‘তুমি এসসি, নীচে দাঁড়িয়ে থাকো’, অন্ধ্রে দলিত সরপঞ্চকে অপমান করলেন পদ্ম বিধায়ক

- আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 37
অমরাবতী: সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশের আদোনির একটি ভাইরাল ভিডিয়োকে ঘিরে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অন্ধ্রের বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি এক দলিত সরপঞ্চকে তাঁর জাত জানার পর মঞ্চে উঠতে বাধা দিয়ে অপমান করছেন। ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দাবি উঠেছে, পদ্ম বিধায়কের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার।
অনেকেই বলেছেন, ‘এই ঘটনা অস্পৃশ্যতার প্রকাশ্য নিদর্শন।’ জাতপাতের ভিত্তিতে এই বৈষম্য প্রকাশ্য আসার পর এলাকার রাজনৈতিক নেতারা নীরব। তবে তাঁদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়রা।
সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে ১৬ জুন কুর্নুলের আদোনি বিধানসভা এলাকায়। ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, আদোনির বিধায়ক পার্থসারথিকে কুর্নুলে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে একটি জনসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বিজেপির কাজের প্রশংসা করেন। স্থানীয় সরপঞ্চকে ডেকে পদ্ম বিধায়ক বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সরপঞ্চদের অর্থ সাহায্য করছে। তারপরই বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি এক দলিত সরপঞ্চকে অপমান করছেন। সরপঞ্চ যখন বিধায়কের সঙ্গে মঞ্চে উঠতে যাচ্ছিলেন, সেই সময় পদ্ম বিধায়ক তাঁর পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। ওই ব্যক্তি তফসিলি জাতিভুক্ত জানতে পেরে বিধায়ক বলেন, “তুমি এসসি, নীচে দাঁড়িয়ে থাকো।” ওই ব্যক্তিকে মঞ্চে উঠতে না দিয়ে তাঁকে নীচে দাঁড়িয়ে থাকার নিদান দেন পার্থসারথি। ঘটনার ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, ঘটনাটি বর্ণভিত্তিক বৈষম্যের নির্লজ্জ প্রদর্শন।
পদ্ম বিধায়ক সহ মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় মামলা রুজু করার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। বিজেপি নেতার এই আদর্শকে দলিতদের প্রতি সহজাতভাবে পক্ষপাতদুষ্ট বলেও সমালোচনা করেছে নেটিজেনরা। এক এক্স ব্যবহারকারী লেখেন, “এটা খুবই বোকামি। সেখানকার বিধায়কের উচিত ছিল অন্য মহিলাকে সাবধান করে দিয়ে ওই লোকটিকে মঞ্চে ডেকে আনা। এখন এটা সত্যিকার অর্থে এসসি এসটি নির্যাতনের ঘটনা। রাজ্য সরকার কি টিডিপি এবং বিজেপি নেতাদের এই বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে?”
এক সাংবাদিক ভিনু কুমার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “একজন নির্বাচিত দলিত সরপঞ্চকে বিধায়ক পার্থসারথি প্রকাশ্যে অপমান করেছিলেন – তাঁর কাজের জন্য নয়, তাঁর জাতের জন্য। এটাই মনুর স্বপ্নের ভারত। এটাই সেই ‘গৌরবময়’ ভারত, যার স্বপ্ন দেখেছিলেন মনু। ২০২৫ সালেও জাতপাত এখনও রয়ে গেছে। এগুলো লজ্জাজনক। আমরা স্মার্ট সিটি এবং শক্তিশালী রকেট তৈরি করতে পারি, কিন্তু আমরা যদি প্রত্যেক ভারতীয়কে সমান মর্যাদার সাথে আচরণ করতে না পারি তবে আমরা জাতি হিসাবে ব্যর্থ হব।”