২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফতাবকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লির জঙ্গল থেকে উদ্ধার শ্রদ্ধার দেহের ১৩টি অংশ, নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২২, বুধবার
  • / 30

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  আফতাব-শ্রদ্ধা কাণ্ডে জোরদার তদন্তে দিল্লির পুলিশ। দিল্লির মেহরাউলি থানার পুলিশ গতকালই আফতাবকে নিয়ে জঙ্গলে যায়, সেখানে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে। আফতাবই পুলিশকে দেখিয়ে দিয়েছে, কোথায় সে ফেলেছিল শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি। দেহের ১৩টি অংশ  উদ্ধার হয়েছে।

এই কাণ্ডের তদন্তে ডেকে পাঠানো হয়েছে শ্রদ্ধার বাবা ব্যবসায়ী বিকাশ মদন ওয়াকারকে। তার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া ডিএনএ-এর হাড়গোড় মিলিয়ে দেখা হবে। শনিবার আফতাবের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখান থেকে সাত-আটটি হাড় ও রক্তের দাগ মিলেছে। এই সমস্ত প্রমাণগুলি তদন্তকারী অফিসারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: শ্রদ্ধা মামলায় জামিনের আবেদন প্রত্যাহার আফতাবের

পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, লিভ ইন সম্পর্কে শ্রদ্ধার সঙ্গে থাকতেন আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। প্রথমে মুম্বাইতে থাকলেও পরে শ্রদ্ধার বাড়ির আপত্তিতে তারা চলে আসে দিল্লির ছত্তরপুরে। সেখানেই দুজনে থাকতে শুরু করে। শ্রদ্ধা বার বার বিয়ের কথা বলতেই আফতাব তাকে খুন করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে। শ্রদ্ধার দেহের ৩৫টি টুকরো করে দিল্লির আশেপাশের জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসত।

আরও পড়ুন: শ্রদ্ধা খুনে মূল অভিযুক্ত আফতাবের উপর প্রাণঘাতী হামলার অভিযোগ হিন্দু সেনার বিরুদ্ধে, আটক ২

শ্রদ্ধাকে খুনের পর প্রায় ১৮ দিন ধরে এই কাজই করত সে।  শ্রদ্ধা ওয়াকারের নির্মম  পরিণতিতে স্তম্ভিত গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই দিল্লির ১৮টি জায়গা থেকে শ্রদ্ধার  দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছিল। এবার শ্রদ্ধা খুনে অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে  জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করতেই পুলিশ খুঁজে পেল দেহের ১৩টি অংশাবশেষ। তবে এই দেহাবশেষ শ্রদ্ধার কিনা, তা এখনও নিশ্চিত জানায়নি পুলিশ। নিশ্চিত হতে করা হবে ডিএনএ টেস্ট।

আরও পড়ুন: শরীর অসুস্থ, পিছিয়ে গেল আফতাবের পলিগ্রাফ টেস্ট

মঙ্গলবারই অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে নিয়ে দক্ষিণ দিল্লির ছত্তরপুরের জঙ্গলে যায় দিল্লি পুলিশ। সেখানে আফতাব দেখায় জঙ্গলের কোন কোন অংশে শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি সে ফেলেছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর ১৩টি টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। আফতাবের বাড়ি থেকেও সাত-আটটি হাড়ের টুকরো ও রক্তের দাগ মিলেছে। অন্যদিকে শ্রদ্ধার দেহ চিহ্নিত করতে তাঁর মা-বাবার রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য।

মঙ্গলবার ছত্তরপুরের জঙ্গলে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। তাদের সঙ্গে ছিল অভিযুক্ত আফতাব, জঙ্গলের কোথায় দেহের টুকরো ফেলা হয়েছিল, তা নিজেই দেখায় আফতাব। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির আরও বেশ কিছু জায়গায় আফতাবকে নিয়ে যাওয়া হবে শ্রদ্ধার দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্য। অন্যদিকে, অনলাইন ডেটিং অ্যাপ বাম্বেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এই অ্যাপের মাধ্যমেই পরিচয় হয়েছিল শ্রদ্ধা ও আফতাবের। তার পরেই দুজনের মধ্যে প্রণয়ের সমর্ক শুরু হয়।

দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘ইতিমধ্যেই খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে কী কারণে ও কীভাবে এই ঘৃণ্য অপরাধ করা হল, তা বোঝার জন্য। কীভাবে  মধ্যরাতে আফতাব জঙ্গলে দেহগুলি ফেলে আসত, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

অনলাইন ডেটিং অ্যাপে অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস পেলে,  তাঁর প্রোফাইলের বিশ্লেষণ এবং কতজন মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ ও চ্যাট করেছিল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আফতাবকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লির জঙ্গল থেকে উদ্ধার শ্রদ্ধার দেহের ১৩টি অংশ, নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২২, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  আফতাব-শ্রদ্ধা কাণ্ডে জোরদার তদন্তে দিল্লির পুলিশ। দিল্লির মেহরাউলি থানার পুলিশ গতকালই আফতাবকে নিয়ে জঙ্গলে যায়, সেখানে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে। আফতাবই পুলিশকে দেখিয়ে দিয়েছে, কোথায় সে ফেলেছিল শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি। দেহের ১৩টি অংশ  উদ্ধার হয়েছে।

এই কাণ্ডের তদন্তে ডেকে পাঠানো হয়েছে শ্রদ্ধার বাবা ব্যবসায়ী বিকাশ মদন ওয়াকারকে। তার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া ডিএনএ-এর হাড়গোড় মিলিয়ে দেখা হবে। শনিবার আফতাবের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখান থেকে সাত-আটটি হাড় ও রক্তের দাগ মিলেছে। এই সমস্ত প্রমাণগুলি তদন্তকারী অফিসারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: শ্রদ্ধা মামলায় জামিনের আবেদন প্রত্যাহার আফতাবের

পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, লিভ ইন সম্পর্কে শ্রদ্ধার সঙ্গে থাকতেন আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। প্রথমে মুম্বাইতে থাকলেও পরে শ্রদ্ধার বাড়ির আপত্তিতে তারা চলে আসে দিল্লির ছত্তরপুরে। সেখানেই দুজনে থাকতে শুরু করে। শ্রদ্ধা বার বার বিয়ের কথা বলতেই আফতাব তাকে খুন করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে। শ্রদ্ধার দেহের ৩৫টি টুকরো করে দিল্লির আশেপাশের জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসত।

আরও পড়ুন: শ্রদ্ধা খুনে মূল অভিযুক্ত আফতাবের উপর প্রাণঘাতী হামলার অভিযোগ হিন্দু সেনার বিরুদ্ধে, আটক ২

শ্রদ্ধাকে খুনের পর প্রায় ১৮ দিন ধরে এই কাজই করত সে।  শ্রদ্ধা ওয়াকারের নির্মম  পরিণতিতে স্তম্ভিত গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই দিল্লির ১৮টি জায়গা থেকে শ্রদ্ধার  দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছিল। এবার শ্রদ্ধা খুনে অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে  জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করতেই পুলিশ খুঁজে পেল দেহের ১৩টি অংশাবশেষ। তবে এই দেহাবশেষ শ্রদ্ধার কিনা, তা এখনও নিশ্চিত জানায়নি পুলিশ। নিশ্চিত হতে করা হবে ডিএনএ টেস্ট।

আরও পড়ুন: শরীর অসুস্থ, পিছিয়ে গেল আফতাবের পলিগ্রাফ টেস্ট

মঙ্গলবারই অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে নিয়ে দক্ষিণ দিল্লির ছত্তরপুরের জঙ্গলে যায় দিল্লি পুলিশ। সেখানে আফতাব দেখায় জঙ্গলের কোন কোন অংশে শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি সে ফেলেছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর ১৩টি টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। আফতাবের বাড়ি থেকেও সাত-আটটি হাড়ের টুকরো ও রক্তের দাগ মিলেছে। অন্যদিকে শ্রদ্ধার দেহ চিহ্নিত করতে তাঁর মা-বাবার রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য।

মঙ্গলবার ছত্তরপুরের জঙ্গলে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। তাদের সঙ্গে ছিল অভিযুক্ত আফতাব, জঙ্গলের কোথায় দেহের টুকরো ফেলা হয়েছিল, তা নিজেই দেখায় আফতাব। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির আরও বেশ কিছু জায়গায় আফতাবকে নিয়ে যাওয়া হবে শ্রদ্ধার দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্য। অন্যদিকে, অনলাইন ডেটিং অ্যাপ বাম্বেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এই অ্যাপের মাধ্যমেই পরিচয় হয়েছিল শ্রদ্ধা ও আফতাবের। তার পরেই দুজনের মধ্যে প্রণয়ের সমর্ক শুরু হয়।

দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘ইতিমধ্যেই খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে কী কারণে ও কীভাবে এই ঘৃণ্য অপরাধ করা হল, তা বোঝার জন্য। কীভাবে  মধ্যরাতে আফতাব জঙ্গলে দেহগুলি ফেলে আসত, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

অনলাইন ডেটিং অ্যাপে অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস পেলে,  তাঁর প্রোফাইলের বিশ্লেষণ এবং কতজন মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ ও চ্যাট করেছিল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।