হাইকোর্টের নির্দেশের পর অকাল বসন্ত উৎসব বিশ্বভারতীতে
- আপডেট : ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, বুধবার
- / 26
দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন : ৩ বহিষ্কৃত পড়ুয়ার ওপর থেকে অবিলম্বে সাসপেনশনের নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশের পর অকাল বসন্ত উৎসব বিশ্বভারতীতে। হাইকোর্টের এদিনের শুনানিতে বিচারক রাজশেখর মান্থা নির্দেশ দেন, ‘অবিলম্বে ফেরাতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা, প্রত্যাহার করতে হবে সমস্ত অবস্থান-বিক্ষোভ’।
দীর্ঘ ১২ দিন ধরে অবস্থান মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল পড়ুয়ারা।এর মধ্য উপাচার্য গৃহের পূর্বিতা থেকে পঁয়ষট্টি মিটার দূরে মঞ্চ স্থানান্তর করতে হয় কোর্টের নির্দেশ মতো। এরপর অনশনে বসে ছাত্রী রুপা চক্রবর্তী ও অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য ।
আজকের হাইকোর্টের মামলার প্রক্রিয়ার শুনানি তে আংশিক জয় বলে দাবি বিশ্বভারতীর অনশন রত পড়ুয়া রূপা চক্রবর্তী।এই আন্দোলনকে রাজ্যের একাধিক ইউনিভার্সিটির পড়ুয়ারা সমর্থন জানিয়েছিল। বাদ পড়েনি রাজ্যের রাজনৈতিক সংগঠনগুলো। এক পড়ুয়া বলেন, হাইকোর্টের রায় আমদের আংশিক জয় তাই লাল,হলুদ,সবুজ,নীল সমস্ত রঙের আবির খেলায় মেতে উঠি।
হাইকোর্ট নির্দেশে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে ৩ বহিষ্কৃত ছাত্র ছাত্রী রুপা চক্রবর্তী ,সোমনাথ সৌ,ফাল্গুনী পানের বহিষ্কারের নির্দেশ স্থগিত হয়। তাদের পঠন পাঠন বলবৎ করতে নির্দেশ দেয় আদালত। আরও বলা হয় আইনের উর্ধ্বে উপাচার্য না। লঘু পাপে গুরু দন্ড দেওয়া উচিত না। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়,দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে অবস্থান মঞ্চ।তুলে নিতে হবে অনশন।
১৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী বিশ্বভারতী উপাচার্যের রিট পিটিশন মামলার শুনানি হবে। অনশন কারী অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য জানান, বিশ্বভারতীর জয়েন্ট ফোরাম কমিটির নির্দেশ মতো আন্দোলনের,স্থান পরিবর্তন হতে পারে কিন্ত আন্দোলন স্থগিত করা হবে না। আমদের প্রথম দাবি পূরণ হলেও, বাকি দাবি পূরণের জন্য আন্দোলন চলবে।
কোর্টের কপি না পাওয়া পর্যন্ত এখনো পর্যন্ত বিশ্বভারতী অবস্থান মঞ্চ থাকবে, বলে সূত্রের খবর।
এদিন ফলের রস খেয়ে অনশন ভঙ্গ করেন,অনশনরত ছাত্রী রূপা চক্রবর্তী ও অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য ।
আদালতের পর্যবেক্ষণ :::
১) বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রের তিন বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের।
২) আগামীকাল থেকেই ক্লাসের যোগদান করার নির্দেশ।
৩) অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
৩) সমস্ত রকম অবস্থান-বিক্ষোভ প্রত্যাহার করতে হবে।
৪) তিন জন ছাত্রের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে এবং তার ভিত্তিতে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা একেবারেই উপযুক্ত নয়।
৫) লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
৬) তিন ছাত্র এবং বাকি সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া অধ্যাপকদের মামলা দায়ের করার নির্দেশ। দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তির আশ্বাস।
৭) উপাচার্য যদি নিজেকে আইনের থেকে বড় ভাবেন তাহলে তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেবে আদালত। – মন্তব্য বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।
৮) ছাত্রদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখুন। ওদের পড়তে দিন । মন্তব্য বিচারকের।