২২ জুন ২০২৫, রবিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংরক্ষণ হবে পীর শাহ চাঁদ আউলিয়ার ৪০০ বছরের প্রাচীন মাজার – ঘোষণা পর্যটন দফতরের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 24

সফিকুল ইসলাম (দুলাল):  প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এক পীরের মাজারকে ঘিরে সম্প্রীতির নজির হয়ে আছে পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়ন ২ ব্লকের একলক্ষ্মী গ্রাম। হিন্দু -মুসলিম মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা সেই সম্প্রতির ছবি গোটা জেলার মানুষদের যুগ যুগ ধরে প্রশান্তি দিয়ে আসছে। প্রতি বছর মাঘ মাসে এই গ্রামে বসা মেলায় মিলিত হন সকল ধর্মের মানুষ। কিন্তু যাকে ঘিরে এই সম্প্রীতির ছোঁয়া সেই প্রাচীন মাজার তথা ঐতিহ্য ও পর্যটনের সেরা আকর্ষণ সাম্প্রতিককালে সংরক্ষণের অভাবে অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছিল। সেই খবর পুবের কলমে প্রকাশের পর পর্যটন দফতরের নেক নজর পড়ে এই মাজারে। মঙ্গলবার জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিকদের উদ্যোগে জেলা ট্যুরিজম অফিসার মুহাম্মদ হোসেন চৌধুরির নেতৃত্বে একটি দল মাজারটি পরিদর্শন করেন।

 

আরও পড়ুন: রামসেতু’কে হেরিটেজ মর্যাদা, কেন্দ্রকে আরও সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট

জানা যায়, বিখ্যাত বুজুর্গ আল্লাহর অলি সুফি সাধক ছিলেন শাহ চাঁদ আউলিয়া। সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তিনি জীবিত ছিলেন। আনুমানিক ১৬৬১-৬২ সাল নাগাদ তিনি একলক্ষ্মীতে আসেন। আরও জানা যায়, শাহ চাঁদ পীরের সঙ্গে মালদার কুতুব বংশের একটা যোগ ছিল। মালদার বিখ্যাত ব্যক্তি গনিখান চৌধুরির পরিবারের সঙ্গে এই শাহ চাঁদের যোগ আছে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী গনি খান নিজে কয়েকবার এসেছিলেন এই গ্রামে। এমন বহু জনশ্রুতিও প্রচলিতও আছে এলাকায়। তাঁর জনপ্রিয়তার কারণে তিনি ‘শাচান’ নামে অধিক পরিচিত হয়ে ছিলেন। বহু বছর ধরে সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই মাজারটি ভগ্নদশা অবস্থায় পড়ে আছে। হয়নি বিশেষ কোনও সংস্কার।

আরও পড়ুন: ‘ধর্ম যার যার,  উৎসব সবার’, ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে ফের বার্তা মমতার

 

আরও পড়ুন: নবাবের শহরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে কাজ করব: ইন্দ্রজিৎ

সম্প্রতি পুবের কলমের খবরের জেরে ও বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি ও ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, বর্ধমান হেরিটেজ অ্যাসোসিয়েশন, বর্ধমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব কেন্দ্র, হিউম্যান রাইটস প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দক্ষিণ দামোদরের এইসব সুপ্রাচীন স্থানগুলিকে নিয়ে সার্কিট টু্যরিজমের আবেদন জানানো হয়েছিল। এর পরেই এই মাজার সংরক্ষণের দাবি আরও জোরালো ওঠে। তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিকদের উদ্যোগে জেলা টু্যরিজম অফিসার মুহাম্মদ হোসেন চৌধুরির নেতৃত্বে একটি দল মাজারটি পরিদর্শন করেন। তারা জানান, ‘পূর্ব বর্ধমান জেলা পর্যটন দফতরের সহযোগিতায় নতুনভাবে সেজে উঠবে এই মাজার। দ্রুত প্রকল্প নির্মাণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’

 

মাজার কমিটির অন্যতম সদস্য বাদশা আলম ও প্রদীপ ঘোষ জানান– ‘বিশাল এলাকাজুড়ে মসজিদ, মাজার, কবরস্থান। এর সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল। রায়না ২ এর প্রাক্তন বিডিও দীপ্যমান মজুমদার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এর সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছিলেন। তাঁর বদলির পর এই কাজে আর অগ্রগতি হয়নি। এবার সংরক্ষণ হবে শুনে ভালো লাগছে।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সংরক্ষণ হবে পীর শাহ চাঁদ আউলিয়ার ৪০০ বছরের প্রাচীন মাজার – ঘোষণা পর্যটন দফতরের

আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, বৃহস্পতিবার

সফিকুল ইসলাম (দুলাল):  প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এক পীরের মাজারকে ঘিরে সম্প্রীতির নজির হয়ে আছে পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়ন ২ ব্লকের একলক্ষ্মী গ্রাম। হিন্দু -মুসলিম মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা সেই সম্প্রতির ছবি গোটা জেলার মানুষদের যুগ যুগ ধরে প্রশান্তি দিয়ে আসছে। প্রতি বছর মাঘ মাসে এই গ্রামে বসা মেলায় মিলিত হন সকল ধর্মের মানুষ। কিন্তু যাকে ঘিরে এই সম্প্রীতির ছোঁয়া সেই প্রাচীন মাজার তথা ঐতিহ্য ও পর্যটনের সেরা আকর্ষণ সাম্প্রতিককালে সংরক্ষণের অভাবে অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছিল। সেই খবর পুবের কলমে প্রকাশের পর পর্যটন দফতরের নেক নজর পড়ে এই মাজারে। মঙ্গলবার জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিকদের উদ্যোগে জেলা ট্যুরিজম অফিসার মুহাম্মদ হোসেন চৌধুরির নেতৃত্বে একটি দল মাজারটি পরিদর্শন করেন।

 

আরও পড়ুন: রামসেতু’কে হেরিটেজ মর্যাদা, কেন্দ্রকে আরও সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট

জানা যায়, বিখ্যাত বুজুর্গ আল্লাহর অলি সুফি সাধক ছিলেন শাহ চাঁদ আউলিয়া। সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তিনি জীবিত ছিলেন। আনুমানিক ১৬৬১-৬২ সাল নাগাদ তিনি একলক্ষ্মীতে আসেন। আরও জানা যায়, শাহ চাঁদ পীরের সঙ্গে মালদার কুতুব বংশের একটা যোগ ছিল। মালদার বিখ্যাত ব্যক্তি গনিখান চৌধুরির পরিবারের সঙ্গে এই শাহ চাঁদের যোগ আছে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী গনি খান নিজে কয়েকবার এসেছিলেন এই গ্রামে। এমন বহু জনশ্রুতিও প্রচলিতও আছে এলাকায়। তাঁর জনপ্রিয়তার কারণে তিনি ‘শাচান’ নামে অধিক পরিচিত হয়ে ছিলেন। বহু বছর ধরে সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই মাজারটি ভগ্নদশা অবস্থায় পড়ে আছে। হয়নি বিশেষ কোনও সংস্কার।

আরও পড়ুন: ‘ধর্ম যার যার,  উৎসব সবার’, ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে ফের বার্তা মমতার

 

আরও পড়ুন: নবাবের শহরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে কাজ করব: ইন্দ্রজিৎ

সম্প্রতি পুবের কলমের খবরের জেরে ও বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি ও ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, বর্ধমান হেরিটেজ অ্যাসোসিয়েশন, বর্ধমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব কেন্দ্র, হিউম্যান রাইটস প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দক্ষিণ দামোদরের এইসব সুপ্রাচীন স্থানগুলিকে নিয়ে সার্কিট টু্যরিজমের আবেদন জানানো হয়েছিল। এর পরেই এই মাজার সংরক্ষণের দাবি আরও জোরালো ওঠে। তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিকদের উদ্যোগে জেলা টু্যরিজম অফিসার মুহাম্মদ হোসেন চৌধুরির নেতৃত্বে একটি দল মাজারটি পরিদর্শন করেন। তারা জানান, ‘পূর্ব বর্ধমান জেলা পর্যটন দফতরের সহযোগিতায় নতুনভাবে সেজে উঠবে এই মাজার। দ্রুত প্রকল্প নির্মাণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’

 

মাজার কমিটির অন্যতম সদস্য বাদশা আলম ও প্রদীপ ঘোষ জানান– ‘বিশাল এলাকাজুড়ে মসজিদ, মাজার, কবরস্থান। এর সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল। রায়না ২ এর প্রাক্তন বিডিও দীপ্যমান মজুমদার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এর সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছিলেন। তাঁর বদলির পর এই কাজে আর অগ্রগতি হয়নি। এবার সংরক্ষণ হবে শুনে ভালো লাগছে।’