২৯ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতিগণনার জন্য আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১২ মে ২০২৫, সোমবার
  • / 83

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: পুরনো আদমশুমারি আইনেই জাতিগণনা সম্ভব। তার জন্য ৭০ বছর পুরনো আইনে পরিবর্তন না আনলেও হবে। সুতরাং আসন্ন জাতিগণনার জন্য নতুন আইনের প্রয়োজন নেই। উল্লেখ্য, খুব শীঘ্রই দেশজুড়ে আদমশুমারি হবে। ওই সময় আদমশুমারির সঙ্গে জাতি গণনাও হবে। সম্প্রতি এমনটাই ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

তিনি জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলা বাহুল্য, লাগাতার জাতি গণনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিরোধীরা। বিশেষত কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি বারবার এই দাবিতে সরব হয়েছেন। বিরোধীদের সেই দাবিকেই মান্যতা দিয়ে জাতিগণনার দাবিতে সিলমোহর নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা।

আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে শুরু গৃহতালিকা তৈরি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে আদমশুমারি ও জাতিগত জনগণনার ঘোষণা কেন্দ্রের

প্রসঙ্গত, শেষবার ২০১১ সালে জনগণনা হয়েছিল দেশে। তবে করোনা মহামারি এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে তারপর আর জনগণনা হয়নি দেশজুড়ে। তবে কেন্দ্র সরকারের নির্দেশে চলতি বছরেই নতুন করে জনগণনা হতে পারে। আর আগামী জনগণনা ডিজিটাল নির্ভর হবেই বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভাইসরয় লর্ড মায়োর অধীনে জনগণনা শুরু হয়। ঠিক হয়েছিল ১০ বছর অন্তর এই সমীক্ষা চালানো হবে জনসংখ্যা নির্ধারণ করতে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং আদমশুমারি কমিশনার কর্তৃক জনগণনা শুরু হয়। ভারতে প্রথম সম্পূর্ণ আদমশুমারি হয়েছিল ১৮৭২ সালে।

১৯৫১ সালের পর থেকে সমস্ত জনগণনা ১৯৪৮ সালের ভারত আদমশুমারি আইনের অধীনে হয়েছে। কিন্তু গত ১৪ বছর ধরে জনগণনা হয়নি দেশে। ২০১১ সালে শেষ বার ভারতে জনগণনা হয়েছিল।

নিয়ম অনুযায়ী ১০ বছর পরে ২০২১ সালে জনশুমারি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। জাতিগণনার অর্থ আদমশুমারির সময় বর্ণভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা। এই তথ্য বর্ণের বণ্টন, তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিক্ষাগত অবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়গুলির বিশদ বিবরণ প্রদান করবে।

অন্যদিকে, জাতিগণনা হল সাধারণ জনগণনার সময় জাতভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা এবং তালিকাভুক্ত করা। ১৮৮১ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসনামলে জাতগণনা নিয়মিত ভাবে জনগণনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, ১৯৫১ সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম আদমশুমারির সময় তৎকালীন সরকার ওই প্রথা বন্ধ করে দেয়।

ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার পর, সরকার সামাজিক এবং শিক্ষাগত মানদণ্ডের ভিত্তিতে নাগরিকদের চারটি বৃহৎ গোষ্ঠীতে শ্রেণিবদ্ধ করে; তফসিলি উপজাতি (এসটি), তফসিলি জাতি (এসসি), অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) এবং সাধারণ (জেনারেল)।

আসন্ন আদমশুমারির পাশাপাশি জাতিগণনা করার মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের আগেই তিনটি রাজ্য; বিহার, তেলেঙ্গানা এবং কর্নাটক রাজ্যভিত্তিক জাতিগণনা পরিচালনা করেছে।

সেই সমীক্ষা চালানোর পর ২০২৩ সালে সেই তথ্য প্রকাশ করে বিহার সরকার। তখন জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেসের জোট সরকারের প্রধান ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তেলেঙ্গানা এবং কর্নাটক; উভয়ই কংগ্রেসশাসিত রাজ্য।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জাতিগণনার জন্য আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই

আপডেট : ১২ মে ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: পুরনো আদমশুমারি আইনেই জাতিগণনা সম্ভব। তার জন্য ৭০ বছর পুরনো আইনে পরিবর্তন না আনলেও হবে। সুতরাং আসন্ন জাতিগণনার জন্য নতুন আইনের প্রয়োজন নেই। উল্লেখ্য, খুব শীঘ্রই দেশজুড়ে আদমশুমারি হবে। ওই সময় আদমশুমারির সঙ্গে জাতি গণনাও হবে। সম্প্রতি এমনটাই ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

তিনি জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলা বাহুল্য, লাগাতার জাতি গণনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিরোধীরা। বিশেষত কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি বারবার এই দাবিতে সরব হয়েছেন। বিরোধীদের সেই দাবিকেই মান্যতা দিয়ে জাতিগণনার দাবিতে সিলমোহর নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা।

আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে শুরু গৃহতালিকা তৈরি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে আদমশুমারি ও জাতিগত জনগণনার ঘোষণা কেন্দ্রের

প্রসঙ্গত, শেষবার ২০১১ সালে জনগণনা হয়েছিল দেশে। তবে করোনা মহামারি এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে তারপর আর জনগণনা হয়নি দেশজুড়ে। তবে কেন্দ্র সরকারের নির্দেশে চলতি বছরেই নতুন করে জনগণনা হতে পারে। আর আগামী জনগণনা ডিজিটাল নির্ভর হবেই বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভাইসরয় লর্ড মায়োর অধীনে জনগণনা শুরু হয়। ঠিক হয়েছিল ১০ বছর অন্তর এই সমীক্ষা চালানো হবে জনসংখ্যা নির্ধারণ করতে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং আদমশুমারি কমিশনার কর্তৃক জনগণনা শুরু হয়। ভারতে প্রথম সম্পূর্ণ আদমশুমারি হয়েছিল ১৮৭২ সালে।

১৯৫১ সালের পর থেকে সমস্ত জনগণনা ১৯৪৮ সালের ভারত আদমশুমারি আইনের অধীনে হয়েছে। কিন্তু গত ১৪ বছর ধরে জনগণনা হয়নি দেশে। ২০১১ সালে শেষ বার ভারতে জনগণনা হয়েছিল।

নিয়ম অনুযায়ী ১০ বছর পরে ২০২১ সালে জনশুমারি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। জাতিগণনার অর্থ আদমশুমারির সময় বর্ণভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা। এই তথ্য বর্ণের বণ্টন, তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিক্ষাগত অবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়গুলির বিশদ বিবরণ প্রদান করবে।

অন্যদিকে, জাতিগণনা হল সাধারণ জনগণনার সময় জাতভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা এবং তালিকাভুক্ত করা। ১৮৮১ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসনামলে জাতগণনা নিয়মিত ভাবে জনগণনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, ১৯৫১ সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম আদমশুমারির সময় তৎকালীন সরকার ওই প্রথা বন্ধ করে দেয়।

ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার পর, সরকার সামাজিক এবং শিক্ষাগত মানদণ্ডের ভিত্তিতে নাগরিকদের চারটি বৃহৎ গোষ্ঠীতে শ্রেণিবদ্ধ করে; তফসিলি উপজাতি (এসটি), তফসিলি জাতি (এসসি), অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) এবং সাধারণ (জেনারেল)।

আসন্ন আদমশুমারির পাশাপাশি জাতিগণনা করার মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের আগেই তিনটি রাজ্য; বিহার, তেলেঙ্গানা এবং কর্নাটক রাজ্যভিত্তিক জাতিগণনা পরিচালনা করেছে।

সেই সমীক্ষা চালানোর পর ২০২৩ সালে সেই তথ্য প্রকাশ করে বিহার সরকার। তখন জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেসের জোট সরকারের প্রধান ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তেলেঙ্গানা এবং কর্নাটক; উভয়ই কংগ্রেসশাসিত রাজ্য।