বারুইপুরে আদি গঙ্গা দখলমুক্ত করতে গিয়ে গন্ডগোলে পড়লো সেচ দফতর

- আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 20
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,বারুইপুর : আদি গঙ্গা দখলমুক্ত করতে গিয়ে থমকে গেল অভিযান, ক্লাব বনাম সরকার সংঘর্ষে উত্তপ্ত বারুইপুর। জেসিবি থামালেন ক্লাব সদস্যরা, বাইপাস অবরোধে রণক্ষেত্র বারুইপুর।ঘটনাস্থলে বিডিও, আইসি—চললো টানাপোড়েনের আলোচনায় নাটকীয় মোড়।
বারুইপুরের শাসন বাইপাসে আদি গঙ্গার পাড় দখলমুক্ত করতে অভিযান চালাতে গিয়ে সোমবার সেচ দপ্তর পড়ল বিপাকে। লায়ন্স ক্লাবের সামনে জেসিবি পৌঁছানো মাত্রই বাধা দেন ক্লাব সদস্যরা। উত্তপ্ত বচসা, পুলিশের মোতায়েন এবং শেষমেশ বাইপাস অবরোধের মধ্য দিয়ে জটিল হয়ে পড়ে পরিস্থিতি।
ঘটনাস্থলে হাজির হন বিডিও ও থানার আইসি।বারুইপুরের আদি গঙ্গার পাড় ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে জমা থাকা অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় এক বিশেষ দখলমুক্তি অভিযান। শাসন বাইপাসের ধারে অবস্থিত বারুইপুর খোদার বাজার লায়ন্স ক্লাব, যা ১৯৭৮ সাল থেকে সমাজসেবামূলক কাজ করে আসছে বলে দাবি ক্লাব কর্তৃপক্ষের, সেই ক্লাবের একটি অংশ আদি গঙ্গার পুরনো প্রবাহের মধ্যে পড়ে যাওয়ার অভিযোগেই সেচ দপ্তর সেখানে পৌঁছায়।
সোমবার সকালবেলা হঠাৎ করেই সেচ দপ্তরের আধিকারিকেরা জেসিবি সহ হাজির হন ক্লাব চত্বরে। অভিযান শুরু হতেই, ক্লাব সদস্যরা সামনে এসে দাঁড়িয়ে যান। তাঁদের স্পষ্ট দাবি—এটা শুধুমাত্র একটি ক্লাব ঘর নয়, এলাকাবাসীর আবেগ, বহু বছরের স্মৃতি আর সমাজসেবার একটি প্রাণকেন্দ্র। তাই কোনওভাবেই এই ঘর ভাঙতে দেওয়া যাবে না।এরপরেই শুরু হয় উত্তেজনা।জেসিবি মেশিন ক্লাব ঘরের দিকে এগোতেই তা আটকে দেন সদস্যরা। জেসিবি ঠেলে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ।
সেখানেই সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে তীব্র বচসায় জড়িয়ে পড়েন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।একসময় পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, বারুইপুর থানার তরফে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে উপস্থিত হয়।কিন্তু এতেও থামেনি উত্তেজনা। ক্লাব কর্তৃপক্ষ ও সমর্থকরা বিক্ষোভে নামেন এবং এক পর্যায়ে পুরো বারুইপুর শাসন বাইপাস অবরোধ করে দেন। মুহূর্তে যান চলাচল স্তব্ধ। সমস্যার গভীরতা বুঝে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান বারুইপুরের বিডিও সৌরভ মাঝি এবং বারুইপুর থানার আইসি সৌমজিৎ রায়।
তাঁদের উপস্থিতিতেই শুরু হয় আলোচনার চেষ্টা—কীভাবে আইনি পথে, জনমতের গুরুত্ব বজায় রেখে এবং পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো যায়।এদিকে সেচ দপ্তরের দাবি, আদি গঙ্গার পাড় দখলমুক্ত করতেই হবে। এটি রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও নদী পুনর্জীবন প্রকল্পের অংশ। অন্যদিকে ক্লাব কর্তৃপক্ষের যুক্তি সেচ দপ্তর আগে কোনও নোটিশ দেয়নি,আর এই ক্লাব শুধুই একটি দালান নয়, হাজার হাজার মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আবেগের সঙ্গে জড়িত।শেষমেশ ক্লাব ভাঙার কাজ বন্ধ রাখা হয়। তবে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির হবে বলে জানান বিডিও।