এবার হাসিনাকে আক্রমণ তসলিমার!

- আপডেট : ৫ জানুয়ারী ২০২৪, শুক্রবার
- / 98
বিশেষ প্রতিবেদক: তসলিমা নাসরিন অনেকদিন পর তাঁর মুখ খুলেছেন। মাঝখানে কোমরের নিচে সন্ধিতে ভুল অপারেশনের পর (এটা অবশ্য পীড়িত তসলিমার নিজের বক্তব্য) তিনি ক্ষুব্ধ ও নীরব ছিলেন। তাঁর তখন মনোযোগ নিবদ্ধ ছিল নিজের শরীরের প্রতি। এখন তিনি যে ম্যাসাজ করাচ্ছেন তার ছবিও তিনি বিশ্বজনের জন্য শেয়ার করছেন। মনে হয়, বেশ খানিকটা উপকার হয়েছে। মাঝখানে অবশ্য দেখা গিয়েছিল তিনি শাড়ি পরে প্রত্যেকদিন নানা ধরনের পোজ দিচ্ছেন। আর ভক্তকুল সেইসব দেখে আনন্দে আত্মহারা। কেউ বলছেন, তুমি শাড়িতেই সবথেকে সুন্দর। আবার কেউ প্রতিবাদ করে লিখছেন, তুমি তসলিমা দি-র জিন্স পরা ছবি তো দেখনি, দেখলে এ কথা বলতে না।
যা বলছিলাম, আবার তসলিমা মুখ খুলেছেন। এবার তাঁর রাগ গিয়ে পড়েছে বাংলাদেশের সম্মানীয়া প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার উপর।
ব্যাপারটি হল, সম্প্রতি বাংলাদেশের এক শ্রম আদালত নোবেল জয়ী ক্ষুদ্র ঋণের পথিকৃৎ মুহাম্মদ ইউনুসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা (বাংলাদেশি) জরিমানা করেছে। ইউনুস কাউকে দায়ী করেননি। তিনি শুধু বলেছেন, যে অপরাধ আমি করিনি তার জন্য শাস্তি পেলাম। এটাই আমার দুঃখ। অবশ্য ইউনুস সাহেবকে জেলে যেতে হয়নি। তাঁকে জামিন দিয়ে আপিল করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, আমি মনেকরি না ইউনুস বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পালটে দিয়েছেন। সুদ হচ্ছে তাঁর পেশা। কিন্তু ইউনুসের সঙ্গে হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বিতার পিছনে রয়েছে বিশেষ উদ্দেশ্য এবং রাজনৈতিক স্বার্থ।
পরের এক্স হ্যান্ডেলে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, হাসিনা চান না, কোনও বাংলাদেশি পুরুষ তাঁর পিতা শেখ মুজির থেকে বেশি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। কাজেই তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের ঘোরতর বিরোধী। তাই তাঁর দেশ ইউনুসকে ছ’মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে।
এক্স হ্যান্ডেলে আর একটি মন্তব্য তিনি করেছেন। তা হল সমস্ত শত্রু ও মিত্রকে তসলিমা হ্যাপি নিউ ইয়ার জানিয়েছেন। তারপর লিখেছেন, ‘পুস্তক মেলাn যুবকদের মধ্যে তসলিমা নাসরিন এবং স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী আকর্ষণের বড় কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।’ অবশ্য এই ট্যুইট বা এক্সটি তিনি করেছেন হিন্দি ভাষায়। লিখেছেনও দেবনাগরীতে।
এখন প্রশ্ন, তসলিমা নাসরিন বহুবার বাংলাদেশের বর্তমান এবং আগামীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর পূর্বসূরী বেগম খালেদা জিয়াকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন। এদের দু’জনকেই তাঁর পছ¨ নয়। সত্যি কথা বলতে কী, ইউনুস সাহেবও তসলিমাজির পছ¨ের তালিকায় নেই। আমরা নিশ্চিত ইউনুস সাহেবের সঙ্গে বাংলাদেশ কিংবা নিউ ইয়র্কে কখনোই তসলিমার দেখা হয়নি।
কারণ, যাঁদের সঙ্গে তসলিমার সাক্ষাৎ হয়েছে তাঁদের কথা তিনি সবিস্তারে তাঁর একটি বই ‘দ্বিখণ্ডিত’ বা বাংলাদেশি ভার্সন ‘ক’-তে লিখেছেন। তাঁর সেই লেখা কয়েকজন খ্যাতনামা পুরুষের ঘর ভেঙেছে বলে গুজব রয়েছে। আর ঘর না ভাঙলেও মন যে ভেঙেছে তাতে কিন্তু সন্দেহ নেই। আর হিন্দিতে কেন ট্যুইট। কারণ, জনপ্রিয়তার তালিকায় তসলিমা নিজেকে রেখেছেন প্রথমে। আর তারপর স্থান পেয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দ। বাঙালিরা আবার একটু রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দকে পছন্দ করে। তাই তিনি তাদের চটাবেন না মনে করে ‘ট্যুইট কম্ম’ সেরেছেন!
ইউনুসের বিরুদ্ধে তসলিমা যে অভিযোগ তুলেছেন তা খানিকটা ‘ভূতের মুখে রাম নাম’। কারণ, সুদখোর হওয়ার যে অভিযোগ তুলেছেন তাঁর প্রিয় পশ্চিমা দেশগুলিতেও নিজেদের অর্থনীতিকে সুদের উপরই দাঁড় করিয়ে রেখেছে। তাতে তসলিমার আপত্তি নেই। তাঁর আপত্তি বেচারা ইউনুসের বিরুদ্ধে।
ইউনুসের সুদ আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেনের সুদে কী পার্থক্য, তা অবশ্য তসলিমা খোলসা করে বলেননি। আর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তাঁর রাগের তালিকাও তিনি এখনও প্রকাশ করেননি বলে জনসমক্ষে আসেনি। হয়তো আগামীতে তিনি তাঁর প্রিয় বাংলাদেশি অনুরাগীদের জানাবেন। এখন তিনি দিল্লির হাড় কাঁপানো শীত উপভোগ করছেন। আর এদিক-সেদিক থেকে ট্যুইট ঝাড়ছেন। কিন্তু তাঁর প্রিয় বিষয় ইসলাম ও মোল্লাদের জুত মতো ধরতে না পারলে তাঁর ট্যুইট বা ফেসবুক পোস্টে তেমন জেল্লা থাকে না। তাই বলছি, তৈরি হও, ব্রাদারানে ইসলাম! তসলিমা নাসরিন শুরু করলেন বলে।