২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর: ট্রাম্পের শুল্কনীতির আবহে আর্থিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ৬ মে ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 82

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কবৃদ্ধির হুমকিকে পাশ কাটিয়ে ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্যচুক্তিতে স্বাক্ষর করল ভারত ও ব্রিটেন। মঙ্গলবার টেলিফোনিক আলোচনায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার যৌথভাবে এই চুক্তির ঘোষণা দেন। এই চুক্তির মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রবাহে নতুন গতি আনার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ব্রিটেন থেকে আমদানিকৃত স্কচ হুইস্কি, লাক্সারি গাড়ি (জাগুয়ার, ল্যান্ডরোভার) সহ বেশ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক কমাবে ভারত। অন্যদিকে, ভারতীয় পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও জুতো রপ্তানিতে শুল্ক শিথিল করবে ব্রিটেন।

আরও পড়ুন: দেশবাসীর সামনে প্রধানমন্ত্রীর ‘ভিশন ২০৪৭’

চাকরি ও উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্রিটেনে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা কোটা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।  মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবিলায় ইউরোপীয় বাজারজুড়ে রপ্তানি বাড়ানোর কৌশল হিসেবে এই চুক্তিকে দেখছে নয়াদিল্লি।

আরও পড়ুন: ২০০ সেকেন্ডে ব্রিটেন ও ১০ সেকেন্ডে ফিনল্যান্ড ধ্বংস হবে, হুমকি রাশিয়ার

প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স (টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, “এই চুক্তি ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এটি লক্ষ্যাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং উভয় দেশের অর্থনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনবে।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টার্মার তার বিবৃতিতে বলেন, “অস্থির বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে এই চুক্তি একটি মাইলফলক। বাণিজ্যিক বাধা কমিয়ে আমরা উভয় দেশের জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়নের পথ তৈরি করছি।”

আরও পড়ুন: ব্রিটেন নব্য নাৎসি যুবকের কারাদণ্ড

২০২২ সালে শুরু হওয়া এই আলোচনা বারবার ব্রিটেনের রাজনৈতিক অস্থিরতায় থমকে গিয়েছিল। বরিস জনসন, লিজ ট্রাস ও রিশি সুনাকের দ্রুত ক্ষমতাবদলের ফলে চুক্তির শর্ত নিয়ে সমঝোতা বিলম্বিত হয়। গত এপ্রিলে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের লন্ডন সফর এবং পরবর্তীতে দফায় দফায় বৈঠকের পর চূড়ান্ত রূপরেখা প্রস্তুত হয়। গত শুক্রবার লন্ডনে শেষ দফার আলোচনা সেরে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।

ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক আমদানিকৃত পণ্যে ৬০% শুল্ক আরোপের হুমকিকে গুরুত্ব দিয়ে ভারত ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির গতি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও দ্রুত মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্নের চেষ্টা চলছে, যাতে পশ্চিমা বাজারে ভারতের রপ্তানি নিশ্চিত থাকে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানের ৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে। বিশেষ করে, ভারতীয় এমএসএমই খাত ও ডিজিটাল ইকোনমি এই চুক্তি থেকে সর্বাধিক উপকৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর: ট্রাম্পের শুল্কনীতির আবহে আর্থিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত

আপডেট : ৬ মে ২০২৫, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কবৃদ্ধির হুমকিকে পাশ কাটিয়ে ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্যচুক্তিতে স্বাক্ষর করল ভারত ও ব্রিটেন। মঙ্গলবার টেলিফোনিক আলোচনায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার যৌথভাবে এই চুক্তির ঘোষণা দেন। এই চুক্তির মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রবাহে নতুন গতি আনার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ব্রিটেন থেকে আমদানিকৃত স্কচ হুইস্কি, লাক্সারি গাড়ি (জাগুয়ার, ল্যান্ডরোভার) সহ বেশ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক কমাবে ভারত। অন্যদিকে, ভারতীয় পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও জুতো রপ্তানিতে শুল্ক শিথিল করবে ব্রিটেন।

আরও পড়ুন: দেশবাসীর সামনে প্রধানমন্ত্রীর ‘ভিশন ২০৪৭’

চাকরি ও উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্রিটেনে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা কোটা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।  মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবিলায় ইউরোপীয় বাজারজুড়ে রপ্তানি বাড়ানোর কৌশল হিসেবে এই চুক্তিকে দেখছে নয়াদিল্লি।

আরও পড়ুন: ২০০ সেকেন্ডে ব্রিটেন ও ১০ সেকেন্ডে ফিনল্যান্ড ধ্বংস হবে, হুমকি রাশিয়ার

প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স (টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, “এই চুক্তি ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এটি লক্ষ্যাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং উভয় দেশের অর্থনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনবে।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টার্মার তার বিবৃতিতে বলেন, “অস্থির বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে এই চুক্তি একটি মাইলফলক। বাণিজ্যিক বাধা কমিয়ে আমরা উভয় দেশের জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়নের পথ তৈরি করছি।”

আরও পড়ুন: ব্রিটেন নব্য নাৎসি যুবকের কারাদণ্ড

২০২২ সালে শুরু হওয়া এই আলোচনা বারবার ব্রিটেনের রাজনৈতিক অস্থিরতায় থমকে গিয়েছিল। বরিস জনসন, লিজ ট্রাস ও রিশি সুনাকের দ্রুত ক্ষমতাবদলের ফলে চুক্তির শর্ত নিয়ে সমঝোতা বিলম্বিত হয়। গত এপ্রিলে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের লন্ডন সফর এবং পরবর্তীতে দফায় দফায় বৈঠকের পর চূড়ান্ত রূপরেখা প্রস্তুত হয়। গত শুক্রবার লন্ডনে শেষ দফার আলোচনা সেরে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।

ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক আমদানিকৃত পণ্যে ৬০% শুল্ক আরোপের হুমকিকে গুরুত্ব দিয়ে ভারত ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির গতি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও দ্রুত মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্নের চেষ্টা চলছে, যাতে পশ্চিমা বাজারে ভারতের রপ্তানি নিশ্চিত থাকে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানের ৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে। বিশেষ করে, ভারতীয় এমএসএমই খাত ও ডিজিটাল ইকোনমি এই চুক্তি থেকে সর্বাধিক উপকৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।