০২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্তান ও ক্যারিয়ারের মধ্যে যেকোনও একটিকে বেছে নিতে একজন মাকে জোর করা যায় না: বোম্বে হাইকোর্ট

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 26

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  সন্তান ও ক্যারিয়ারের মধ্যে যেকোনও একটিকে বেছে নেওয়ার জন্য একজন মাকে জোর করা যাবে না, বলে জানিয়ে দিল বোম্বে হাইকোর্ট। স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক বিবাদে জড়িয়ে পড়া একজন মহিলাকে তার নাবালিকা কন্যা সহ পোল্যান্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার অনুমতি দেওয়ার সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে এই রায় দেয়। এই মামলায় কন্যা ও তার বাবার মধ্যে ভালোবাসার মতো কোনও সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি, আদালত কখনই একজন মহিলার ক্যারিয়ারের সম্ভাবনাকে অস্বীকার করতে পারে না।

 

আরও পড়ুন: পুলিশী পদক্ষেপকে ‘চরমপন্থী’ বলে ভর্ৎসনা আদালতের

বিচারপতি ভারতী ডাংরের একক বেঞ্চ গত ৮ জুলাই এই রায় দেন। গত বুধবার এই রায়ের কপি পাওয়া যায়। আদালত ওই মহিলাকে তার ৯ বছরের কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে পোল্যান্ডে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, বাবা তার কন্যার সঙ্গে মৌখিকভাবে যোগাযোগ রাখতে পারবেন। এছাড়া বাবার সঙ্গে মেয়ে দেখা করতে পারবেন।  আদালতে মহিলা জানিয়েছিলেন স্বামীর সঙ্গে তার বিবাদ চলছে। তিনি পোল্যান্ডের ক্র্যাকো শহরে একটি চাকরি পেয়েছেন, সেখানে তিনি তার মেয়েকে নিয়ে চলে যেতে চান। এর পর বোম্বে হাইকোর্ট মামলাটি পর্যবেক্ষণ করে এই রায় দেয়।  আদালতে মহিলার স্বামী তাঁর আবেদনে জানান, কন্যাকে নিয়ে তার স্ত্রী পোল্যান্ডে চলে গেলে তার মেয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পোল্যান্ডের অস্থির পরিস্থিতির কথাও নজরে আনেন তিনি।

আরও পড়ুন: কামরার জন্য করা জনস্বার্থ মামলা খারিজ বম্বে হাইকোর্টের

 

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জনসন অ্যান্ড জনসনকে বেবি পাউডার উৎপাদন ও বিক্রির অনুমতি দিল বম্বে হাই কোর্ট

ডাংরে বলেন, একজন বাবা তার কন্যা দেশের বাইরে চলে যাবে ব্যথিত, আর একজন মা তার ক্যারিয়ারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। বিচারপতি আরও বলেন, বাচ্চা মেয়েটি এতদিন পর্যন্ত তার মায়ের কাছেই ছিল। মা তাকে ছোট থেকে লালন-পালন করে বড় করেছেন। বয়সের কথা বিবেচনা করে আদালত মনে করেছে মেয়েটির তার মায়ের সঙ্গেই থাকা উচিত।  বিচারপতি আরও স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, আমি মনে করি না যে আদালত একজন মায়ের চাকরির সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করতে পারে, যিনি চাকরি করতে আগ্রহী এবং তাকে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।  আদালত বলে, সন্তানের কল্যাণের কথা ভেবে, বাবা ও মাকে তাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি ব্যালেন্স রক্ষা করে চলতে হবে।

আদালতে স্বামী জানান, ৯ বছরের কন্যাকে নিয়ে বিদেশে চলে গেলে সে উদ্বিগ্ন বোধ করতে পারে।  আদালত বাবার সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বলে, আবেদনকারী নিজের চাকরি বজায় রেখে জন্মের পর থেকেই তার সন্তানকে একা হাতে মানুষ করেছেন। মায়ের এই ভালোবাসা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সহায়ক হবে।

বিচারপতি ডাংরে তাঁর রায়দানে জানান, একাকী অভিভাবকের সঙ্গে একজন সন্তানের বিদেশে থাকা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। এক্ষেত্রে একজন কর্মরতা মহিলা তাঁর সন্তানকে ডে-কেয়ারে রেখে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করে সংসার সামলাতে পারেন। আদালত আরও জানিয়েছে, এই মামলায় আবেদনকারী মহিলার সঙ্গে তার মা’ও সন্তানের দেখাশোনার জন্য বিদেশে যাবেন।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সন্তান ও ক্যারিয়ারের মধ্যে যেকোনও একটিকে বেছে নিতে একজন মাকে জোর করা যায় না: বোম্বে হাইকোর্ট

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  সন্তান ও ক্যারিয়ারের মধ্যে যেকোনও একটিকে বেছে নেওয়ার জন্য একজন মাকে জোর করা যাবে না, বলে জানিয়ে দিল বোম্বে হাইকোর্ট। স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক বিবাদে জড়িয়ে পড়া একজন মহিলাকে তার নাবালিকা কন্যা সহ পোল্যান্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার অনুমতি দেওয়ার সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে এই রায় দেয়। এই মামলায় কন্যা ও তার বাবার মধ্যে ভালোবাসার মতো কোনও সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি, আদালত কখনই একজন মহিলার ক্যারিয়ারের সম্ভাবনাকে অস্বীকার করতে পারে না।

 

আরও পড়ুন: পুলিশী পদক্ষেপকে ‘চরমপন্থী’ বলে ভর্ৎসনা আদালতের

বিচারপতি ভারতী ডাংরের একক বেঞ্চ গত ৮ জুলাই এই রায় দেন। গত বুধবার এই রায়ের কপি পাওয়া যায়। আদালত ওই মহিলাকে তার ৯ বছরের কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে পোল্যান্ডে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, বাবা তার কন্যার সঙ্গে মৌখিকভাবে যোগাযোগ রাখতে পারবেন। এছাড়া বাবার সঙ্গে মেয়ে দেখা করতে পারবেন।  আদালতে মহিলা জানিয়েছিলেন স্বামীর সঙ্গে তার বিবাদ চলছে। তিনি পোল্যান্ডের ক্র্যাকো শহরে একটি চাকরি পেয়েছেন, সেখানে তিনি তার মেয়েকে নিয়ে চলে যেতে চান। এর পর বোম্বে হাইকোর্ট মামলাটি পর্যবেক্ষণ করে এই রায় দেয়।  আদালতে মহিলার স্বামী তাঁর আবেদনে জানান, কন্যাকে নিয়ে তার স্ত্রী পোল্যান্ডে চলে গেলে তার মেয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পোল্যান্ডের অস্থির পরিস্থিতির কথাও নজরে আনেন তিনি।

আরও পড়ুন: কামরার জন্য করা জনস্বার্থ মামলা খারিজ বম্বে হাইকোর্টের

 

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জনসন অ্যান্ড জনসনকে বেবি পাউডার উৎপাদন ও বিক্রির অনুমতি দিল বম্বে হাই কোর্ট

ডাংরে বলেন, একজন বাবা তার কন্যা দেশের বাইরে চলে যাবে ব্যথিত, আর একজন মা তার ক্যারিয়ারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। বিচারপতি আরও বলেন, বাচ্চা মেয়েটি এতদিন পর্যন্ত তার মায়ের কাছেই ছিল। মা তাকে ছোট থেকে লালন-পালন করে বড় করেছেন। বয়সের কথা বিবেচনা করে আদালত মনে করেছে মেয়েটির তার মায়ের সঙ্গেই থাকা উচিত।  বিচারপতি আরও স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, আমি মনে করি না যে আদালত একজন মায়ের চাকরির সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করতে পারে, যিনি চাকরি করতে আগ্রহী এবং তাকে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।  আদালত বলে, সন্তানের কল্যাণের কথা ভেবে, বাবা ও মাকে তাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি ব্যালেন্স রক্ষা করে চলতে হবে।

আদালতে স্বামী জানান, ৯ বছরের কন্যাকে নিয়ে বিদেশে চলে গেলে সে উদ্বিগ্ন বোধ করতে পারে।  আদালত বাবার সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বলে, আবেদনকারী নিজের চাকরি বজায় রেখে জন্মের পর থেকেই তার সন্তানকে একা হাতে মানুষ করেছেন। মায়ের এই ভালোবাসা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সহায়ক হবে।

বিচারপতি ডাংরে তাঁর রায়দানে জানান, একাকী অভিভাবকের সঙ্গে একজন সন্তানের বিদেশে থাকা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। এক্ষেত্রে একজন কর্মরতা মহিলা তাঁর সন্তানকে ডে-কেয়ারে রেখে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করে সংসার সামলাতে পারেন। আদালত আরও জানিয়েছে, এই মামলায় আবেদনকারী মহিলার সঙ্গে তার মা’ও সন্তানের দেখাশোনার জন্য বিদেশে যাবেন।