২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মুক্তি পেলেন রাজস্থানের বন্দি বাঙালি শ্রমিকরা, স্বস্তি ফিরল ইটাহারে

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার
  • / 9

মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত রাজস্থানে বন্দি থাকা ইটাহারের পরিযায়ী শ্রমিকরা মুক্তি পেলেন। বুধবার তাঁরা রাজস্থানে নিজেদের কাজের জায়গায় যোগ দিলেন।  আপাতত তাঁদের অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে তাঁরা ইটাহারে তাঁদের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রাজস্থানে বন্দি  শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী না থাকলে তাঁরা এত সহজে মুক্তি পেতেন না।

রাজস্থানে বন্দি  থাকা আইনুল হক নামে একজন পরিযায়ী শ্রমিকের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, রাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য যে ৪০০ জনকে রাজস্থানে বন্দি  করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ২০০ জন পশ্চিমবঙ্গের এবং ২০০ জন অসমের। বাংলাভাষী হওয়ায় বাংলাদেশি হিসেবে সন্দেহ করেই তাদের আটক করা হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে বাংলার সরকার এবং রাজস্থানের সরকারের মধ্যে মঙ্গলবারই কথা হয়। তারপর মঙ্গলবার সন্ধেতেই তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের বন্দি দশা কাটতে চলেছে। এই উদ্যোগের জন্য আইনুল হক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিধানসভায় ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎক্ষণাৎ মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দেন রাজস্থানে যোগাযোগ করতে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশমতো মনোজ পন্থ টেলিফোনে কথা বলেন রাজস্থানের মুখ্যসচিব সুধাংশু পন্থের সঙ্গে। তারপরই রাজস্থানের আম্বেদকর ভবনে বন্দি  করে রাখা পরিযায়ী শ্রমিকদের মুক্তির খবর আসে।

খিসাহারের এক শ্রমিকের স্ত্রী কয়িফা খাতুন বুধবার জানান, তাঁর স্বামী মিন্নাত শেখ বারো বছর ধরে দিল্লিতে কাজ করছেন। এবার রাজস্থানে গেলে কাজ শুরুর আগেই তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এলাকার মানুষ অভিযোগ করছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষা বললেই সন্দেহ করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশি’ বলে। পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও কেন পরিযায়ী শ্রমিকদের হায়রানি করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ইটাহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিজনেরা। তবে তাঁদের কাছে একমাত্র ভরসা বাংলার ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করে রাজস্থানে বন্দি  বাংলার শ্রমিকদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হলেও এই ইস্যুটিকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন বাংলা ভাষার প্রতি এত ‘দ্বেষ’ কেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির? বাংলায় কথা বলা কি অপরাধ? বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহ করা হবে? সূত্রের খবর, খুব শিগগিরই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মুক্তি পেলেন রাজস্থানের বন্দি বাঙালি শ্রমিকরা, স্বস্তি ফিরল ইটাহারে

আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার

মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত রাজস্থানে বন্দি থাকা ইটাহারের পরিযায়ী শ্রমিকরা মুক্তি পেলেন। বুধবার তাঁরা রাজস্থানে নিজেদের কাজের জায়গায় যোগ দিলেন।  আপাতত তাঁদের অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে তাঁরা ইটাহারে তাঁদের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রাজস্থানে বন্দি  শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী না থাকলে তাঁরা এত সহজে মুক্তি পেতেন না।

রাজস্থানে বন্দি  থাকা আইনুল হক নামে একজন পরিযায়ী শ্রমিকের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, রাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য যে ৪০০ জনকে রাজস্থানে বন্দি  করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ২০০ জন পশ্চিমবঙ্গের এবং ২০০ জন অসমের। বাংলাভাষী হওয়ায় বাংলাদেশি হিসেবে সন্দেহ করেই তাদের আটক করা হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে বাংলার সরকার এবং রাজস্থানের সরকারের মধ্যে মঙ্গলবারই কথা হয়। তারপর মঙ্গলবার সন্ধেতেই তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের বন্দি দশা কাটতে চলেছে। এই উদ্যোগের জন্য আইনুল হক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিধানসভায় ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎক্ষণাৎ মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দেন রাজস্থানে যোগাযোগ করতে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশমতো মনোজ পন্থ টেলিফোনে কথা বলেন রাজস্থানের মুখ্যসচিব সুধাংশু পন্থের সঙ্গে। তারপরই রাজস্থানের আম্বেদকর ভবনে বন্দি  করে রাখা পরিযায়ী শ্রমিকদের মুক্তির খবর আসে।

খিসাহারের এক শ্রমিকের স্ত্রী কয়িফা খাতুন বুধবার জানান, তাঁর স্বামী মিন্নাত শেখ বারো বছর ধরে দিল্লিতে কাজ করছেন। এবার রাজস্থানে গেলে কাজ শুরুর আগেই তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এলাকার মানুষ অভিযোগ করছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষা বললেই সন্দেহ করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশি’ বলে। পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও কেন পরিযায়ী শ্রমিকদের হায়রানি করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ইটাহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিজনেরা। তবে তাঁদের কাছে একমাত্র ভরসা বাংলার ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করে রাজস্থানে বন্দি  বাংলার শ্রমিকদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হলেও এই ইস্যুটিকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন বাংলা ভাষার প্রতি এত ‘দ্বেষ’ কেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির? বাংলায় কথা বলা কি অপরাধ? বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহ করা হবে? সূত্রের খবর, খুব শিগগিরই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে।