বিশেষ প্রতিবেদকঃ মাঝেমধ্যেই পশ্চিমা বিশ্বে যে কি হচ্ছে– কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত ইতালিতেই কি না দাবি উঠেছে– নারীর গাত্রচর্ম ও দেহবল্লরী প্রদর্শিত হচ্ছে– সারা দেহ দেখা যাচ্ছে– এমন স্বচ্ছ পোশাক চলবে না। আর এখানেই অনেকে অবাক হচ্ছেন। কারণ– এই দাবি উঠেছে খোদ ইতালিতে। আর দাবির অগ্রভাগে রয়েছেন ইতালির মহিলারা এবং কয়েকটি নারী সংগঠন।

ইতালি অবাধ যৌনতা ও ‘অতি-বোল্ড’ মূল্যবোধের জন্য শুধু ইউরোপে নয়– দুনিয়াজুড়ে বেশ নাম করেছে। আর সেখানেই এই স্বল্পবাস নারীকে বিদায় দেওয়ার দাবি উঠেছে। অথচ এই ইতালিতেই খোদ এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাঁর শাসনকালে নিজ বাড়িতেই নানা জায়গা থেকে মডেল নিয়ে এসে নগ্ন পার্টি করতেন।

সবথেকে আশ্চর্যের কথা হল–  ওই প্রায় নগ্ন নারী কিন্তু কোনও মানবী নন। এটি হচ্ছে এক তরুণীর মূর্তি। এই ব্রোঞ্জ নারী মূর্তিটি ইতালির দক্ষিণাংশে সাপ্রি শহরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বসানো হয়। আর এই নারী মূর্তিটির কল্পনা ভাষ্কর্যে রূপ পেয়েছে উনিশ শতকের একটি কবিতাকে অবলম্বন করে। কবিতাটি লিখেছিলেন ১৮৫৭ সালে লুইগি মারকানটিনি নামে এক ফরাসি কবি।

ইতালির সেন্টার-লেফট ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এক পার্লামেন্ট সদস্যা লাউরা বলড্রিনি বলেছেন– ‘এই নগ্ন নারী মূর্তিটি মহিলাদের সম্মানের প্রতি আঘাতস্বরূপ এবং যে ইতিহাসকে সেলিব্রেট করার জন্য এই মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে তার প্রতিও এটি সম্মান প্রদর্শন করে না।’ তিনি ট্যুইটারে লিখেছেন– মূর্তিটি যেখানে স্থাপিত করা হয়েছে– কি করে সেই প্রতিষ্ঠান এটিকে গ্রহণ করল? মূর্তিটি তো শুধু এক নারীর যৌনতা প্রদর্শনমূলক শরীর মাত্র। ইতালির পালেরমো এলাকার ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ইউনিটের বেশ কিছু মহিলা রাজনীতিবিদ দাবি তুলেছেন– মূর্তিটিকে এক্ষুনি উৎপাটিত করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। তাঁরা বলেন– পুনরায় আমরা দেখতে পাচ্ছি– আমাদের অবমাননার স্বীকার হতে হচ্ছে। কারণ– আমাদের (নারীদের) প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যে অবয়ব ব্যবহার করা হয়েছে– তা হচ্ছে একটি যৌনতা প্রদর্শনকারী দেহ। এর মধ্যে আত্মার কোনও প্রতিফলন নেই। আর যে কাহিনীকে অবলম্বন করে ওই মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে– তাতে ওই সময়ের কোনও সামাজিক বা রাজনৈতিক বক্তব্যেরও নাম-গন্ধ নেই।

সেই সময়ের ওই মেয়েরা নিজেদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য জালিম বা অত্যাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কাজে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। তারও কোনও প্রতিফলন ওই নগ্ন মূর্তিটিতে আসেনি। বরং এতে নারী বিরোধী বিচারধারা প্রদর্শিত হয়েছে। আর সেই পুরুষবাদকেই প্রধান্য দেওয়া হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে– ইতালির নারীরাই নগ্নতা ও নারীকে যৌন পণ্য হিসেবে প্রদর্শনীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন। আর মানবী না হয়ে তা মূর্তি হলেও।