আজ, ৩ জুন বিশ্ব সাইকেল দিব
দু’ চাকার দুনিয়া….

- আপডেট : ২ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 44
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ঋতুপর্ণ ঘোষের বোরোলিনের বিখ্যাত ক্যাচ লাইন ‘বঙ্গ জীবনের অঙ্গ’ ধার করে বলাই যায় তা হল সাইকেল। বাজার থেকে স্কুল-কলেজ-অফিস সব কিছুর একমাত্র ভরসা সইকেল। রোমান্টিক বাঙালির প্রেমের বিশ্বস্ত সঙ্গী এই সাইকেল। সাইকেল চড়ে প্রেম প্রতিটি বাঙালিকে নস্টালজিক করে তোলে। পকেট গড়ের মাঠ হলেও কুছ পরবা নেই। সাইকেল আছে তাতেই কেল্লাফতে।
১৮১৯ খ্রিস্টাব্দের ‘সমাচার দর্পণ’ পত্রিকায় প্রথম নতুন গাড়ির খবর দেয়। ঘোড়া বা অন্য কোনও বাহন এই গাড়ি চালাতে লাগে না বলে জানানো হয়। আরও পঞ্চাশ বছর পরে ১৮৬৯ সালে ‘এডুকেশন গেজেট’-এ ভেলোসিপেড যন্ত্রের কথা প্রকাশিত হয়। ফ্রান্সে ততদিনে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ফ্রান্সের পুরুষরা চালায় দুই চাকার ভেলোসিপেড আর মহিলারা তিন চাকার। ১৮৭০ সালে ‘সুলভ সমাচার’ পত্রিকায় ছাপা হয় দুই এবং তিন চাকার গাড়ির কথা। ১৮৮৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সাইকেল চড়ে কলকাতায় আসেন টমাস স্টিভেন্স। ১৮৭০ সালে ‘সুলভ সমাচার’ পত্রিকায় লেখা হয়, “সম্প্রতি সাঁতরাগাছিতে একজন কর্মকার বুদ্ধি খাটাইয়া একখানি সেই রকম গাড়ি প্রস্তুত করিয়াছেন। তাহাতে অগ্রে একজন এবং পশ্চাতে দুইজন পা দিয়া চাকা ঘুরাইয়া থাকে এবং গাড়িখানি আপনাআপনি চলিয়া যায়।” প্রসন্নকুমার ঘোষের তৈরি তিনচাকার সেই সাইকেলের নাম ছিল ট্যান্ডেম।একই সময় কলকাতায় জনপ্রিয় ছিল ‘পেনি-ফার্দিং’ সাইকেল। প্যাডেল দেওয়া এই সাইকেলের সামনের চাকা ছিল অতিকায় আর পিছনের চাকা ছোট। ইন্দিরা দেবীর লেখায় কলকাতার রাস্তায় ‘পেনি ফার্দিং’-এর বর্ণনা পাওয়া যায়।

শোনা যায় রবীন্দ্রনাথের বড়দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ সাইকেলে চড়ে চৌরঙ্গী অঞ্চলে হাওয়া খেতে যেতেন। ১৮৯৭ সালে কলকাতাতেও তৈরি হয় সাইক্লিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। ১৯৩০ সালে বাঙালি উদ্যোগপতি হেমেন্দ্রমোহন বসু তৈরি করেছিলেন ‘বোস অ্যান্ড কোং সাইকেলস’। হেমেন্দ্রমোহনের কাছেই সাইকেল শেখেন জগদীশচন্দ্র বসু এবং তাঁর স্ত্রী অবলা বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, নীলরতন সরকার, নির্মলা দেবী। জগদীশচন্দ্রের কোথায় আমাদের ‘পুষ্পক রথ’।
বর্তমানে ট্রাফিকের ভিড়ে সাইকেল কলকাতার রাজপথে ব্রাত্য।মফস্বলে সাইকেল আজও জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে।তবে মাঝে মধ্যেই কলকাতার রাস্তায় বিচ্ছিন্নভাবে সাইকেলের ইতি-উতি দেখা যায়। পুবের কলমের চিত্রগ্রাহক সন্দীপ সাহার ক্যামেরাবন্দি এই ছবিটিতে ‘পেনি-ফার্দিং’ চড়ে ধর্মতলায় ঘুরতে দেখা গেছে এই সওয়ারিকে। ট্রাম লাইনের উপর দিয়ে নিশ্চিন্তে সাইকেলে করে যাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। সাইকেলে ঝোলানে রয়েছে ব্যাগ। সাইকেল শুধু সঙ্গী নয়, বিশ্বউষ্ণায়নে পরিবেশ বান্ধবের ভূমিকায় সাইকেলের জুড়িমেলা ভার।