০৯ জুন ২০২৫, সোমবার, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোদাখালির ‘চোরবাড়ি’ দেখে হতবাক পুলিশ

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ৮ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 33

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়: গ্রামের সরু রাস্তা পেরিয়ে হঠাৎ চোখের সামনে ভেসে উঠলো একটি রাজপ্রাসাদ।তবে এই বাড়ির মালিক একজন চোর,আর এমন দৃশ্য চোখে দেখেই হকচকিয়ে গেল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালির ভেটকাখালি গ্রামে।

ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার (১ জুন) রাতে হাওড়ার রাজাপুর থানার ঘোষালচকের এক বাড়িতে চুরির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে থানায় নিয়ে আসা হয়।তবে শুরু থেকেই সে নিজের নাম ও ঠিকানা ভুলভাল বলতে থাকে।

সোমবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ছয়দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ব্যক্তি নিজের নাম জানায় অমিত দত্ত এবং জানায় তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালি থানারভেটকাখালি গ্রামে।এরপর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ তাকে সঙ্গে নিয়ে যায় তার বাড়িতে। সেখানেই এক অদ্ভুত চিত্র উঠে আসে পুলিশের চোখে—যা দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যায় তদন্তকারী পুলিশ  আধিকারিকরা।তিন তলা বিশাল মার্বেল বসানো বাড়ি, একাধিক ঝাড়বাতি, প্রতিটি ঘরে ফলস সিলিং, দামি কাঠের আসবাবপত্র,বিলাসবহুল বাথরুমে বিশাল বাথটব,এমনকি শরীরচর্চার মেশিনে ভর্তি একটি প্রাইভেট জিম।

বাড়ির বাইরে দুইটি মোটরসাইকেল,বাগান ভর্তি ফুল ফল, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরায় মোড়া গোটা বাড়ি,আর এসব দেখে পুলিশের চোখ একেবারে ছানাবড়া। গ্রামের সরু ঢালাই রাস্তার মাঝে হঠাৎ করে উঠে দাঁড়ানো রাজপ্রাসাদের মতো সেই প্রাসাদ যেন পুরো গ্রামবাসীদেরও স্তম্ভিত করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,প্রায় ১৩ – ১৪ বছর আগে ধৃত অমিত দত্ত মহেশতলা থেকে এসে চকমানিক এলাকার ভেটকাখালিতে জমি কিনে টিনের ঘরে থাকতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই টিনের ঘরই রূপ নেয় একটি বিলাসবহুল প্রাসাদে। তার ব্যবহার মিষ্টভাষী,কারও সঙ্গে কোনো দিন ঝগড়া করেননি।নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে বেরোতেন,পরনে সাধারণ পোশাক। কেউ কখনো সন্দেহও করেন নি,তিনি এমন কিছু কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।তবে স্থানীয়দের একাংশ জানান, আমরা কেউই জানতাম না উনি কী কাজ করতেন।

চাকরি করেন না, ব্যবসাও করেন না, তাও এমন বাড়ি! বিষয়টা আমাদের কাছেও সন্দেহজনক ছিল।অভিযুক্তের স্ত্রী বলেন,কি হয়েছে জানি না, পুলিশ হঠাৎ বাড়িতে আসে। আমরা কিছু জানি না। চুরির ব্যাপারেও কিছু বলার নেই।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুরির ঘটনায় ধৃত অমিত দত্ত একাধিক জেলায় সক্রিয় ছিল কিনা, তার সম্পদের উৎস কী,কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে,এই সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।আর বিলাসবহুল চোর বাড়ি সিনেমার গল্প কে ও হার মানিয়ে দেবে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নোদাখালির ‘চোরবাড়ি’ দেখে হতবাক পুলিশ

আপডেট : ৮ জুন ২০২৫, রবিবার

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়: গ্রামের সরু রাস্তা পেরিয়ে হঠাৎ চোখের সামনে ভেসে উঠলো একটি রাজপ্রাসাদ।তবে এই বাড়ির মালিক একজন চোর,আর এমন দৃশ্য চোখে দেখেই হকচকিয়ে গেল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালির ভেটকাখালি গ্রামে।

ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার (১ জুন) রাতে হাওড়ার রাজাপুর থানার ঘোষালচকের এক বাড়িতে চুরির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে থানায় নিয়ে আসা হয়।তবে শুরু থেকেই সে নিজের নাম ও ঠিকানা ভুলভাল বলতে থাকে।

সোমবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ছয়দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ব্যক্তি নিজের নাম জানায় অমিত দত্ত এবং জানায় তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালি থানারভেটকাখালি গ্রামে।এরপর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ তাকে সঙ্গে নিয়ে যায় তার বাড়িতে। সেখানেই এক অদ্ভুত চিত্র উঠে আসে পুলিশের চোখে—যা দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যায় তদন্তকারী পুলিশ  আধিকারিকরা।তিন তলা বিশাল মার্বেল বসানো বাড়ি, একাধিক ঝাড়বাতি, প্রতিটি ঘরে ফলস সিলিং, দামি কাঠের আসবাবপত্র,বিলাসবহুল বাথরুমে বিশাল বাথটব,এমনকি শরীরচর্চার মেশিনে ভর্তি একটি প্রাইভেট জিম।

বাড়ির বাইরে দুইটি মোটরসাইকেল,বাগান ভর্তি ফুল ফল, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরায় মোড়া গোটা বাড়ি,আর এসব দেখে পুলিশের চোখ একেবারে ছানাবড়া। গ্রামের সরু ঢালাই রাস্তার মাঝে হঠাৎ করে উঠে দাঁড়ানো রাজপ্রাসাদের মতো সেই প্রাসাদ যেন পুরো গ্রামবাসীদেরও স্তম্ভিত করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,প্রায় ১৩ – ১৪ বছর আগে ধৃত অমিত দত্ত মহেশতলা থেকে এসে চকমানিক এলাকার ভেটকাখালিতে জমি কিনে টিনের ঘরে থাকতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই টিনের ঘরই রূপ নেয় একটি বিলাসবহুল প্রাসাদে। তার ব্যবহার মিষ্টভাষী,কারও সঙ্গে কোনো দিন ঝগড়া করেননি।নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে বেরোতেন,পরনে সাধারণ পোশাক। কেউ কখনো সন্দেহও করেন নি,তিনি এমন কিছু কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।তবে স্থানীয়দের একাংশ জানান, আমরা কেউই জানতাম না উনি কী কাজ করতেন।

চাকরি করেন না, ব্যবসাও করেন না, তাও এমন বাড়ি! বিষয়টা আমাদের কাছেও সন্দেহজনক ছিল।অভিযুক্তের স্ত্রী বলেন,কি হয়েছে জানি না, পুলিশ হঠাৎ বাড়িতে আসে। আমরা কিছু জানি না। চুরির ব্যাপারেও কিছু বলার নেই।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুরির ঘটনায় ধৃত অমিত দত্ত একাধিক জেলায় সক্রিয় ছিল কিনা, তার সম্পদের উৎস কী,কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে,এই সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।আর বিলাসবহুল চোর বাড়ি সিনেমার গল্প কে ও হার মানিয়ে দেবে।