১৮ জুন ২০২৫, বুধবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, আন্দামান-নিকোবরে ২১টি দ্বীপের নামকরণ প্রধানমন্ত্রীর

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৩ জানুয়ারী ২০২৩, সোমবার
  • / 51

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নেতাজির ১২৬তম জন্মবার্ষিকীতে দেশজুড়ে সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পালিত হচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। আজ এই বিশেষ দিনে নেতাজিকে স্মরণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী একটি ট্যুইট করে লেখেন, আজ পরাক্রম দিবস উপলক্ষে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ভারতের ইতিহাসে তার অনবদ্য অবদান আজ আমরা স্মরণ করছি। ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিরোধের জন্য তাঁকে মনে রাখা হবে। তাঁর চিন্তাধারার দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত আমরা। ভারতের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি আমরা।’

২০২১ সাল থেকে নেতাজির জন্মদিবসকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকরা। তারপর থেকে এই দিনটি পরাক্রম দিবস হিসেবে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে। ভারতের ইতিহাসে এটি তৃতীয় পরাক্রম দিবস।

আরও পড়ুন: মোদির ধ্যানের জেরে তিন দিন রুটিতে কোপ ৫০০০ মৎসজীবীর

এ দিন পরাক্রম দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপে নির্মিত নেতাজিকে উৎসর্গ করা জাতীয় স্মৃতিসৌধের মডেল উন্মোচন করেছেন। শুধু তাই নয় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ২১ টি বৃহত্তম দ্বীপের নামকরণ করেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: ‘অমৃত মাটিকা’ তৈরি করতে নেতাজীর বাড়ি থেকে মাটি সংগ্রহ

এর আগেও নেতাজির স্মরণে আন্দামানের দু’টি দ্বীপের নাম রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ২০১৮ সালে এই দ্বীপ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর রস দ্বীপপুঞ্জের নাম পরিবর্তন করে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপ রাখা হয়েছিল। নীল দ্বীপ এবং হ্যাভলক দ্বীপের নামকরণ করা হয়েছে শহিদ দ্বীপ এবং স্বরাজ দ্বীপ নামে’।

আরও পড়ুন: নেতাজি থাকলে ভারত ভাগ হত না, ধার্মিক হয়েও ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ: অজিত দোভাল

 

২১ জন পরম বীর চক্র পুরস্কারপ্রাপ্ত, যাঁদের নামে আন্দামান ও নিকোবরের দ্বীপগুলির নামকরণ করা হয়েছে তাঁরা হলেন: মেজর সোমনাথ শর্মা; সুবেদার এবং মাননীয় ক্যাপ্টেন (তখন ল্যান্স নায়েক) করম সিং, এমএম; দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট রমা রাঘোবা রানে; নায়ক যদুনাথ সিং; কোম্পানি হাবিলদার মেজর পিরু সিং; ক্যাপ্টেন জিএস সালারিয়া; লেফটেন্যান্ট কর্নেল (তৎকালীন মেজর) ধন সিং থাপা; সুবেদার জোগিন্দর সিং; মেজর শয়তান সিং; সিকিউএমএইচ। আবদুল হামিদ; লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরদেশির বুর্জরজি তারাপুর; ল্যান্স নায়েক আলবার্ট এক্কা; মেজর হোশিয়ার সিং; দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট অরুণ ক্ষেত্রপাল; ফ্লাইং অফিসার নির্মলজিৎ সিং সেখন; মেজর রামস্বামী পরমেশ্বরন; নায়েব সুবেদার বানা সিং; ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা; লেফটেন্যান্ট মনোজ কুমার পান্ডে; সুবেদার মেজর (তখন রাইফেলম্যান) সঞ্জয় কুমার; এবং সুবেদার মেজর অবসরপ্রাপ্ত (মাননীয় ক্যাপ্টেন) গ্রেনেডিয়ার যোগেন্দ্র সিং যাদব।

মোদি বলেন, আজও কর্তব্য পথে নেতাজির বক্তব্য কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমি মনে করি এই কাজ দেশের হিতের জন্য অনেক আগেই হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। যখন আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের ৭৫ বছর পূরণ হয়েছে সমগ্র দেশ পতাকা উড়িয়ে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে। দর্শকের তরফে নেতাজির সঙ্গে জড়িত সমস্ত  ফাইল প্রকাশ্যে আনার দাবি জানানো হচ্ছিল।এই কাজও দেশ সম্পূর্ণ শ্রদ্ধার সঙ্গে আগে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশে গত ৮ থেকে ৯ বছরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে জড়িত এমন হাজার  রকম কাজ রয়েছে যা স্বাধীনতার পরপরই হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেই সময়  হয়নি। দেশের একটি অংশে স্বাধীন ভারতের প্রথম সরকার ১৯৪৩-তে তৈরি হয়েছিল। তা এখন গোটা দেশ বেশি গৌরবের সঙ্গে স্বীকার করছে।

আজ একবিংশ শতাব্দী দেখছে, স্বাধীনতার পর যে নেতাজি সুভাষকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, দেশ সেই নেতাজিকে প্রতি মুহূর্তে স্মরণ করছে। আজ রস আইল্যান্ড নেতাজি সুভাষ দ্বীপ নামে পরিচিত। হ্যাভলক ও নীল আইল্যান্ড স্বরাজ ও শহিদ দ্বীপ হিসেবে নামকরণ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে উল্লেখযোগ্য হল, স্বরাজ ও শহিদ নাম খোদ নেতাজির দেওয়া। স্বাধীনতার পর এই নামকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আজ়াদ হিন্দ ফৌজের যখন ৭৫ বছর পূরণ হয়েছে তখন আমাদের সরকার এই নামগুলি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।

আন্দামানের এই ভূমিতেই দেশে প্রথমবার তেরঙ্গা উত্তোলন করা হয়েছিল। যেখানে প্রথমবারের মতো স্বাধীন ভারতের সরকার গঠিত হয়েছিল। আজ নেতাজি সুভাষ বসুর জন্মবার্ষিকী। দেশ এই দিনটিকে পরক্রম দিবস হিসেবে পালন করে।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আমাদের দ্বীপের নামে ঔপিনবেশিকতা ও দাসত্বের ছাপ ছিল। আমার সৌভাগ্য এই যে ৪ থেকে ৫ বছর আগে আমি যখন পোর্ট ব্লেয়ার গিয়েছিলাম তখন তিনটি প্রধান দ্বীপের নাম ভারতীয়দের নামে নামকরণের সুযোগ পেয়েছিলাম।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, আন্দামান-নিকোবরে ২১টি দ্বীপের নামকরণ প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট : ২৩ জানুয়ারী ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নেতাজির ১২৬তম জন্মবার্ষিকীতে দেশজুড়ে সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পালিত হচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। আজ এই বিশেষ দিনে নেতাজিকে স্মরণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী একটি ট্যুইট করে লেখেন, আজ পরাক্রম দিবস উপলক্ষে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ভারতের ইতিহাসে তার অনবদ্য অবদান আজ আমরা স্মরণ করছি। ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিরোধের জন্য তাঁকে মনে রাখা হবে। তাঁর চিন্তাধারার দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত আমরা। ভারতের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি আমরা।’

২০২১ সাল থেকে নেতাজির জন্মদিবসকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকরা। তারপর থেকে এই দিনটি পরাক্রম দিবস হিসেবে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে। ভারতের ইতিহাসে এটি তৃতীয় পরাক্রম দিবস।

আরও পড়ুন: মোদির ধ্যানের জেরে তিন দিন রুটিতে কোপ ৫০০০ মৎসজীবীর

এ দিন পরাক্রম দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপে নির্মিত নেতাজিকে উৎসর্গ করা জাতীয় স্মৃতিসৌধের মডেল উন্মোচন করেছেন। শুধু তাই নয় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ২১ টি বৃহত্তম দ্বীপের নামকরণ করেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: ‘অমৃত মাটিকা’ তৈরি করতে নেতাজীর বাড়ি থেকে মাটি সংগ্রহ

এর আগেও নেতাজির স্মরণে আন্দামানের দু’টি দ্বীপের নাম রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ২০১৮ সালে এই দ্বীপ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর রস দ্বীপপুঞ্জের নাম পরিবর্তন করে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপ রাখা হয়েছিল। নীল দ্বীপ এবং হ্যাভলক দ্বীপের নামকরণ করা হয়েছে শহিদ দ্বীপ এবং স্বরাজ দ্বীপ নামে’।

আরও পড়ুন: নেতাজি থাকলে ভারত ভাগ হত না, ধার্মিক হয়েও ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ: অজিত দোভাল

 

২১ জন পরম বীর চক্র পুরস্কারপ্রাপ্ত, যাঁদের নামে আন্দামান ও নিকোবরের দ্বীপগুলির নামকরণ করা হয়েছে তাঁরা হলেন: মেজর সোমনাথ শর্মা; সুবেদার এবং মাননীয় ক্যাপ্টেন (তখন ল্যান্স নায়েক) করম সিং, এমএম; দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট রমা রাঘোবা রানে; নায়ক যদুনাথ সিং; কোম্পানি হাবিলদার মেজর পিরু সিং; ক্যাপ্টেন জিএস সালারিয়া; লেফটেন্যান্ট কর্নেল (তৎকালীন মেজর) ধন সিং থাপা; সুবেদার জোগিন্দর সিং; মেজর শয়তান সিং; সিকিউএমএইচ। আবদুল হামিদ; লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরদেশির বুর্জরজি তারাপুর; ল্যান্স নায়েক আলবার্ট এক্কা; মেজর হোশিয়ার সিং; দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট অরুণ ক্ষেত্রপাল; ফ্লাইং অফিসার নির্মলজিৎ সিং সেখন; মেজর রামস্বামী পরমেশ্বরন; নায়েব সুবেদার বানা সিং; ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা; লেফটেন্যান্ট মনোজ কুমার পান্ডে; সুবেদার মেজর (তখন রাইফেলম্যান) সঞ্জয় কুমার; এবং সুবেদার মেজর অবসরপ্রাপ্ত (মাননীয় ক্যাপ্টেন) গ্রেনেডিয়ার যোগেন্দ্র সিং যাদব।

মোদি বলেন, আজও কর্তব্য পথে নেতাজির বক্তব্য কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমি মনে করি এই কাজ দেশের হিতের জন্য অনেক আগেই হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। যখন আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের ৭৫ বছর পূরণ হয়েছে সমগ্র দেশ পতাকা উড়িয়ে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে। দর্শকের তরফে নেতাজির সঙ্গে জড়িত সমস্ত  ফাইল প্রকাশ্যে আনার দাবি জানানো হচ্ছিল।এই কাজও দেশ সম্পূর্ণ শ্রদ্ধার সঙ্গে আগে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশে গত ৮ থেকে ৯ বছরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে জড়িত এমন হাজার  রকম কাজ রয়েছে যা স্বাধীনতার পরপরই হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেই সময়  হয়নি। দেশের একটি অংশে স্বাধীন ভারতের প্রথম সরকার ১৯৪৩-তে তৈরি হয়েছিল। তা এখন গোটা দেশ বেশি গৌরবের সঙ্গে স্বীকার করছে।

আজ একবিংশ শতাব্দী দেখছে, স্বাধীনতার পর যে নেতাজি সুভাষকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, দেশ সেই নেতাজিকে প্রতি মুহূর্তে স্মরণ করছে। আজ রস আইল্যান্ড নেতাজি সুভাষ দ্বীপ নামে পরিচিত। হ্যাভলক ও নীল আইল্যান্ড স্বরাজ ও শহিদ দ্বীপ হিসেবে নামকরণ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে উল্লেখযোগ্য হল, স্বরাজ ও শহিদ নাম খোদ নেতাজির দেওয়া। স্বাধীনতার পর এই নামকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আজ়াদ হিন্দ ফৌজের যখন ৭৫ বছর পূরণ হয়েছে তখন আমাদের সরকার এই নামগুলি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।

আন্দামানের এই ভূমিতেই দেশে প্রথমবার তেরঙ্গা উত্তোলন করা হয়েছিল। যেখানে প্রথমবারের মতো স্বাধীন ভারতের সরকার গঠিত হয়েছিল। আজ নেতাজি সুভাষ বসুর জন্মবার্ষিকী। দেশ এই দিনটিকে পরক্রম দিবস হিসেবে পালন করে।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আমাদের দ্বীপের নামে ঔপিনবেশিকতা ও দাসত্বের ছাপ ছিল। আমার সৌভাগ্য এই যে ৪ থেকে ৫ বছর আগে আমি যখন পোর্ট ব্লেয়ার গিয়েছিলাম তখন তিনটি প্রধান দ্বীপের নাম ভারতীয়দের নামে নামকরণের সুযোগ পেয়েছিলাম।