০৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬ জুন চন্দ্রভাগায় বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৪ জুন ২০২৫, বুধবার
  • / 32

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সামনের ৬ জুন জম্মু-কাশ্মীরে চন্দ্রভাগা (চেনাও) নদীর উপরে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উধমপুর, শ্রীনগর হয়ে বারামুল্লা পর্যন্ত বিস্তৃত ২৭২ কিমির এই রেলপথ ভারতের রেলের প্রযুক্তিবিদদের এক বড় সাফল্য স্বরূপ।

কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এর ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্বোধনের দিন বিশাল নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই দিন আবার পবিত্র ঈদ। এই রেলপথের কাজ পুরো শেষ হয়ে গেলে নয়াদিল্লি থেকে ট্রেনেই কাশ্মীরে যাওয়া যাবে। নদীবক্ষ থেকে ৩৫৯ মিটার উঁচু এই রেলসেতু আইফেল টাওয়ারের থেকেও উঁচু। চন্দ্র এবং ভাগা নদীর মিলনস্থল হল চন্দ্রভাগা নদী। জম্মু থেকে প্রবাহিত হয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বাওহালপুরের কাছে শতদ্রু নদীতে মিশেছে চন্দ্রভাগা।

রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, ২৭২ কিমি রেলপথের মধ্যে ৩৬টি সুড়ঙ্গ থাকছে। সব মিলিয়ে ১১৯ কিমি সুড়ঙ্গ পথ। এই সেতু ছাড়া আরও প্রায় হাজারটির মতো সেতু রয়েছে যাত্রাপথে। যে সেতুটি উদ্বোধন করা হবে সেটি এক তোরণের মতো। তারপর এমনভাবে সেতুটি তৈরি করা হয়েছে যে ২৫০ কিমি বেগে ঝড় বা হাওয়া দিলেও সেতুর কোনও ক্ষতি হবে না। পুরো সেতুটি গড়তে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইস্পাত লেগেছে। সেদিক থেকে এই সেতুকে বলা যায় ফাওলাদি সেতু। পার্সি শধ ফাওলাদ-এর অর্থ হল ইস্পাত। কারও শরীর ইস্পাতের মতো মজবুত হলে তাকে বলা হয় ফাওলাদি বডি।

রেলের আধিকারিক বলেছেন, গোড়ায় যখন আমরা সমীক্ষা করতে আসি, ভাবা হয়েছিল এই পাহাড়ি অঞ্চলে অত দীর্ঘ রেলপথ গড়া অসম্ভব। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছে রেলের প্রযুক্তিবিদরা। এখানে রেলপথ গড়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল, পাহাড়ের নিচে দুই শিলাস্তরের সম্মিলন হয়েছে। তাই ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে এখানে নির্মাণ কাজ চালানো ছিল স্পর্শকাতর বিষয়।

হঠাৎ ভূকম্প হলে কী হবে? এই চিন্তা মাথায় রেখে অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করে নির্মাণ কাজ চালানো হয়েছে। রেল প্রথমে দুর্গম অঞ্চলে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০০ কিমি পথ তৈরি করে। সেই পথ এখন এখানকার গ্রামের লোকজনের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। এখানে যে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন ট্রেনের কামরা টেনে নিয়ে যাবে তাও নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি। এর আগে এ দেশে এমন ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়নি। প্রতি স্টেশনে থাকছে কন্ট্রোল রুম। সেই কন্ট্রোল রুম থেকে নিকটস্থ সুড়ঙ্গ-এর উপর নজর রাখা হবে। নিরাপত্তা যাতে সুনিশ্চিত থাকে তা দেখতে সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র সিং ট্যুইটারে লিখেছেন, তিনদিন বাদে ইতিহাস গড়তে চলেছে কাশ্মীর।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৬ জুন চন্দ্রভাগায় বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ৪ জুন ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সামনের ৬ জুন জম্মু-কাশ্মীরে চন্দ্রভাগা (চেনাও) নদীর উপরে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উধমপুর, শ্রীনগর হয়ে বারামুল্লা পর্যন্ত বিস্তৃত ২৭২ কিমির এই রেলপথ ভারতের রেলের প্রযুক্তিবিদদের এক বড় সাফল্য স্বরূপ।

কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এর ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্বোধনের দিন বিশাল নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই দিন আবার পবিত্র ঈদ। এই রেলপথের কাজ পুরো শেষ হয়ে গেলে নয়াদিল্লি থেকে ট্রেনেই কাশ্মীরে যাওয়া যাবে। নদীবক্ষ থেকে ৩৫৯ মিটার উঁচু এই রেলসেতু আইফেল টাওয়ারের থেকেও উঁচু। চন্দ্র এবং ভাগা নদীর মিলনস্থল হল চন্দ্রভাগা নদী। জম্মু থেকে প্রবাহিত হয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বাওহালপুরের কাছে শতদ্রু নদীতে মিশেছে চন্দ্রভাগা।

রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, ২৭২ কিমি রেলপথের মধ্যে ৩৬টি সুড়ঙ্গ থাকছে। সব মিলিয়ে ১১৯ কিমি সুড়ঙ্গ পথ। এই সেতু ছাড়া আরও প্রায় হাজারটির মতো সেতু রয়েছে যাত্রাপথে। যে সেতুটি উদ্বোধন করা হবে সেটি এক তোরণের মতো। তারপর এমনভাবে সেতুটি তৈরি করা হয়েছে যে ২৫০ কিমি বেগে ঝড় বা হাওয়া দিলেও সেতুর কোনও ক্ষতি হবে না। পুরো সেতুটি গড়তে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইস্পাত লেগেছে। সেদিক থেকে এই সেতুকে বলা যায় ফাওলাদি সেতু। পার্সি শধ ফাওলাদ-এর অর্থ হল ইস্পাত। কারও শরীর ইস্পাতের মতো মজবুত হলে তাকে বলা হয় ফাওলাদি বডি।

রেলের আধিকারিক বলেছেন, গোড়ায় যখন আমরা সমীক্ষা করতে আসি, ভাবা হয়েছিল এই পাহাড়ি অঞ্চলে অত দীর্ঘ রেলপথ গড়া অসম্ভব। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছে রেলের প্রযুক্তিবিদরা। এখানে রেলপথ গড়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল, পাহাড়ের নিচে দুই শিলাস্তরের সম্মিলন হয়েছে। তাই ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে এখানে নির্মাণ কাজ চালানো ছিল স্পর্শকাতর বিষয়।

হঠাৎ ভূকম্প হলে কী হবে? এই চিন্তা মাথায় রেখে অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করে নির্মাণ কাজ চালানো হয়েছে। রেল প্রথমে দুর্গম অঞ্চলে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০০ কিমি পথ তৈরি করে। সেই পথ এখন এখানকার গ্রামের লোকজনের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। এখানে যে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন ট্রেনের কামরা টেনে নিয়ে যাবে তাও নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি। এর আগে এ দেশে এমন ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়নি। প্রতি স্টেশনে থাকছে কন্ট্রোল রুম। সেই কন্ট্রোল রুম থেকে নিকটস্থ সুড়ঙ্গ-এর উপর নজর রাখা হবে। নিরাপত্তা যাতে সুনিশ্চিত থাকে তা দেখতে সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র সিং ট্যুইটারে লিখেছেন, তিনদিন বাদে ইতিহাস গড়তে চলেছে কাশ্মীর।