১৪ জুন ২০২৫, শনিবার, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়ল মনুস্মৃতি

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, শনিবার
  • / 19

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়ল মনুস্মৃতি। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যোগেশ সিং জানিয়েছেন, মনুস্মৃতিকে পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পাঠ্যক্রমে পড়ানো হবে না। উপাচার্য বলেন, “দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মনুস্মৃতির কোনও অংশই পড়াব না। উপাচার্যের দফতর থেকে এই নির্দেশিকা আরও আগেই জারি করা হয়েছে এবং বিভাগগুলিকে এটি মেনে চলতে বলা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা হয়েছে, “দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় কোনও কোর্সেই মনুস্মৃতি পড়াবে না। ধর্মশাস্ত্র স্টাডিজ, সংস্কৃত বিভাগের ডিএসসি, যেখানে মনুস্মৃতিকে ‘প্রস্তাবিত পাঠ’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, তা বাদ দেওয়া হয়েছে।” মনুস্মৃতি হল একটি প্রাচীন হিন্দু আইনী গ্রন্থ যা ঋষি মনুর লেখা। যেখানে সমাজের জন্য সামাজিক, নৈতিক এবং আইনি নিয়মাবলী, বিশেষ করে বৈষম্যমূলক বর্ণ ব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। লিঙ্গ এবং বর্ণ-ভিত্তিক বৈষম্যমূলক বিধানের জন্য এটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।

আরও পড়ুন: ক্লাসরুম ঠান্ডা রাখতে দেওয়ালে গোবর! পাল্টা অধ্যক্ষের ঘরে গোবর লেপে দিল ছাত্রছাত্রীরা

সংস্কৃত বিভাগ এর আগে ধর্মশাস্ত্র স্টাডিজ নামে চার ক্রেডিটের পাঠ্যক্রমের মূল পাঠ্য হিসাবে মনুস্মৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। জাতীয় শিক্ষানীতির অধীনে স্নাতক পাঠ্যক্রম কাঠামোর অংশ হিসাবে এটি অনুমোদন করা হয়েছিল। কোর্সটিতে রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ এবং অর্থশাস্ত্রের মতো অন্যান্য উল্লেখযোগ্য হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলিও তার পঠন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

আরও পড়ুন: কলেজের ক্লাস রুমে গোবর লেপলেন অধ্যক্ষ, গবেষণার অংশ দাবি কর্তৃপক্ষের

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনুস্মৃতি নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে, যখন আইন অনুষদ কর্তৃক আইনের শিক্ষার্থীদের কাছে মনুস্মৃতি প্রবর্তনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল, তখন শিক্ষকরা প্রতিবাদ করেছিলেন এবং উপাচার্যকে বলেছিলেন যে মনুস্মৃতির কোনও বিভাগ বা অংশ প্রবর্তন করা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো এবং নীতির পরিপন্থী।

আরও পড়ুন: বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্রের শোকজের নোটিশ খারিজ হাই কোর্টের

প্রতিবাদের চাপে এটি প্রত্যাহার করা হয়। বৃহস্পতিবার ছাত্রদের সংগঠন ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার জাতীয় সভাপতি বরুণ চৌধুরী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে মনুস্মৃতি অন্তর্ভুক্ত করা লজ্জাজনক। এটি দলিত, মহিলা এবং সুবিধাবঞ্চিতদের বিরুদ্ধে বর্ণের বৈষম্য এবং অবিচারের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।”

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়ল মনুস্মৃতি

আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়ল মনুস্মৃতি। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যোগেশ সিং জানিয়েছেন, মনুস্মৃতিকে পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পাঠ্যক্রমে পড়ানো হবে না। উপাচার্য বলেন, “দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মনুস্মৃতির কোনও অংশই পড়াব না। উপাচার্যের দফতর থেকে এই নির্দেশিকা আরও আগেই জারি করা হয়েছে এবং বিভাগগুলিকে এটি মেনে চলতে বলা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা হয়েছে, “দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় কোনও কোর্সেই মনুস্মৃতি পড়াবে না। ধর্মশাস্ত্র স্টাডিজ, সংস্কৃত বিভাগের ডিএসসি, যেখানে মনুস্মৃতিকে ‘প্রস্তাবিত পাঠ’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, তা বাদ দেওয়া হয়েছে।” মনুস্মৃতি হল একটি প্রাচীন হিন্দু আইনী গ্রন্থ যা ঋষি মনুর লেখা। যেখানে সমাজের জন্য সামাজিক, নৈতিক এবং আইনি নিয়মাবলী, বিশেষ করে বৈষম্যমূলক বর্ণ ব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। লিঙ্গ এবং বর্ণ-ভিত্তিক বৈষম্যমূলক বিধানের জন্য এটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।

আরও পড়ুন: ক্লাসরুম ঠান্ডা রাখতে দেওয়ালে গোবর! পাল্টা অধ্যক্ষের ঘরে গোবর লেপে দিল ছাত্রছাত্রীরা

সংস্কৃত বিভাগ এর আগে ধর্মশাস্ত্র স্টাডিজ নামে চার ক্রেডিটের পাঠ্যক্রমের মূল পাঠ্য হিসাবে মনুস্মৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। জাতীয় শিক্ষানীতির অধীনে স্নাতক পাঠ্যক্রম কাঠামোর অংশ হিসাবে এটি অনুমোদন করা হয়েছিল। কোর্সটিতে রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ এবং অর্থশাস্ত্রের মতো অন্যান্য উল্লেখযোগ্য হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলিও তার পঠন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

আরও পড়ুন: কলেজের ক্লাস রুমে গোবর লেপলেন অধ্যক্ষ, গবেষণার অংশ দাবি কর্তৃপক্ষের

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনুস্মৃতি নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে, যখন আইন অনুষদ কর্তৃক আইনের শিক্ষার্থীদের কাছে মনুস্মৃতি প্রবর্তনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল, তখন শিক্ষকরা প্রতিবাদ করেছিলেন এবং উপাচার্যকে বলেছিলেন যে মনুস্মৃতির কোনও বিভাগ বা অংশ প্রবর্তন করা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো এবং নীতির পরিপন্থী।

আরও পড়ুন: বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্রের শোকজের নোটিশ খারিজ হাই কোর্টের

প্রতিবাদের চাপে এটি প্রত্যাহার করা হয়। বৃহস্পতিবার ছাত্রদের সংগঠন ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার জাতীয় সভাপতি বরুণ চৌধুরী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে মনুস্মৃতি অন্তর্ভুক্ত করা লজ্জাজনক। এটি দলিত, মহিলা এবং সুবিধাবঞ্চিতদের বিরুদ্ধে বর্ণের বৈষম্য এবং অবিচারের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।”