২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্রুত তলবে হাজিরা দিয়ে মানিক বললেন -”সত্য সুন্দর, সত্য সহজ..”

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার
  • / 17

পারিজাত মোল্লা: কয়েকদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি এক মামলায় সিবিআই কে  বলেছিলেন – ‘ দুর্নীতির মহাসাগর থেকে মানিক বেছে তুলতে হবে ‘। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের অতি দ্রুত তলবে জেলখানা থেকে  মানিক এলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে।

দু ঘণ্টার নোটিসেই এদিন কলকাতা হাইকোর্টে হাজিরা দিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিলেন  প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে, এদিন দুপুর ৩ টেয় হাইকোর্টে নিয়ে আসা হয়েছিল জেলবন্দি মানিককে।অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট না নিয়েই নিয়োগ করার যে অভিযোগ ওঠে, সেই মামলাতেই এদিন তলব করা হয় মানিককে।

আরও পড়ুন: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে গ্রেফতার হাইকোর্টের গ্রুপ ডি কর্মী! কিন্তু কেন?

আদালত কক্ষে বিচারপতির একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। পরবর্তীকালেও তাঁকে ডাকা হলেই তিনি আসবেন বলে জানিয়েছেন মানিক।বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কী জানেন?’ উত্তরে মানিক বলেন, ‘আদালত ডেকেছে তাই এসেছি। আমি জেলে রয়েছি। আমার কাছে কোনও তথ্য বা নথি নেই। তাই স্মরণে যা আছে, তাই বলতে পারি।’ গত ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিলেকশন কমিটি তৈরি করা হয়েছিল কি না?

আরও পড়ুন: নাগাল্যান্ডে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ৭২ বছরের রিও, আগামীকাল ত্রিপুরায় শপথ মানিকের

সেই প্রশ্নের উত্তরে মানিক বলেন, ‘হ্যাঁ, করা হয়েছিল। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা পর্ষদ নিয়েছিল। আমি কীভাবে এগুলো বলতে পারি?’বিচারপতি বলেন, ‘পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি হিসেবে আপনার কাছে এগুলো জানা যেতে পারে।’২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার কে ফল প্রকাশ করেছিল? সেটাও এদিন জানতে চান বিচারপতি। মানিক বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারি না।

আরও পড়ুন: জামিনের আর্জি খারিজ, ইডি হেফাজতেই মানিক

বিশেষ করে এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে বোধগম্য নয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ার মোট নম্বর তৈরি করে বিভিন্ন বিভাগ মিলে।’ বাইরের কোনও সংস্থাকে রেজাল্ট প্রস্তুত করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল? বিচারপতির এই প্রশ্নের উত্তরে মানিক জানান, একটি সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তবে তার নাম এখন আর মনে নেই। বিচারপতি এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির নাম উল্লেখ করাতে, মানিক বলেন, ‘হ্যাঁ ওই ধরনের নাম শুনেছি।’অ্যাপ্টটিটড টেস্ট না নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘সভাপতি হিসেবে আপনার সময় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিক?’ মানিক জানান, অ্যাপ্টিটিটড টেস্ট নেওয়া হয়েছিল। তখন কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ নীতি মানা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন করলে, মানিক বলেন, ‘যতদূর মনে পড়ছে আইন অনুযায়ী মানা হয়েছিল।’প্রশ্নোত্তর শেষে বিচারপতি বলেন, ‘এখন আমার আর কিছু জানার নেই। আপনি যে বয়ান দিয়েছেন, তাতে স্বাক্ষর করে চলে যাবেন।’ সব শেষে বিচারপতিকে মানিক বলেন, ‘যাবার আগে একটা অনুরোধ করব। এই সংক্রান্ত যে কোনও মামলায় আমাকে ডেকে পাঠাবেন।

১৫ মিনিট আগে বললেই আমি চলে আসব। পরে আমার বিরুদ্ধে যা পদক্ষেপ করা হোক। আমি মেনে নেব। আমি সত্যিটাই বলতে চাই। সত্য সহজ, সত্য সুন্দর।’বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন। জরুরি তলব পেয়ে বুধবার দুপুরেই কলকাতা হাইকোর্টে হাজির করানো হল জেলবন্দি বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে দুপুর ৩টে নাগাদ দেখা যায় কলকাতা পুলিশের গাড়ি থেকে আদালত চত্বরে নামতে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্রুত তলবে হাজিরা দিয়ে মানিক বললেন -”সত্য সুন্দর, সত্য সহজ..”

আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার

পারিজাত মোল্লা: কয়েকদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি এক মামলায় সিবিআই কে  বলেছিলেন – ‘ দুর্নীতির মহাসাগর থেকে মানিক বেছে তুলতে হবে ‘। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের অতি দ্রুত তলবে জেলখানা থেকে  মানিক এলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে।

দু ঘণ্টার নোটিসেই এদিন কলকাতা হাইকোর্টে হাজিরা দিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিলেন  প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে, এদিন দুপুর ৩ টেয় হাইকোর্টে নিয়ে আসা হয়েছিল জেলবন্দি মানিককে।অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট না নিয়েই নিয়োগ করার যে অভিযোগ ওঠে, সেই মামলাতেই এদিন তলব করা হয় মানিককে।

আরও পড়ুন: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে গ্রেফতার হাইকোর্টের গ্রুপ ডি কর্মী! কিন্তু কেন?

আদালত কক্ষে বিচারপতির একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। পরবর্তীকালেও তাঁকে ডাকা হলেই তিনি আসবেন বলে জানিয়েছেন মানিক।বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কী জানেন?’ উত্তরে মানিক বলেন, ‘আদালত ডেকেছে তাই এসেছি। আমি জেলে রয়েছি। আমার কাছে কোনও তথ্য বা নথি নেই। তাই স্মরণে যা আছে, তাই বলতে পারি।’ গত ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিলেকশন কমিটি তৈরি করা হয়েছিল কি না?

আরও পড়ুন: নাগাল্যান্ডে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ৭২ বছরের রিও, আগামীকাল ত্রিপুরায় শপথ মানিকের

সেই প্রশ্নের উত্তরে মানিক বলেন, ‘হ্যাঁ, করা হয়েছিল। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা পর্ষদ নিয়েছিল। আমি কীভাবে এগুলো বলতে পারি?’বিচারপতি বলেন, ‘পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি হিসেবে আপনার কাছে এগুলো জানা যেতে পারে।’২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার কে ফল প্রকাশ করেছিল? সেটাও এদিন জানতে চান বিচারপতি। মানিক বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারি না।

আরও পড়ুন: জামিনের আর্জি খারিজ, ইডি হেফাজতেই মানিক

বিশেষ করে এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে বোধগম্য নয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ার মোট নম্বর তৈরি করে বিভিন্ন বিভাগ মিলে।’ বাইরের কোনও সংস্থাকে রেজাল্ট প্রস্তুত করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল? বিচারপতির এই প্রশ্নের উত্তরে মানিক জানান, একটি সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তবে তার নাম এখন আর মনে নেই। বিচারপতি এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির নাম উল্লেখ করাতে, মানিক বলেন, ‘হ্যাঁ ওই ধরনের নাম শুনেছি।’অ্যাপ্টটিটড টেস্ট না নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘সভাপতি হিসেবে আপনার সময় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিক?’ মানিক জানান, অ্যাপ্টিটিটড টেস্ট নেওয়া হয়েছিল। তখন কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ নীতি মানা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন করলে, মানিক বলেন, ‘যতদূর মনে পড়ছে আইন অনুযায়ী মানা হয়েছিল।’প্রশ্নোত্তর শেষে বিচারপতি বলেন, ‘এখন আমার আর কিছু জানার নেই। আপনি যে বয়ান দিয়েছেন, তাতে স্বাক্ষর করে চলে যাবেন।’ সব শেষে বিচারপতিকে মানিক বলেন, ‘যাবার আগে একটা অনুরোধ করব। এই সংক্রান্ত যে কোনও মামলায় আমাকে ডেকে পাঠাবেন।

১৫ মিনিট আগে বললেই আমি চলে আসব। পরে আমার বিরুদ্ধে যা পদক্ষেপ করা হোক। আমি মেনে নেব। আমি সত্যিটাই বলতে চাই। সত্য সহজ, সত্য সুন্দর।’বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন। জরুরি তলব পেয়ে বুধবার দুপুরেই কলকাতা হাইকোর্টে হাজির করানো হল জেলবন্দি বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে দুপুর ৩টে নাগাদ দেখা যায় কলকাতা পুলিশের গাড়ি থেকে আদালত চত্বরে নামতে।