অভিযোগ উঠতেই স্মার্ট মিটার বসানো স্থগিত ঘোষণা বিদ্যুৎ দফতরের
- আপডেট : ৯ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 27
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ বিদ্যুৎ চুরি ও মিটার রিডিং নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাড়ি-বাড়ি স্মার্ট মিটার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। কিন্তু মেদিনীপুর বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই মিটারে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। য
তটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে তার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য অর্থ নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বহু গ্রাহক। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপাতত স্মার্ট মিটার বসার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখল রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। সোমবার (৯ জুন) এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে আপাতত গেরস্থের বাড়িতে অর্থাৎ সাধারণ গ্রাহকদের বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো হবে না বলে জানানো হয়েছে।
২০২১ সালের ৯ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘রিভ্যাম রিডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কিম’ এর অধীনেই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। লক্ষ্য ছিল বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, বিদ্যুৎ চুরির প্রতিরোধ, এবং গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
স্মার্ট মিটার ‘প্রিপেইড মোডে’ কাজ করে। অর্থাৎ গ্রাহককে আগে থেকে রিচার্জ করতে হবে, তারপর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন পাঁচশো টাকার রিচার্জ করলে, গ্রাহক পাঁচশো টাকারই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন। ডিজিট্যাল মিটারে থাকে রিডিং পদ্ধতি। অর্থাৎ প্রতি মাসে অথবা তিন মাস অন্তর বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা এসে রিডিং নিয়ে যান।
কিন্তু স্মার্ট মিটারের ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না। স্মার্ট মিটারে তথ্য সরাসরি যাবে সার্ভারে। বিলিং পদ্ধতিতেও ফারাক রয়েছে। ডিজিট্যাল মিটারে পোস্টপেইড বিল আসে। অর্থাৎ গ্রাহক যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করবেন, তার ভিত্তিতে বিল আসবে। কিন্তু স্মার্ট মিটারে প্রিপেইড সিস্টেমে বিল আসবে।
অর্থাৎ আগে গ্রাহককে রিচার্জ করতে হবে, তার ভিত্তিতে তিনি বিদ্যুৎ খরচ করতে পারবেন। ডিজিটাল মিটারের ক্ষেত্রে, কোনও গ্রাহক যদি বিদ্যুৎ বিল মেটাতে অক্ষম হন, তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের পর বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা বাড়ি গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। কিন্তু স্মার্ট মিটারের ক্ষেত্রে রিচার্জ শেষ হয়ে গেলেই আপনাআপনি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা প্রথম ধাপে সরকারি অফিস, পুরসভা, পঞ্চায়েত, শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগগুলিতে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু করেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ লক্ষ স্মার্ট মিটার বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার আরডিএসএস প্রকল্পের আওতায় ১১.৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের অংশ ৬০% এবং রাজ্য সরকারের অংশ ৪০%।
যদিও গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রাহকরা অভিযোগ জানাচ্ছিলেন, স্মার্ট মিটারে কারচুপি চলছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খসাতে হচ্ছে। অভিযোগের বহর বাড়তেই নড়েচড়ে বসে বিদ্যুৎ দফতর।