০৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ আদালতের

পুবের কলম
  • আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, সোমবার
  • / 41

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় ফের ফের হাইকোর্টের চরম রোষের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সোমবার শুনানি চলাকালীন আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই ঘটনার সঙ্গে যেহেতু রাজ্যের সম্পর্ক রয়েছে, তাই রাজ্যের কোনও সংস্থা দিয়ে তদন্ত করানো যাবে না। ফলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

এদিন এই মামলার শুনানিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন আদালতে আবেদন করে সিবিআই ছাড়া রাজ্যের যে কোনও তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা হোক। এই মামলায় শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি পদের কর্মী নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্ত ছাড়া কোনও উপায় নেই।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে জঙ্গি সন্দেহে ধৃতদের ১৪ দিনের এসটিএফ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত

এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে এসএসসি-র হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। আদালতে আইনজীবী শীর্ষ আদালতের একাধিক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: রাজু ঝাঁ খুনে সিবিআই তদন্ত খারিজ করলো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ

বিচারপতি বলেন, ‘আপনার যা বলার আছে তার জন্য পাঁচ মিনিট সময় দেব। কেন বুঝতে চাইছেন না আপনারা মামলায় হেরে গিয়েছেন। আপনাদের হলফনামা থেকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি। আমি এর তদন্তের জন্য সিবিআই ঠিক করে নিয়েছি।”

আরও পড়ুন: ‘অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া’ সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

বিচারপতির এই বক্তব্যের পরেই রাজ্যের আইনজীবীর হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বলেন,  অনুরোধ  সিবিআইকে তদন্তের ভার দেবেন না। রাজ্যের পুলিশের উপর এক বার ভরসা করে দেখা হোক। রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে একটিও অভিযোগ নেই যে তারা যথাযথ তদন্ত করেনি। সিবিআই তদন্ত একটা সময় গিয়ে থেমে যায়। যে কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দিয়ে তদন্ত করালেও অসুবিধা নেই। পুলিশ তদন্ত নিয়ে রাজ্য হলফনামা জমা দিতে চায় বলেও আদালতে জানিয়েছেন এজি।

এর পর বিচারপতি বলেন,  এই ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে, তাই রাজ্যের কোনও সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা যাবে না।  সিবিআই-কে একটি তদন্তকারী দল গঠন করতে হবে। ওই দলে মাথায় একজন জয়েন্ট ডিরেক্টর এবং ডিআইজি বা এসপি মর্যাদার কোনও অফিসার থাকবেন। দলে থাকা কোনও অফিসার তদন্ত চলাকালীন বেরিয়ে যেতে পারবেন না। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট ২১ ডিসেম্বর আদালতে জমা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তখন ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে গ্রুপ ডি প্যানেলের (Group D Panel) মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, তারপরও একাধিক নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তার মধ্যে থেকে ২৫ জনের নিয়োগের কথা জানা গিয়েছে। প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও কীভাবে নিয়োগ হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও কীভাবে ওই ২৫ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে তার সদুত্তর খোদ স্কুল সার্ভিস কমিশন দিতে পারেনি। গ্রুপ- ডি পদে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কমিশনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টকে একথা জানানো হয়েছে। আর কমিশনের কথা শোনার পরই ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। 

গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু, তারপরও নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। সেই মতো তখন নিয়োগ হওয়া ২৫ জনের নাম এসে পৌঁছেছে হাইকোর্টের কাছে। এদিকে কীভাবে তাঁদের নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকার রয়েছে খোদ কমিশন। মামলা যতদিন না পর্যন্ত শেষ হচ্ছে ততদিন ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ থাকবে। ২ বছর ধরে চাকরি করছিলেন ওই কর্মীরা। 

এদিকে, ২ বছর ধরে কীভাবে ওই ২৫ জন চাকরি করছেন, কার মাধ্যমে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন তার কিছুই জানে না কমিশন। তাই আদালতের তরফে ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই ২৫ জনকে আদালতে ডেকে পাঠানো হয়।

কমিশনকে হলফনামা দিতে বলে হাইকোর্ট। সেই মতো হলফনামায় কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা এই চাকরির সুপারিশ করেনি। পাশাপাশি মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে শুধুমাত্র ২৫ জনের নয় অন্তত পক্ষে ৫ হাজার জনের চাকরি হয়েছে। 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ আদালতের

আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় ফের ফের হাইকোর্টের চরম রোষের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সোমবার শুনানি চলাকালীন আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই ঘটনার সঙ্গে যেহেতু রাজ্যের সম্পর্ক রয়েছে, তাই রাজ্যের কোনও সংস্থা দিয়ে তদন্ত করানো যাবে না। ফলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

এদিন এই মামলার শুনানিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন আদালতে আবেদন করে সিবিআই ছাড়া রাজ্যের যে কোনও তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা হোক। এই মামলায় শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি পদের কর্মী নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্ত ছাড়া কোনও উপায় নেই।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে জঙ্গি সন্দেহে ধৃতদের ১৪ দিনের এসটিএফ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত

এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে এসএসসি-র হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। আদালতে আইনজীবী শীর্ষ আদালতের একাধিক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: রাজু ঝাঁ খুনে সিবিআই তদন্ত খারিজ করলো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ

বিচারপতি বলেন, ‘আপনার যা বলার আছে তার জন্য পাঁচ মিনিট সময় দেব। কেন বুঝতে চাইছেন না আপনারা মামলায় হেরে গিয়েছেন। আপনাদের হলফনামা থেকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি। আমি এর তদন্তের জন্য সিবিআই ঠিক করে নিয়েছি।”

আরও পড়ুন: ‘অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া’ সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

বিচারপতির এই বক্তব্যের পরেই রাজ্যের আইনজীবীর হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বলেন,  অনুরোধ  সিবিআইকে তদন্তের ভার দেবেন না। রাজ্যের পুলিশের উপর এক বার ভরসা করে দেখা হোক। রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে একটিও অভিযোগ নেই যে তারা যথাযথ তদন্ত করেনি। সিবিআই তদন্ত একটা সময় গিয়ে থেমে যায়। যে কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দিয়ে তদন্ত করালেও অসুবিধা নেই। পুলিশ তদন্ত নিয়ে রাজ্য হলফনামা জমা দিতে চায় বলেও আদালতে জানিয়েছেন এজি।

এর পর বিচারপতি বলেন,  এই ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে, তাই রাজ্যের কোনও সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা যাবে না।  সিবিআই-কে একটি তদন্তকারী দল গঠন করতে হবে। ওই দলে মাথায় একজন জয়েন্ট ডিরেক্টর এবং ডিআইজি বা এসপি মর্যাদার কোনও অফিসার থাকবেন। দলে থাকা কোনও অফিসার তদন্ত চলাকালীন বেরিয়ে যেতে পারবেন না। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট ২১ ডিসেম্বর আদালতে জমা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তখন ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে গ্রুপ ডি প্যানেলের (Group D Panel) মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, তারপরও একাধিক নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তার মধ্যে থেকে ২৫ জনের নিয়োগের কথা জানা গিয়েছে। প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও কীভাবে নিয়োগ হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও কীভাবে ওই ২৫ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে তার সদুত্তর খোদ স্কুল সার্ভিস কমিশন দিতে পারেনি। গ্রুপ- ডি পদে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কমিশনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টকে একথা জানানো হয়েছে। আর কমিশনের কথা শোনার পরই ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। 

গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু, তারপরও নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। সেই মতো তখন নিয়োগ হওয়া ২৫ জনের নাম এসে পৌঁছেছে হাইকোর্টের কাছে। এদিকে কীভাবে তাঁদের নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকার রয়েছে খোদ কমিশন। মামলা যতদিন না পর্যন্ত শেষ হচ্ছে ততদিন ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ থাকবে। ২ বছর ধরে চাকরি করছিলেন ওই কর্মীরা। 

এদিকে, ২ বছর ধরে কীভাবে ওই ২৫ জন চাকরি করছেন, কার মাধ্যমে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন তার কিছুই জানে না কমিশন। তাই আদালতের তরফে ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই ২৫ জনকে আদালতে ডেকে পাঠানো হয়।

কমিশনকে হলফনামা দিতে বলে হাইকোর্ট। সেই মতো হলফনামায় কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা এই চাকরির সুপারিশ করেনি। পাশাপাশি মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে শুধুমাত্র ২৫ জনের নয় অন্তত পক্ষে ৫ হাজার জনের চাকরি হয়েছে।