১৮ জুন ২০২৫, বুধবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বসিরহাট ইটভাটা কাণ্ডে বিস্ফোরকের তথ্য উড়িয়ে দিচ্ছে না ফরেন্সিক দল

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
  • / 14

ইনামুল হক, বসিরহাট: বসিরহাটের শতাব্দী প্রাচীন ভাটায় নজিরবিহীন ঘটনা চিমনিতে বিস্ফোরণ। দুর্ঘটনা কবলিত চিমনিতে বিস্ফোরক মজুদ থাকার আশঙ্কা অভিজ্ঞ চিমনি প্রস্তুতকারকদের। বলাবাহুল্য’ বুধবার সন্ধ্যায় এক ভয়ানক বিস্ফোরণে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বসিরহাট থানার শাঁকচূড়া-বাগুন্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের ধলতিথা গ্রামের একটি ইট ভাটার চিমনি। ঘটনায় তিন শ্রমিক এবং অন্য এক ভাটার মালিক নিহত হন। পাশাপাশি আহত হয়েছিলেন প্রায় কুড়ি জন শ্রমিক। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৩৬ ঘন্টা। অবশেষে সেই ঘটনার তদন্তে অগ্রগতি আনতে রাজ্যের ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালো।

 

আরও পড়ুন: হাওড়ায় ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল

শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ফরেন্সিক দলের ২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ হেডকোয়ার্টার গোলাম সারোয়ার ও বসিরহাট থানার আইসি সুরিন্দর সিংরা বসিরহাট থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই ভাটায় এসে পৌঁছান। তারা চিমনি সহ পুরো ভাটাটি পরিদর্শন করেন। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে একাধিক নমুনাও সংগ্রহ করেন। প্রাথমিক ভাবে ঘটনার তদন্তে নেমে ধন্দে পড়ে বসিরহাট পুলিশ জেলার আধিকারিকরা। ঠিক কী করে বিস্ফোরণ ঘটলো তার এখনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে মিথেন গ্যাস জমে এবং সেই গ্যাস আগুনের সংস্পর্শে আসাতেই এই ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন: বাগুইহাটি জোড়া খুনে ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করল  সিআইডি ও ফরেনসিক দল  

 

আরও পড়ুন: বাগুইআটি কাণ্ডে ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক টিম, খুনে ভাড়া করা গাড়ি থেকে ৭টি আঙুলের ছাপ শনাক্ত

যদিও ফরেন্সিক দল ইতিমধ্যে চিমনির ভেতরে ঢুকে পুরো জায়গাটি খতিয়ে দেখে এবং সেখানে কোন গ্যাস মজুদ ছিল কিনা সেটাও পরীক্ষা করে দেখেন। আতস কাঁচ দিয়ে ঘটনাস্থল পুরোটাই পর্যবেক্ষণ করছেন তদন্ত কারীরা। বিভিন্ন স্পট গুলি মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে নিচ্ছেন। বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে তার নথিও লিপিবদ্ধ করছেন। এমনকি ভয়ানক কোন বিস্ফোরকের উপস্থিতি থাকতে পারে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন ফরেন্সিক দলের আধিকারিকরা। ফলে এক প্রকার বলা যেতেই পারে বিস্ফোরকের তথ্য একেবারে উড়ি দিচ্ছে না ফরেন্সিক দল। ইতিমধ্যে ইট ভাটার শ্রমিক হাফিজুল মন্ডলের সহকর্মী নজরুল মন্ডল যে সেদিন ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল সে জানায়, এর পিছনে নিশ্চয়ই কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভাটায় কাজ করে আসছি কখনো এরকম ভাবে চিমনিতে বিস্ফোরণ হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখুক পুলিশ প্রশাসন।

 

বসিরহাটের এক চিমনি প্রস্তুতকারক বিশেষজ্ঞ জয়নাল মোল্লা বলেন, “বসিরহাটের ভাটা শিল্প প্রায় শতাব্দী প্রাচীন কিন্তু কখনোই এরকম ধরনের ঘটনা ঘটেনি। গ্যাস জমে থাকার ফলে এই ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। এরমধ্যে কোন বিস্ফোরক জাতীয় জিনিস মজুদ করা ছিল এবং সেটাই আগুনের সংস্পর্শে আসা মাত্র বিস্ফোরনে আকার ধারণ করে।” ফলে গ্যাস জমে থাকার ফলে এই ঘটনা? নাকি এর পিছনে বিস্ফোরক মজুদ থাকার কোন যোগ রয়েছে? তাহলে কী পরিকল্পিতভাবে বিস্ফোরক মজুদ করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে? এমনই প্রশ্ন তুলছেন মৃতের পরিবারসহ ওয়াকিবহাল মহল। তাহলে কি ওই চিমনির মধ্যে কোন বিস্ফোরক দ্রব্য তথা জিলেটিন স্টিক জাতীয় কোন বস্তু ছিল? পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে রাজ্যের ফরেন্সিক দল ও বসিরহাট পুলিশ জেলার আধিকারিকরা।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বসিরহাট ইটভাটা কাণ্ডে বিস্ফোরকের তথ্য উড়িয়ে দিচ্ছে না ফরেন্সিক দল

আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবার

ইনামুল হক, বসিরহাট: বসিরহাটের শতাব্দী প্রাচীন ভাটায় নজিরবিহীন ঘটনা চিমনিতে বিস্ফোরণ। দুর্ঘটনা কবলিত চিমনিতে বিস্ফোরক মজুদ থাকার আশঙ্কা অভিজ্ঞ চিমনি প্রস্তুতকারকদের। বলাবাহুল্য’ বুধবার সন্ধ্যায় এক ভয়ানক বিস্ফোরণে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বসিরহাট থানার শাঁকচূড়া-বাগুন্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের ধলতিথা গ্রামের একটি ইট ভাটার চিমনি। ঘটনায় তিন শ্রমিক এবং অন্য এক ভাটার মালিক নিহত হন। পাশাপাশি আহত হয়েছিলেন প্রায় কুড়ি জন শ্রমিক। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৩৬ ঘন্টা। অবশেষে সেই ঘটনার তদন্তে অগ্রগতি আনতে রাজ্যের ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালো।

 

আরও পড়ুন: হাওড়ায় ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল

শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ফরেন্সিক দলের ২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ হেডকোয়ার্টার গোলাম সারোয়ার ও বসিরহাট থানার আইসি সুরিন্দর সিংরা বসিরহাট থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই ভাটায় এসে পৌঁছান। তারা চিমনি সহ পুরো ভাটাটি পরিদর্শন করেন। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে একাধিক নমুনাও সংগ্রহ করেন। প্রাথমিক ভাবে ঘটনার তদন্তে নেমে ধন্দে পড়ে বসিরহাট পুলিশ জেলার আধিকারিকরা। ঠিক কী করে বিস্ফোরণ ঘটলো তার এখনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে মিথেন গ্যাস জমে এবং সেই গ্যাস আগুনের সংস্পর্শে আসাতেই এই ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন: বাগুইহাটি জোড়া খুনে ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করল  সিআইডি ও ফরেনসিক দল  

 

আরও পড়ুন: বাগুইআটি কাণ্ডে ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক টিম, খুনে ভাড়া করা গাড়ি থেকে ৭টি আঙুলের ছাপ শনাক্ত

যদিও ফরেন্সিক দল ইতিমধ্যে চিমনির ভেতরে ঢুকে পুরো জায়গাটি খতিয়ে দেখে এবং সেখানে কোন গ্যাস মজুদ ছিল কিনা সেটাও পরীক্ষা করে দেখেন। আতস কাঁচ দিয়ে ঘটনাস্থল পুরোটাই পর্যবেক্ষণ করছেন তদন্ত কারীরা। বিভিন্ন স্পট গুলি মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে নিচ্ছেন। বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে তার নথিও লিপিবদ্ধ করছেন। এমনকি ভয়ানক কোন বিস্ফোরকের উপস্থিতি থাকতে পারে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন ফরেন্সিক দলের আধিকারিকরা। ফলে এক প্রকার বলা যেতেই পারে বিস্ফোরকের তথ্য একেবারে উড়ি দিচ্ছে না ফরেন্সিক দল। ইতিমধ্যে ইট ভাটার শ্রমিক হাফিজুল মন্ডলের সহকর্মী নজরুল মন্ডল যে সেদিন ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল সে জানায়, এর পিছনে নিশ্চয়ই কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভাটায় কাজ করে আসছি কখনো এরকম ভাবে চিমনিতে বিস্ফোরণ হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখুক পুলিশ প্রশাসন।

 

বসিরহাটের এক চিমনি প্রস্তুতকারক বিশেষজ্ঞ জয়নাল মোল্লা বলেন, “বসিরহাটের ভাটা শিল্প প্রায় শতাব্দী প্রাচীন কিন্তু কখনোই এরকম ধরনের ঘটনা ঘটেনি। গ্যাস জমে থাকার ফলে এই ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। এরমধ্যে কোন বিস্ফোরক জাতীয় জিনিস মজুদ করা ছিল এবং সেটাই আগুনের সংস্পর্শে আসা মাত্র বিস্ফোরনে আকার ধারণ করে।” ফলে গ্যাস জমে থাকার ফলে এই ঘটনা? নাকি এর পিছনে বিস্ফোরক মজুদ থাকার কোন যোগ রয়েছে? তাহলে কী পরিকল্পিতভাবে বিস্ফোরক মজুদ করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে? এমনই প্রশ্ন তুলছেন মৃতের পরিবারসহ ওয়াকিবহাল মহল। তাহলে কি ওই চিমনির মধ্যে কোন বিস্ফোরক দ্রব্য তথা জিলেটিন স্টিক জাতীয় কোন বস্তু ছিল? পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে রাজ্যের ফরেন্সিক দল ও বসিরহাট পুলিশ জেলার আধিকারিকরা।