৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশী তকমা দিয়ে অসমের মুসলিমদের মণিপুর থেকে বিতাড়ন

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার
  • / 44

(প্রতীকী ছবি)

গুয়াহাটি: বাংলাদেশী তকমা দিয়ে অসমের বাসিন্দাদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠল মণিপুর পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনকি অসমের শতাধিক নাগরিককে জোর করে মণিপুর থেকে তাড়িয়ে দিল সে রাজ্যের পুলিশ। তাড়ানোর আগে তাদের সারা রাত ধরে থানায় আটকে রাখে মণিপুর পুলিশ। ছাড় পাননি মহিলা সহ শিশুরাও। ভারতের বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও দেশের প্রতিবেশী রাজ্যে বিদেশী আখ্যায়িত হয়ে নির্যাতিত হলেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, তাদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে ষাট হাজার টাকাও কেড়ে নিয়েছে মণিপুর পুলিশ। এই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

জানা গেছে, বরাকের রামকৃষ্ণ নগরের গান্ধিনগর এলাকায় প্রায় পঞ্চাশ জন গরিব, অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ ইম্ফলে দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন কাজের সুবাদে সেখানে অস্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছিলেন। অনেকেই নিজের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য বিস্কুট তৈরির কারখানায় কাজ করা ছাড়াও ছোটখাটো ব্যবসা করে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সেখানেই বসবাস করছিলেন। মণিপুর সরকারের অনুমতি নিয়ে সরকারি রাজস্ব দিয়ে তাদের কেউ কেউ সেখানে ব্যবসা পেতে ছিলেন।

গত ৩০ নভেম্বর আচমকা ইমা ইম্ফল পুলিশ তাঁদের থানায় ডেকে পাঠিয়ে আধার কার্ড, আই কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি জমা দিতে বলে। পুলিশের কথামত তাঁরা সেদিন তাদের নথিপত্র থানায় জমা দেন। এরপর তাদের থানায় আটকে রাখা হয় রাতভর। পরদিন তাদের প্রত্যেকের স্বাক্ষর নিয়ে পুলিশ ছেড়েছে।

১ ডিসেম্বর ফের পরিবারের সব সদস্য-সহ থানায় তলব করা হয়। থানায় যাওয়ার পর পুলিশ জানায় তাদের নথিপত্র ভুয়ো। ফের আটক করে রাখা হয়। পরদিন পুলিশ জানায় বেলা ১১টার মধ্যে মণিপুর ছেড়ে চলে যেতে হবে। নতুবা তাদের স্থান হবে জেলে। তাদের এতটাই কম সময় দেওয়া হয়, যে ঘরের জিনসপত্র নেওয়ারও সময় হয়নি। ফেরার সময় জিরিবামে আর এক দফা নথিপত্র যাচাই হয়। জিরিবাম পুলিশ জানায় নথিগুলি ভুয়ো না, বৈধ। তবে তাদের আর মণিপুরে থাকতে দেওয়া হবে না। অসমে ফিরে মণিপুর পুলিশের এই অমানবিক আচরণের কথা সংবাদ মাধ্যমে জানান, কামাল উদ্দিন, আবদুল কাইউম, এজলাস উদ্দিন, মাসুক উদ্দিনরা।

Tag :

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলাদেশী তকমা দিয়ে অসমের মুসলিমদের মণিপুর থেকে বিতাড়ন

আপডেট : ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার

গুয়াহাটি: বাংলাদেশী তকমা দিয়ে অসমের বাসিন্দাদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠল মণিপুর পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনকি অসমের শতাধিক নাগরিককে জোর করে মণিপুর থেকে তাড়িয়ে দিল সে রাজ্যের পুলিশ। তাড়ানোর আগে তাদের সারা রাত ধরে থানায় আটকে রাখে মণিপুর পুলিশ। ছাড় পাননি মহিলা সহ শিশুরাও। ভারতের বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও দেশের প্রতিবেশী রাজ্যে বিদেশী আখ্যায়িত হয়ে নির্যাতিত হলেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, তাদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে ষাট হাজার টাকাও কেড়ে নিয়েছে মণিপুর পুলিশ। এই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

জানা গেছে, বরাকের রামকৃষ্ণ নগরের গান্ধিনগর এলাকায় প্রায় পঞ্চাশ জন গরিব, অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ ইম্ফলে দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন কাজের সুবাদে সেখানে অস্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছিলেন। অনেকেই নিজের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য বিস্কুট তৈরির কারখানায় কাজ করা ছাড়াও ছোটখাটো ব্যবসা করে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সেখানেই বসবাস করছিলেন। মণিপুর সরকারের অনুমতি নিয়ে সরকারি রাজস্ব দিয়ে তাদের কেউ কেউ সেখানে ব্যবসা পেতে ছিলেন।

গত ৩০ নভেম্বর আচমকা ইমা ইম্ফল পুলিশ তাঁদের থানায় ডেকে পাঠিয়ে আধার কার্ড, আই কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি জমা দিতে বলে। পুলিশের কথামত তাঁরা সেদিন তাদের নথিপত্র থানায় জমা দেন। এরপর তাদের থানায় আটকে রাখা হয় রাতভর। পরদিন তাদের প্রত্যেকের স্বাক্ষর নিয়ে পুলিশ ছেড়েছে।

১ ডিসেম্বর ফের পরিবারের সব সদস্য-সহ থানায় তলব করা হয়। থানায় যাওয়ার পর পুলিশ জানায় তাদের নথিপত্র ভুয়ো। ফের আটক করে রাখা হয়। পরদিন পুলিশ জানায় বেলা ১১টার মধ্যে মণিপুর ছেড়ে চলে যেতে হবে। নতুবা তাদের স্থান হবে জেলে। তাদের এতটাই কম সময় দেওয়া হয়, যে ঘরের জিনসপত্র নেওয়ারও সময় হয়নি। ফেরার সময় জিরিবামে আর এক দফা নথিপত্র যাচাই হয়। জিরিবাম পুলিশ জানায় নথিগুলি ভুয়ো না, বৈধ। তবে তাদের আর মণিপুরে থাকতে দেওয়া হবে না। অসমে ফিরে মণিপুর পুলিশের এই অমানবিক আচরণের কথা সংবাদ মাধ্যমে জানান, কামাল উদ্দিন, আবদুল কাইউম, এজলাস উদ্দিন, মাসুক উদ্দিনরা।