০৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শহরে ৬৯ টি ম্যালেরিয়াপ্রবণ ওয়ার্ড চিন্তা বাড়াচ্ছে কলকাতা পুরসভার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার
  • / 18

পুবের কলম প্রতিবেদক: শহরে করোনার প্রকোপ অনেকটা কমলেও বর্তমানে কলকাতা পুরসভার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াবেশ কিছু এলাকায় ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা রীতিমতো উদ্বেগজনক২০২১ সালের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৬৯ টি ওয়ার্ডে এখনও ম্যালেরিয়াপ্রবণ হয়ে রয়েছেসংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড গুলিতে ২০২১ সালে প্রতি ১০০০ জন পিছু জন করে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেনঅন্যদিকে ডেঙ্গুপ্রবণ ওয়ার্ড ১৬টিএখানেও প্রতি ১০০০ জন পিছু করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেনতাই এই ওয়ার্ডগুলোতে চলতি বছরে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেবার সিদ্ধান্ত হয়েছে

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তথ্য সহকারে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ।

আরও পড়ুন: পার্কিং ফি নিয়ে কারচুপি রুখতে কড়া কলকাতা পুরসভা

তথ্যানুযায়ী দেখা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার , , , এই চারটি বরোর অন্তর্গত ওয়ার্ড গুলি সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছেবিশেষত করোনা অতিমারির সময় এই ওয়াডগুলি সবথেকে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিলঅতীন ঘোষ এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড গুলিতে বাইরে থেকে আসা লোকজনের সংখ্যা অনেক বেশিপাশাপাশি করোনার সময় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা এই ওয়ার্ডের সবথেকে বেশি দেখা গিয়েছেএই এলাকাগুলির উপরেই সবথেকে বেশি নজর রয়েছে এবারএই বরোর ওয়ার্ড গুলি নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভারগতবছর এই ওয়ার্ড গুলির যেসব বাসিন্দা ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছেস্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে বিশেষ নজর যাতে রাখেন, তার জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছেএই ওয়ার্ডগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যেই ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি পাওয়া গিয়েছেসব থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত এখানকার রোগীরা ওষুধের ডোজ সম্পূর্ণ করছেন নাফলে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছেপাশাপাশি তাঁর যুক্তি, এই ওয়ার্ডগুলিতে বস্তি, কারখানা, চামড়া পট্টি, জনবসতি অনেক বেশিফলে আক্রান্তের সংখ্যাও অনেকটাই বেশি

আরও পড়ুন: বিনা অপরাধেই ‘জেলবন্দি’ হতে পারেন আপনিও, নেপথ্যে কলকাতা পুরসভা 

সূত্রের খবর, পুরসভার রেকর্ড অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর এতদিন সবচেয়ে বেশি পাওয়া যেতে ১০, ১১ ১২ নম্বর বোরোতেবর্তমানে এই বোরোগুলি প্রায় ডেঙ্গু শূন্যএরমধ্যে নম্বর বোরোতে এখনও কিছু কেস পাওয়া যাচ্ছে বলে কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত অতীন ঘোষ

আরও পড়ুন: ২২৪টি স্কুলে ‘স্পোকেন ইংলিশ’ শেখাবে কলকাতা পুরসভা

যদিও ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালের রিপোর্টের ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে গত ডেঙ্গুর প্রকোপ ৭০ শতাংশ কমেছেএদিকে ডেঙ্গু সংক্রমণ গত বছরে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, পুরসভার কাছে কিছুটা মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ম্যালেরিয়াগত বছর ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে বেশি প্রকোপ দেখা গিয়েছিল , , নম্বর বোরোতেগত বছর জানুয়ারির রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল হাজারতারমধ্যে ৮০ শতাংশ কেস এসেছিল এই চারটি বোরোর থেকে

পুরসভার তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৬১৫৭ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হন ১২৮৩২ জন ( সাধারণ ১২১১৭ এবং ফ্যালসিফেরাম ৭১৫)। ২০২০ সালে এই সংখ্যা অনেকটাই কমে২০২০ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৩৫৪ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হন ৭২৩৪ জন ( সাধারণ ৬২৬৭ এবং ফ্যালসিফেরাম ৯৬৭)। ২০২১ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তর সংখ্যা ছিল ২৪৮১ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্তর ১৩৩৮৭ জন ( সাধারণ ৯১০০ এবং ফ্যালসিফেরাম ৪২৮৭)। ২০২২ সালে সমস্ত আগের রেকর্ড ভেঙে শহরে মহাবাহিত রোগ থেকে আক্রন্তের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় নজিরবিহীন ভাবে২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৫৬ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্তর সংখ্যা ২২৮ জন ( সাধারণ ১৭৩ এবং ফ্যালসিফেরাম ৫৫)।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শহরে ৬৯ টি ম্যালেরিয়াপ্রবণ ওয়ার্ড চিন্তা বাড়াচ্ছে কলকাতা পুরসভার

আপডেট : ১ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: শহরে করোনার প্রকোপ অনেকটা কমলেও বর্তমানে কলকাতা পুরসভার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াবেশ কিছু এলাকায় ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা রীতিমতো উদ্বেগজনক২০২১ সালের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৬৯ টি ওয়ার্ডে এখনও ম্যালেরিয়াপ্রবণ হয়ে রয়েছেসংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড গুলিতে ২০২১ সালে প্রতি ১০০০ জন পিছু জন করে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেনঅন্যদিকে ডেঙ্গুপ্রবণ ওয়ার্ড ১৬টিএখানেও প্রতি ১০০০ জন পিছু করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেনতাই এই ওয়ার্ডগুলোতে চলতি বছরে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেবার সিদ্ধান্ত হয়েছে

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তথ্য সহকারে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ।

আরও পড়ুন: পার্কিং ফি নিয়ে কারচুপি রুখতে কড়া কলকাতা পুরসভা

তথ্যানুযায়ী দেখা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার , , , এই চারটি বরোর অন্তর্গত ওয়ার্ড গুলি সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছেবিশেষত করোনা অতিমারির সময় এই ওয়াডগুলি সবথেকে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিলঅতীন ঘোষ এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড গুলিতে বাইরে থেকে আসা লোকজনের সংখ্যা অনেক বেশিপাশাপাশি করোনার সময় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা এই ওয়ার্ডের সবথেকে বেশি দেখা গিয়েছেএই এলাকাগুলির উপরেই সবথেকে বেশি নজর রয়েছে এবারএই বরোর ওয়ার্ড গুলি নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভারগতবছর এই ওয়ার্ড গুলির যেসব বাসিন্দা ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছেস্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে বিশেষ নজর যাতে রাখেন, তার জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছেএই ওয়ার্ডগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যেই ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি পাওয়া গিয়েছেসব থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত এখানকার রোগীরা ওষুধের ডোজ সম্পূর্ণ করছেন নাফলে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছেপাশাপাশি তাঁর যুক্তি, এই ওয়ার্ডগুলিতে বস্তি, কারখানা, চামড়া পট্টি, জনবসতি অনেক বেশিফলে আক্রান্তের সংখ্যাও অনেকটাই বেশি

আরও পড়ুন: বিনা অপরাধেই ‘জেলবন্দি’ হতে পারেন আপনিও, নেপথ্যে কলকাতা পুরসভা 

সূত্রের খবর, পুরসভার রেকর্ড অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর এতদিন সবচেয়ে বেশি পাওয়া যেতে ১০, ১১ ১২ নম্বর বোরোতেবর্তমানে এই বোরোগুলি প্রায় ডেঙ্গু শূন্যএরমধ্যে নম্বর বোরোতে এখনও কিছু কেস পাওয়া যাচ্ছে বলে কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত অতীন ঘোষ

আরও পড়ুন: ২২৪টি স্কুলে ‘স্পোকেন ইংলিশ’ শেখাবে কলকাতা পুরসভা

যদিও ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালের রিপোর্টের ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে গত ডেঙ্গুর প্রকোপ ৭০ শতাংশ কমেছেএদিকে ডেঙ্গু সংক্রমণ গত বছরে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, পুরসভার কাছে কিছুটা মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ম্যালেরিয়াগত বছর ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে বেশি প্রকোপ দেখা গিয়েছিল , , নম্বর বোরোতেগত বছর জানুয়ারির রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল হাজারতারমধ্যে ৮০ শতাংশ কেস এসেছিল এই চারটি বোরোর থেকে

পুরসভার তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৬১৫৭ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হন ১২৮৩২ জন ( সাধারণ ১২১১৭ এবং ফ্যালসিফেরাম ৭১৫)। ২০২০ সালে এই সংখ্যা অনেকটাই কমে২০২০ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৩৫৪ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হন ৭২৩৪ জন ( সাধারণ ৬২৬৭ এবং ফ্যালসিফেরাম ৯৬৭)। ২০২১ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তর সংখ্যা ছিল ২৪৮১ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্তর ১৩৩৮৭ জন ( সাধারণ ৯১০০ এবং ফ্যালসিফেরাম ৪২৮৭)। ২০২২ সালে সমস্ত আগের রেকর্ড ভেঙে শহরে মহাবাহিত রোগ থেকে আক্রন্তের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় নজিরবিহীন ভাবে২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৫৬ জন, ম্যালেরিয়া আক্রান্তর সংখ্যা ২২৮ জন ( সাধারণ ১৭৩ এবং ফ্যালসিফেরাম ৫৫)।