১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওবিসি তালিকা তৈরির ভিত্তি নিয়ে মুখ্যসচিবকে চিঠি জাতীয় অনগ্রসর কমিশনের

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 11

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ গত মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বত্তৃতা দিয়ে আদালতের নির্দেশে তৈরি হওয়া নতুন অনগ্রসর সম্প্রদায়ের তালিকা তৈরির কথা জানিয়েছিলেন। এ বার সেই তালিকা নিয়ে কার্যত প্রশ্ন তুলে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি দিলেন জাতীয় অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের (এনসিবিসি) চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ গঙ্গারাম অহির।

পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রাজ্য ওবিসি তালিকাভুক্ত বিভিন্ন জাতিগুলিকে উপ-শ্রেণিভুক্ত করে নোটিফাই করা হয়েছে। এ কথা জানিয়েছে জাতীয় অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশন। এর প্রেক্ষিতে এনসিবিসি চেয়ারপার্সন চেয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের সুপারিশ-সহ সমীক্ষার রিপোর্ট এবং যাবতীয় তথ্য ও সমস্ত সহায়ক নথি দেওয়া হোক।

শনিবার জাতীয় অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এর আগে দু’বার রাজ্য সরকারের কাছে ওবিসি তালিকা তৈরি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হলেও তা জানায়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাই এ বারও তাদের চিঠির উত্তর পাওয়া যাবে না বলেই ধরে নিচ্ছে এনসিবিসি।

সম্প্রতি ওবিসি নিয়ে রাজ্যের অবস্থান বিধানসভায় স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আদালতের নির্দেশ মেনে তৈরি করা হয়েছে ওবিসিদের নতুন তালিকা। রাজ্যে কোন কোন জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, সেই তালিকা কিছু দিন আগে প্রকাশও করে অনগ্রসর সম্প্রদায় উন্নয়ন কমিশন।

রাজ্য সরকারের নতুন তালিকায় ওবিসি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৪০টি জনগোষ্ঠীকে। আরও অনগ্রসর বা ‘ওবিসি-এ’ তালিকায় ৪৯টি এবং অনগ্রসর বা ‘ওবিসি-বি’ তালিকায় ৯১টি জনগোষ্ঠীর নাম রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে সমীক্ষা করে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশের পর জেলাশাসকদের নেতৃত্বে রাজ্যের সব ক’টি জেলায় সমীক্ষা হয়। সল্টলেকে অনগ্রসর সম্প্রদায় উন্নয়ন কমিশনের দফতরে তার রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা চলেছে দীর্ঘ দিন। তার পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন সংশোধিত তালিকায় সিলমোহর দেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের কমিশনের অন্যতম সদস্য তথা রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ওবিসি নিয়ে যে তালিকা তৈরি করেছে, তা সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি করা হয়েছে আদালতের নির্দেশ এবং আইনমাফিক। এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় ভিত্তিতে কোনও কিছু করা হয়নি।

বিজেপি নেতারা আসলে এ সব অভিযোগ করে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে উস্কে দিয়ে ভোটের ফয়দা তুলতে চাইছেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘যেহেতু আদালতের নির্দেশে আইন মেনেই সংশোধিত ওবিসি তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তাই এ ক্ষেত্রে আগামী দিনেও আবেদনের সুযোগ থাকবে। তালিকা নিয়ে কারও কোনও আপত্তি থাকলে কমিশনে অভিযোগ জানানো যাবে।’’

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ওবিসি তালিকা তৈরির ভিত্তি নিয়ে মুখ্যসচিবকে চিঠি জাতীয় অনগ্রসর কমিশনের

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ গত মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বত্তৃতা দিয়ে আদালতের নির্দেশে তৈরি হওয়া নতুন অনগ্রসর সম্প্রদায়ের তালিকা তৈরির কথা জানিয়েছিলেন। এ বার সেই তালিকা নিয়ে কার্যত প্রশ্ন তুলে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি দিলেন জাতীয় অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের (এনসিবিসি) চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ গঙ্গারাম অহির।

পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রাজ্য ওবিসি তালিকাভুক্ত বিভিন্ন জাতিগুলিকে উপ-শ্রেণিভুক্ত করে নোটিফাই করা হয়েছে। এ কথা জানিয়েছে জাতীয় অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশন। এর প্রেক্ষিতে এনসিবিসি চেয়ারপার্সন চেয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের সুপারিশ-সহ সমীক্ষার রিপোর্ট এবং যাবতীয় তথ্য ও সমস্ত সহায়ক নথি দেওয়া হোক।

শনিবার জাতীয় অনগ্রসর সম্প্রদায় কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এর আগে দু’বার রাজ্য সরকারের কাছে ওবিসি তালিকা তৈরি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হলেও তা জানায়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাই এ বারও তাদের চিঠির উত্তর পাওয়া যাবে না বলেই ধরে নিচ্ছে এনসিবিসি।

সম্প্রতি ওবিসি নিয়ে রাজ্যের অবস্থান বিধানসভায় স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আদালতের নির্দেশ মেনে তৈরি করা হয়েছে ওবিসিদের নতুন তালিকা। রাজ্যে কোন কোন জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, সেই তালিকা কিছু দিন আগে প্রকাশও করে অনগ্রসর সম্প্রদায় উন্নয়ন কমিশন।

রাজ্য সরকারের নতুন তালিকায় ওবিসি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৪০টি জনগোষ্ঠীকে। আরও অনগ্রসর বা ‘ওবিসি-এ’ তালিকায় ৪৯টি এবং অনগ্রসর বা ‘ওবিসি-বি’ তালিকায় ৯১টি জনগোষ্ঠীর নাম রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে সমীক্ষা করে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশের পর জেলাশাসকদের নেতৃত্বে রাজ্যের সব ক’টি জেলায় সমীক্ষা হয়। সল্টলেকে অনগ্রসর সম্প্রদায় উন্নয়ন কমিশনের দফতরে তার রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা চলেছে দীর্ঘ দিন। তার পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন সংশোধিত তালিকায় সিলমোহর দেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের কমিশনের অন্যতম সদস্য তথা রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ওবিসি নিয়ে যে তালিকা তৈরি করেছে, তা সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি করা হয়েছে আদালতের নির্দেশ এবং আইনমাফিক। এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় ভিত্তিতে কোনও কিছু করা হয়নি।

বিজেপি নেতারা আসলে এ সব অভিযোগ করে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে উস্কে দিয়ে ভোটের ফয়দা তুলতে চাইছেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘যেহেতু আদালতের নির্দেশে আইন মেনেই সংশোধিত ওবিসি তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তাই এ ক্ষেত্রে আগামী দিনেও আবেদনের সুযোগ থাকবে। তালিকা নিয়ে কারও কোনও আপত্তি থাকলে কমিশনে অভিযোগ জানানো যাবে।’’