০৯ জুন ২০২৫, সোমবার, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তর দিনাজপুরে আবাস যোজনার দ্বিতীয় কিস্তির জন্য বরাদ্দ ২৪৬.৩ কোটি, তৎপর প্রশাসন

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ৮ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 29

পুবের কলম প্রতিবেদক, ইসলামপুরঃ  দ্বিতীয় কিস্তির টাকা উত্তর দিনাজপুরে পৌঁছে গেলেও, এখনও বহু উপভোক্তা প্রথম ধাপের কাজই শুরু করেননি। এমন পরিস্থিতিতে ব্লকভিত্তিক পরিদর্শনে নেমেছে প্রশাসন। সব বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতি পরিবারে গিয়ে কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ তো বটেই, আইনি পদক্ষেপেও যেতে পারে সরকার।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাস যোজনার দ্বিতীয় কিস্তিতে জেলার ৪১,০৬৩ জন উপভোক্তাকে মাথাপিছু ৬০ হাজার টাকা করে মঞ্জুর করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকারের তরফে ২৪৬.৩ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বরাদ্দ করা হয়েছে। উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

তবে বাস্তবচিত্রে উদ্বেগ স্পষ্ট। সম্প্রতি  গোয়ালপোখর-২ ব্লকের নিজামপুরে পরিদর্শনে গিয়ে বিডিও সুজয় ধর বলেন, ‘গ্রামের অন্তত ৩০টি আদিবাসী পরিবার এখনও একটি ইটও বসায়নি। জমি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা রয়েছে, আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।’ অন্যদিকে, করণদিঘির বিডিও জয়ন্ত দেবব্রত চৌধুরির কথায়, ‘আমরা ঘরে ঘরে গিয়ে যাচাই করছি। উপভোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেই বোঝার চেষ্টা চলছে সমস্যার মূল কারণ।’

তবে প্রশাসনের কণ্ঠে সতর্কতার সুর স্পষ্ট। ইসলামপুরের মহকুমাশাসক প্রিয়া যাদব জানিয়েছেন, ‘প্রথম কিস্তির টাকায় অধিকাংশ ঘরে লিন্টেল পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে। মাত্র ১,২ শতাংশ জায়গায় কাজ বাকি রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম কিস্তির টাকায় মাটির নিচ থেকে কংক্রিট ব্যান্ড পর্যন্ত, অর্থাৎ ভিত্তি থেকে লিন্টেল পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ হলেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মঞ্জুর হয়। নির্মাণে গাফিলতি ধরা পড়লে কিস্তি আটকে দেওয়া হবে।

এমনকি প্রয়োজন হলে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হবে বলেই সূত্রের খবর। জেলা প্রশাসনের তরফে সব বিডিওদের কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য। যারা ঘর তৈরি করেননি সেই সমস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করতে হবে, জমি সংক্রান্ত জট থাকলে নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘সরকার টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে, এখন দায়িত্ব নিয়ে কাজটা কতটা হচ্ছে সেটাই প্রশাসনিক আধিকারিকদের আরও বেশি করে খতিয়ে দেখতে হবে।’

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

উত্তর দিনাজপুরে আবাস যোজনার দ্বিতীয় কিস্তির জন্য বরাদ্দ ২৪৬.৩ কোটি, তৎপর প্রশাসন

আপডেট : ৮ জুন ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক, ইসলামপুরঃ  দ্বিতীয় কিস্তির টাকা উত্তর দিনাজপুরে পৌঁছে গেলেও, এখনও বহু উপভোক্তা প্রথম ধাপের কাজই শুরু করেননি। এমন পরিস্থিতিতে ব্লকভিত্তিক পরিদর্শনে নেমেছে প্রশাসন। সব বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতি পরিবারে গিয়ে কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ তো বটেই, আইনি পদক্ষেপেও যেতে পারে সরকার।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাস যোজনার দ্বিতীয় কিস্তিতে জেলার ৪১,০৬৩ জন উপভোক্তাকে মাথাপিছু ৬০ হাজার টাকা করে মঞ্জুর করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকারের তরফে ২৪৬.৩ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বরাদ্দ করা হয়েছে। উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

তবে বাস্তবচিত্রে উদ্বেগ স্পষ্ট। সম্প্রতি  গোয়ালপোখর-২ ব্লকের নিজামপুরে পরিদর্শনে গিয়ে বিডিও সুজয় ধর বলেন, ‘গ্রামের অন্তত ৩০টি আদিবাসী পরিবার এখনও একটি ইটও বসায়নি। জমি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা রয়েছে, আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।’ অন্যদিকে, করণদিঘির বিডিও জয়ন্ত দেবব্রত চৌধুরির কথায়, ‘আমরা ঘরে ঘরে গিয়ে যাচাই করছি। উপভোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেই বোঝার চেষ্টা চলছে সমস্যার মূল কারণ।’

তবে প্রশাসনের কণ্ঠে সতর্কতার সুর স্পষ্ট। ইসলামপুরের মহকুমাশাসক প্রিয়া যাদব জানিয়েছেন, ‘প্রথম কিস্তির টাকায় অধিকাংশ ঘরে লিন্টেল পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে। মাত্র ১,২ শতাংশ জায়গায় কাজ বাকি রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম কিস্তির টাকায় মাটির নিচ থেকে কংক্রিট ব্যান্ড পর্যন্ত, অর্থাৎ ভিত্তি থেকে লিন্টেল পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ হলেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মঞ্জুর হয়। নির্মাণে গাফিলতি ধরা পড়লে কিস্তি আটকে দেওয়া হবে।

এমনকি প্রয়োজন হলে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হবে বলেই সূত্রের খবর। জেলা প্রশাসনের তরফে সব বিডিওদের কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য। যারা ঘর তৈরি করেননি সেই সমস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করতে হবে, জমি সংক্রান্ত জট থাকলে নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘সরকার টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে, এখন দায়িত্ব নিয়ে কাজটা কতটা হচ্ছে সেটাই প্রশাসনিক আধিকারিকদের আরও বেশি করে খতিয়ে দেখতে হবে।’