সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দির রহস্যমৃত্যু, খুনের অভিযোগ পরিবারের

- আপডেট : ১ জুন ২০২৫, রবিবার
- / 40
পুবের কলম প্রতিবেদক, হাওড়া: সংশোধনাগার অর্থ— ‘পুনর্বাসন ও সংশোধনের কেন্দ্র’। অথচ সেই সংশোধনাগারের মধ্যেই ঘটল চাঞ্চল্যকর মৃত্যু। হাওড়া জেলা সংশোধনাগারের এক বিচারাধীন বন্দি রবিবার সকালে রহস্যজনকভাবে মারা গেলেন। মৃতের নাম মুহাম্মদ সেলিম (৩৫)। পরিবারের অভিযোগ, আত্মহত্যা নয়, সরাসরি খুন। ইতিমধ্যে হাওড়া থানার পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চার বছর আগে শিবপুরের শালিমার স্টেশনের কাছে তোলা নিয়ে বিবাদে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হন সেলিম। পেশায় টোটোচালক সেলিমকে গ্রেফতার করেছিল শিবপুর বি-গার্ডেন থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার পাশাপাশি অস্ত্র আইনে মামলাও রুজু হয়। সেলিম তখন থেকেই বিচারাধীন বন্দি হিসেবে হাওড়া সংশোধনাগারে ছিলেন।
রবিবার সকালে সংশোধনাগারের সেলে ঝুলন্ত অবস্থায় সেলিমের দেহ দেখতে পান সহবন্দিরা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। পরে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে, সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সেলিমের পরিবার জানিয়েছে, রবিবার সকালে হঠাৎ হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে তারা হতবাক হয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, সেলিম আত্মহত্যা করতে পারেন না। এটি পরিষ্কার খুন। তাঁর গলায় কোনও দাগ ছিল না বলেও দাবি করেন মৃতের মা। সেলিমের আত্মীয়রা জানান, ‘আমরা দেখা করতে গিয়েছিলাম, তখন জানানো হয় সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। অথচ সেলে আরও দু’জন বন্দি ছিল, যারা বলেছে তারা ঘুমানোর সময় এই ঘটনা ঘটে।’
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সেলিম গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে সংশোধনাগারের ভিতরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পরিবারের দাবি, তাকে মারধর করে মেরে ফেলা হয়েছে। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘সেলের মধ্যে আরও তিনজন ছিল। তাদের সামনে কী ভাবে ও ফাঁসি নিল? ফাঁসি নেওয়ার জিনিস-ই বা পেল কোথা থেকে?’ জেলের ভিতরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। উঠেছে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি।