০১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অধ্যাপক নাইমা খাতুন এএমইউ-র প্রথম মহিলা উপাচার্য

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, রবিবার
  • / 53

ইলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর নিয়োগকে বৈধতা দিল

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: অধ্যাপক নাইমা খাতুন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) উপাচার্য হিসেবে বহাল থাকবেন। শনিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) প্রথম মহিলা উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক নাইমা খাতুনের নিয়োগকে বৈধতা দেয়। আদালত তাঁর নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে করা সমস্ত আবেদন খারিজ করে দেয় এবং তাঁর নিয়োগকে আইনি, ন্যায্য এবং বৈধ বলে ঘোষণা করে। আদালত আরও বলেছে যে উপাচার্যের নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করার কোনও ভিত্তি নেই। এছাড়া হাইকোর্ট এই নিয়োগকে সাংবিধানিক এবং নারীর ক্ষমতায়ন ও অন্তর্ভুক্তির দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

বিচারপতি অশ্বিনী কুমার মিশ্র এবং বিচারপতি ডোনাদি রমেশের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে, নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াটি এএমইউ আইন, বিধি এবং বিধান অনুসারে সম্পন্ন হয়েছিল। তবে নাইমা খাতুনের স্বামী অধ্যাপক মোহাম্মদ গুলরেজ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে কিছু সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন ঠিকই কিন্তু তাঁর উপস্থিতি নিয়োগ প্রক্রিয়ার ন্যায্যতার উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। উল্লেখ্য যে, নাইমা খাতুনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে রিট করেন অধ্যাপক মুজাহিদ বেগ।

আরও পড়ুন: সাভারকর মামলা: আইনি স্বস্তি মিলল না বিরোধী দলনেতার

অন্যদিকে অধ্যাপক নাইমা খাতুন বলেন যে, “ভারতের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং নিরপেক্ষতার প্রতি আমার সর্বদা পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কেবল আমার ব্যক্তিগত স্তরে ন্যায়বিচার নয় বরং আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন। আমি পূর্ণ নিষ্ঠা, স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাগত উৎকর্ষতার প্রতি অঙ্গীকারের সাথে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবা চালিয়ে যাব। আমি আশা করি এই সিদ্ধান্ত আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান, ন্যায়বিচার এবং অগ্রগতির উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করবে।”

নাইমা খাতুন ১৯৬১ সালে ওড়িশার জাজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরেরও বেশি ইতিহাসে তিনি প্রথম মহিলা উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছেন। নাইমা খাতুন রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক এবং ২০১৪ সালে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। তাঁর ৩৬ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানে পিএইচডি করেছেন। জানা যায়, নাইমা খাতুন এএমইউ-এর মহিলা কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি, তিনি মধ্য আফ্রিকার রুয়ান্ডার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেছেন। এছাড়াও তিনি ৬টি বই লিখেছেন এবং সম্পাদনা করেছেন। তার গবেষণাপত্রগুলি অনেক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আমেরিকা, রোমানিয়া, ব্যাংকক এবং তুরস্ক সহ অনেক দেশে বক্তৃতা দিয়েছেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অধ্যাপক নাইমা খাতুন এএমইউ-র প্রথম মহিলা উপাচার্য

আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, রবিবার

ইলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর নিয়োগকে বৈধতা দিল

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: অধ্যাপক নাইমা খাতুন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) উপাচার্য হিসেবে বহাল থাকবেন। শনিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) প্রথম মহিলা উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক নাইমা খাতুনের নিয়োগকে বৈধতা দেয়। আদালত তাঁর নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে করা সমস্ত আবেদন খারিজ করে দেয় এবং তাঁর নিয়োগকে আইনি, ন্যায্য এবং বৈধ বলে ঘোষণা করে। আদালত আরও বলেছে যে উপাচার্যের নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করার কোনও ভিত্তি নেই। এছাড়া হাইকোর্ট এই নিয়োগকে সাংবিধানিক এবং নারীর ক্ষমতায়ন ও অন্তর্ভুক্তির দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

বিচারপতি অশ্বিনী কুমার মিশ্র এবং বিচারপতি ডোনাদি রমেশের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে, নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াটি এএমইউ আইন, বিধি এবং বিধান অনুসারে সম্পন্ন হয়েছিল। তবে নাইমা খাতুনের স্বামী অধ্যাপক মোহাম্মদ গুলরেজ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে কিছু সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন ঠিকই কিন্তু তাঁর উপস্থিতি নিয়োগ প্রক্রিয়ার ন্যায্যতার উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। উল্লেখ্য যে, নাইমা খাতুনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে রিট করেন অধ্যাপক মুজাহিদ বেগ।

আরও পড়ুন: সাভারকর মামলা: আইনি স্বস্তি মিলল না বিরোধী দলনেতার

অন্যদিকে অধ্যাপক নাইমা খাতুন বলেন যে, “ভারতের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং নিরপেক্ষতার প্রতি আমার সর্বদা পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কেবল আমার ব্যক্তিগত স্তরে ন্যায়বিচার নয় বরং আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন। আমি পূর্ণ নিষ্ঠা, স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাগত উৎকর্ষতার প্রতি অঙ্গীকারের সাথে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবা চালিয়ে যাব। আমি আশা করি এই সিদ্ধান্ত আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান, ন্যায়বিচার এবং অগ্রগতির উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করবে।”

নাইমা খাতুন ১৯৬১ সালে ওড়িশার জাজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরেরও বেশি ইতিহাসে তিনি প্রথম মহিলা উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছেন। নাইমা খাতুন রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক এবং ২০১৪ সালে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। তাঁর ৩৬ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানে পিএইচডি করেছেন। জানা যায়, নাইমা খাতুন এএমইউ-এর মহিলা কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি, তিনি মধ্য আফ্রিকার রুয়ান্ডার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেছেন। এছাড়াও তিনি ৬টি বই লিখেছেন এবং সম্পাদনা করেছেন। তার গবেষণাপত্রগুলি অনেক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আমেরিকা, রোমানিয়া, ব্যাংকক এবং তুরস্ক সহ অনেক দেশে বক্তৃতা দিয়েছেন।