০১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইবাদাতের মৌসুম এই মাস

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার
  • / 25

মাওলানা আবদুল মান্নান: ইবাদাতের মৌসুম এই রমযান মাস।  মানবজাতির ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে এই মাসের প্রভাব  ব্যাপক। তাই প্রত্যেক মুসলমানের এই মাসটিকে সার্থকভাবে,  যথাযথ মর্যাদায় অতিবাহিত করা একান্ত ঈমানী কর্তব্য।  সমাজের সব শ্রেণির মানুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে  পবিত্র রমযান মাসের পবিত্রতা বজায় রাখা এবং এই মাসটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করা সম্ভব।

জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্তের মূল্যায়ন জরুরি। তাই মূল্যায়ন  করার সময়ে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে, তা হল-মানুষ মূলত দুর্বল চিত্তের অধকারী ও কর্মবিমুখ হয়। মানুষই ভুল  করে থাকে। তাই তাকওয়ার অনুশীলন করার সময়ে নিজের কাছে যে হিসাব নেওয়া হয়, তা যেন এত কঠোর হয়ে না ওঠে যে, তার দ্বারা হৃদয় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

 নবী করিম সা.  বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে তাওবা ও  ইস্তেগফারের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে রাখে, তাকে আল্লাহ্পাক  সমস্ত রকমের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন এবং এমনভাবে তার নিকটে তার রিয্ক পৌঁছে দেন, যা সে কখনও কল্পনা  করেনি।’ (মুসলিম শরীফ)

তাক্ওয়া অনুশীলনের অন্যতম উপায় হল অধিক মাত্রায়  ইস্তেগফার করা (ক্ষমা প্রার্থনা করা)। ইস্তেগফার হল মানুষের  অভাব অনটন থেকে মুক্তি পাওয়ার চিকিৎসা। আর দুঃখ কষ্ট,  হতাশারও চিকিৎসা হল ইস্তেগফার। রমযান মাসে রোযাদারের  অন্তরে তাক্ওয়া এবং ইস্তেগফারের অনুশীলন প্রবলভাবে গতি সঞ্চার করে।

তাক্ওয়া শব্দের অর্থ হল আল্লাহ্-ভীতি, দ্বীনদারী, ধার্মিকতা প্রভৃতি। আর মুত্তাকী বলা হয়, আল্লাহতে সমর্পিত ব্যক্তিকে। যার  কাছে আল্লাহ্ ব্যতীত কোনও স্বতন্ত্র চিন্তা বা স্বার্থের অবকাশ থাকে না।

মাহে রমযানে রোযাদার মানুষ যখন ওযু করেন, তখন তিনি  কুল্লি করার সময়ে অতি মাত্রায় সতর্ক থাকেন, যেন এক বিন্দু  পরিমাণ পানি কণ্ঠনালীতে প্রবেশ করতে না পারে। মানুষ যেন সর্বক্ষণ মনে করে যে, আমাকে আল্লাহ্ দেখছেন। আর পরকালে তাঁর সম্মুখে আমাকে উপস্থিত করা হবে। সেদিন তিনি আমার হিসাব গ্রহণ করবেন। তাই মানুষ নিজেই নিজের কৃতকর্মের  হিসাব নিলে, আখেরাতে হিসাব দেওয়া তার পক্ষে সহজ হবে।  রমযানের এই ইবাদাতের মাসে আল্লাহ্ ভীতির অনুশীলনের মাধ্যমে মুত্তাকী তৈরি হওয়ার অনুপম সুযোগ আশাকরি হাতছাড়া করবেন না মুসলমানরা।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইবাদাতের মৌসুম এই মাস

আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার

মাওলানা আবদুল মান্নান: ইবাদাতের মৌসুম এই রমযান মাস।  মানবজাতির ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে এই মাসের প্রভাব  ব্যাপক। তাই প্রত্যেক মুসলমানের এই মাসটিকে সার্থকভাবে,  যথাযথ মর্যাদায় অতিবাহিত করা একান্ত ঈমানী কর্তব্য।  সমাজের সব শ্রেণির মানুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে  পবিত্র রমযান মাসের পবিত্রতা বজায় রাখা এবং এই মাসটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করা সম্ভব।

জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্তের মূল্যায়ন জরুরি। তাই মূল্যায়ন  করার সময়ে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে, তা হল-মানুষ মূলত দুর্বল চিত্তের অধকারী ও কর্মবিমুখ হয়। মানুষই ভুল  করে থাকে। তাই তাকওয়ার অনুশীলন করার সময়ে নিজের কাছে যে হিসাব নেওয়া হয়, তা যেন এত কঠোর হয়ে না ওঠে যে, তার দ্বারা হৃদয় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

 নবী করিম সা.  বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে তাওবা ও  ইস্তেগফারের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে রাখে, তাকে আল্লাহ্পাক  সমস্ত রকমের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন এবং এমনভাবে তার নিকটে তার রিয্ক পৌঁছে দেন, যা সে কখনও কল্পনা  করেনি।’ (মুসলিম শরীফ)

তাক্ওয়া অনুশীলনের অন্যতম উপায় হল অধিক মাত্রায়  ইস্তেগফার করা (ক্ষমা প্রার্থনা করা)। ইস্তেগফার হল মানুষের  অভাব অনটন থেকে মুক্তি পাওয়ার চিকিৎসা। আর দুঃখ কষ্ট,  হতাশারও চিকিৎসা হল ইস্তেগফার। রমযান মাসে রোযাদারের  অন্তরে তাক্ওয়া এবং ইস্তেগফারের অনুশীলন প্রবলভাবে গতি সঞ্চার করে।

তাক্ওয়া শব্দের অর্থ হল আল্লাহ্-ভীতি, দ্বীনদারী, ধার্মিকতা প্রভৃতি। আর মুত্তাকী বলা হয়, আল্লাহতে সমর্পিত ব্যক্তিকে। যার  কাছে আল্লাহ্ ব্যতীত কোনও স্বতন্ত্র চিন্তা বা স্বার্থের অবকাশ থাকে না।

মাহে রমযানে রোযাদার মানুষ যখন ওযু করেন, তখন তিনি  কুল্লি করার সময়ে অতি মাত্রায় সতর্ক থাকেন, যেন এক বিন্দু  পরিমাণ পানি কণ্ঠনালীতে প্রবেশ করতে না পারে। মানুষ যেন সর্বক্ষণ মনে করে যে, আমাকে আল্লাহ্ দেখছেন। আর পরকালে তাঁর সম্মুখে আমাকে উপস্থিত করা হবে। সেদিন তিনি আমার হিসাব গ্রহণ করবেন। তাই মানুষ নিজেই নিজের কৃতকর্মের  হিসাব নিলে, আখেরাতে হিসাব দেওয়া তার পক্ষে সহজ হবে।  রমযানের এই ইবাদাতের মাসে আল্লাহ্ ভীতির অনুশীলনের মাধ্যমে মুত্তাকী তৈরি হওয়ার অনুপম সুযোগ আশাকরি হাতছাড়া করবেন না মুসলমানরা।