২-এর ২৮ ডিসেম্বরে সামনে আসে এক বিস্ফোরক  তথ্য। জানা যায়,  স্কুলের নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়েছে ‘ভুয়ো’ জাতিগত শংসাপত্র। কয়েক জনের জাতি শংসাপত্র সঠিক না থাকার কথা কলকাতা হাইকোর্টে স্বীকারও করে নেন সংশ্লিষ্ট জেলার মহকুমাশাসক।

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে দুই মহিলা গেরুয়া প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বললো হাইকোর্ট

৫৫ ওবিসি সার্টিফিকেট ভুয়ো থাকার অভিযোগে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। ৩২ জনের রিপোর্ট জমা পড়ে। তার মধ্যে ৪ জনের ওবিসি সার্টিফিকেট জালিয়াতির প্রমাণ মেলে। ওই ৪ জনেরই সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়।মণ্ডল পদবি তফশিলি জনজাতি নয় বলে স্বীকার করেন ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক।

আরও পড়ুন: শারীরিকভাবে অক্ষমদের পোলিং অফিসার করা যাবে না:  হাইকোর্ট

ওই মহকুমাশাসক  আদালতে জানান, -জাতি শংসাপত্রটি ভুল করে দেওয়া হয়েছে। বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে’। মাহাত পদবিধারী ব্যক্তিকে ভুল করে এসটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে বলে মেনে নেন লালবাগের মহকুমাশাসক। তিনিও ৬টি সার্টিফিকেট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলে হাইকোর্ট কে জানিয়েছেন। এদিনের নির্দেশ অনুযায়ী ৭ দিনের মধ্যে নিজেদের আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ পাবেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে।