২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিএইচডির ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ, প্রশ্নের মুখে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৫ ডিসেম্বর ২০২২, সোমবার
  • / 39

পুবের কলম প্রতিবেদক: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষা বর্ষের পিএইচডি  ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এমনভাবে মাঝপথে পিএইচডি ভর্তি বন্ধ হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন।

২০২১ সালের ৩ নভেম্বর  পিএইচডি ও এমফিলের জন্য আরবি, বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন, ভূগোল, বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাসহ কুড়িটি বিষয়ে পিএইচডিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়।  সেই অনুসারে প্রার্থীরা অনলাইনে ৫০০ টাকা পেমেন্ট করে ফর্ম পূরণ করে।

আরও পড়ুন: আলিয়ার স্নাতকোত্তরের প্রবেশিকা ১৮ এবং ২৩ জুলাই

নেট-সেট উত্তীর্ণ নয়, এমন প্রার্থীদের জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ এলিজিবিলিটি টেস্টেরও রেট ব্যবস্থা করে। ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৮৯৬ (পরে আরও ১৫, জনের নাম রেট পরীক্ষা ও সরাসরি  ইন্টারভিউতে বসার জন্য বাছাই করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: আরও তিনদিন ভর্তির সময়সীমা বাড়ালো আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  

এই সংখ্যা থেকে স্পষ্ট প্রায় এক হাজার পড়ুয়া পিএইচডি ও এম ফিলের জন্য আলিয়ায় আবেদন করে। রেট পরীক্ষা গ্রহণের পর ৩০ মার্চ সফল পরীক্ষার্থীদের নাম ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গবেষণা সংক্রান্ত এটিই শেষ বিজ্ঞপ্তি। এরপর আর কোনও বিজ্ঞপ্তি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। রেট পাস করা পরীক্ষার্থীরা এবং সরাসরি ইন্টারভিউয়ে বসার যোগ্য প্রার্থীরা কবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পিএইচডি ইন্টারভিউ দেবে তা আর জানানো হয়নি। পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু মাঝ পথে এভাবেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া।

আরও পড়ুন: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ভর্তির বিজ্ঞপ্তি

এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পিএইচডির প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। প্রার্থীদের বক্তব্য,  পিএইচডিতে ভর্তির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজি বিভাগের এক ছাত্র। তবে আদালতে একাধিকবার শুনানি হলেও ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও স্থগিতাদেশ আদালত দেয়নি বলেও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক জানিয়েছেন, একটি বিভাগের তরফ থেকে মামলা করা হয়েছে। তবে সমস্ত বিভাগের পিএইচডিতে ভর্তি আটকে রয়েছে। এভাবে কোনও প্রক্রিয়া আটকে থাকতে পারে না। তাছাড়া পরবর্তী প্রক্রিয়াও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুরু করতে পারে।

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক জানিয়েছেন, বহু ছাত্রছাত্রী আলিয়ায় পিএইচডি করব বলে বহু দিন ধরে অপেক্ষা করে রয়েছেন। পিএইচডির ভর্তি চালু না হওয়ায় অনেকে আবার অন্যত্র চেষ্টা করছেন। এতে আলিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

আলিয়ার অন্য এক অধ্যাপকের কথায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে ভর্তির প্রক্রিয়া চালু না হওয়ার ফলে এখানকার পড়ুয়াদেরও সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তারা পিএইচডি করতে কোথায় যাবে?

কয়েকশো ছাত্রছাত্রী পাস করে অপেক্ষার দিন গুনছে এখনও। কবে তাদের ইন্টারভিউতে ডাকা হবে? জানে না তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও এ নিয়ে কোনও কারণ জানানো হয়নি। এটাকে চূড়ান্ত গাফিলতি হিসেবেই দেখছেন প্রার্থী পড়ুয়ারা। পিএইচডির শেষ বিজ্ঞপ্তির পর ৮ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে।

আলিয়ায় পিএইচডির জট কাটেনি। অনেকে বলছেন, ৫০০ টাকা করে জমা দিয়ে আমরা ফর্ম ফিল আপ করেছি। সেসব টাকারই বা কী হল, আর প্রক্রিয়া আচমকা থেমে গেল কেন?

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার অবস্থান স্পষ্ট করুক। তবে এদিন পিএইচডি ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ থাকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পিএইচডির ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ, প্রশ্নের মুখে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট : ৫ ডিসেম্বর ২০২২, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষা বর্ষের পিএইচডি  ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এমনভাবে মাঝপথে পিএইচডি ভর্তি বন্ধ হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন।

২০২১ সালের ৩ নভেম্বর  পিএইচডি ও এমফিলের জন্য আরবি, বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন, ভূগোল, বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাসহ কুড়িটি বিষয়ে পিএইচডিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়।  সেই অনুসারে প্রার্থীরা অনলাইনে ৫০০ টাকা পেমেন্ট করে ফর্ম পূরণ করে।

আরও পড়ুন: আলিয়ার স্নাতকোত্তরের প্রবেশিকা ১৮ এবং ২৩ জুলাই

নেট-সেট উত্তীর্ণ নয়, এমন প্রার্থীদের জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ এলিজিবিলিটি টেস্টেরও রেট ব্যবস্থা করে। ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৮৯৬ (পরে আরও ১৫, জনের নাম রেট পরীক্ষা ও সরাসরি  ইন্টারভিউতে বসার জন্য বাছাই করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: আরও তিনদিন ভর্তির সময়সীমা বাড়ালো আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  

এই সংখ্যা থেকে স্পষ্ট প্রায় এক হাজার পড়ুয়া পিএইচডি ও এম ফিলের জন্য আলিয়ায় আবেদন করে। রেট পরীক্ষা গ্রহণের পর ৩০ মার্চ সফল পরীক্ষার্থীদের নাম ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গবেষণা সংক্রান্ত এটিই শেষ বিজ্ঞপ্তি। এরপর আর কোনও বিজ্ঞপ্তি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। রেট পাস করা পরীক্ষার্থীরা এবং সরাসরি ইন্টারভিউয়ে বসার যোগ্য প্রার্থীরা কবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পিএইচডি ইন্টারভিউ দেবে তা আর জানানো হয়নি। পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু মাঝ পথে এভাবেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া।

আরও পড়ুন: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ভর্তির বিজ্ঞপ্তি

এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পিএইচডির প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। প্রার্থীদের বক্তব্য,  পিএইচডিতে ভর্তির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজি বিভাগের এক ছাত্র। তবে আদালতে একাধিকবার শুনানি হলেও ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও স্থগিতাদেশ আদালত দেয়নি বলেও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক জানিয়েছেন, একটি বিভাগের তরফ থেকে মামলা করা হয়েছে। তবে সমস্ত বিভাগের পিএইচডিতে ভর্তি আটকে রয়েছে। এভাবে কোনও প্রক্রিয়া আটকে থাকতে পারে না। তাছাড়া পরবর্তী প্রক্রিয়াও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুরু করতে পারে।

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক জানিয়েছেন, বহু ছাত্রছাত্রী আলিয়ায় পিএইচডি করব বলে বহু দিন ধরে অপেক্ষা করে রয়েছেন। পিএইচডির ভর্তি চালু না হওয়ায় অনেকে আবার অন্যত্র চেষ্টা করছেন। এতে আলিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

আলিয়ার অন্য এক অধ্যাপকের কথায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে ভর্তির প্রক্রিয়া চালু না হওয়ার ফলে এখানকার পড়ুয়াদেরও সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তারা পিএইচডি করতে কোথায় যাবে?

কয়েকশো ছাত্রছাত্রী পাস করে অপেক্ষার দিন গুনছে এখনও। কবে তাদের ইন্টারভিউতে ডাকা হবে? জানে না তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও এ নিয়ে কোনও কারণ জানানো হয়নি। এটাকে চূড়ান্ত গাফিলতি হিসেবেই দেখছেন প্রার্থী পড়ুয়ারা। পিএইচডির শেষ বিজ্ঞপ্তির পর ৮ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে।

আলিয়ায় পিএইচডির জট কাটেনি। অনেকে বলছেন, ৫০০ টাকা করে জমা দিয়ে আমরা ফর্ম ফিল আপ করেছি। সেসব টাকারই বা কী হল, আর প্রক্রিয়া আচমকা থেমে গেল কেন?

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার অবস্থান স্পষ্ট করুক। তবে এদিন পিএইচডি ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ থাকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।