০১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনআইএ আধিকারিকদের আইনী রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার
  • / 18

মোল্লা জসিমউদ্দিন: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে উঠে এনআইএ বিষয়ক মামলা। ভূপতিনগরে হামলার ঘটনায় এনআইএ আধিকারিকদের রক্ষাকবচ আদালতের। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ, -‘এনআইএ-র কোনও আধিকারিককে গ্রেফতার করা যাবে না। এনআইএর কোনও আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিশ দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে’।

 

আরও পড়ুন: মুম্বাই হামলার ‘মাস্টার মাইন্ড’ রানার ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজত

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের ২০২২ সালের বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে তল্লাশিতে গিয়ে এনআইএ আধিকারিকদের উপর নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। পাল্টা ধৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। যেখানে এনআইএ অফিসাররাই আক্রান্ত, সেখানে কীভাবে তাঁদের বিরুদ্ধেই গুরুতর ধারায় অভিযোগ- সেই প্রশ্ন করা হয়েছে? শেষ পর্যন্ত এনআইএ আধিকারিকদের রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর নির্দেশ-‘ওই আধিকারিকদের এখনই গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু ৭২ ঘন্টা আগে নোটিসের ভিত্তিতে ভিডিও কনফারেন্সে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে পুলিশ’।

আরও পড়ুন: মায়ানমারের তিন নাগরিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল এনআইএ

 

আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুর একাধিক জায়গায় এনআইএ হানা, বাজেয়াপ্ত নথি-নগদ টাকা

এদিন আদালতে এনআইএ-র তরফের আইনজীবী দাবি করেন, -‘সন্দেশখালিতে যা হয়েছিল ভূপতিনগরেও তাই হয়েছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশেই সেখানে কাজ করতে যায় এনআইএ। বিস্ফোরণ কাণ্ডেঅন্তত পাঁচ জন জড়িত ছিলেন বলে দাবি করে এনআইএ-র, এর মধ্যে চার জনকে তলব করা হয়েছিল দু’বার। তারপরও অভিযুক্তরা হাজিরা দেননি। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ উঠে থাকায় তল্লাশিতে গিয়েছিল এনআইএ’।

 

এনআইএ-র আইনজীবীর দাবি, গত ৬ এপ্রিল ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। তারপর তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানাকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু সেই সময় অন্তত ১০০ মহিলা উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি। তারাই হামলা চালায় কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের উপর। পাল্টা পুলিশের কাছে ধৃত মনোব্রত জানা এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। যা নিয়ে এ দিন আদালতে এনআইএ-র আইনজীবী দাবি করেছেন- মনোব্রত জানার স্ত্রীর অভিযোগ মিথ্যা। এরপরই সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ যাতে এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করতে পারে সেই আর্জি জানানো হয়। কেন এনআইএ অফিসারদের বিরুদ্ধে ৩২৫ ধারা যুক্ত করা হল? সেই প্রশ্ন তুলে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত পুলিশকে বলেন, ‘কেস ডায়েরিতে আঁচড় বা গুরুতর আঘাতের কোনও উল্লেখ নেই। তাহলে কীভাবে কোনও প্রমাণ ছাড়া অফিসারের বিরুদ্ধে গুরুতর আহত করার ধারা যুক্ত করলেন? কে তদন্ত করছিলেন? প্রাথমিক তদন্তের প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন? কেন অভিযুক্তের স্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে পুলিশ এত উদ্বিগ্ন?’

 

এর প্রতুত্তরে রাজ্যের যুক্তি -‘কোনও মহিলা যদি এসে ধর্তব্যযুক্ত অভিযোগ করেন থানায়, তাহলে সেটা পুলিশ গ্রহণ করতে বাধ্য’। তবে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণের পরবর্তীতে কোন মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া কেন গুরতর ধারা যুক্ত করলো? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিচারপতি।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এনআইএ আধিকারিকদের আইনী রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে উঠে এনআইএ বিষয়ক মামলা। ভূপতিনগরে হামলার ঘটনায় এনআইএ আধিকারিকদের রক্ষাকবচ আদালতের। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ, -‘এনআইএ-র কোনও আধিকারিককে গ্রেফতার করা যাবে না। এনআইএর কোনও আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিশ দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে’।

 

আরও পড়ুন: মুম্বাই হামলার ‘মাস্টার মাইন্ড’ রানার ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজত

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের ২০২২ সালের বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে তল্লাশিতে গিয়ে এনআইএ আধিকারিকদের উপর নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। পাল্টা ধৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। যেখানে এনআইএ অফিসাররাই আক্রান্ত, সেখানে কীভাবে তাঁদের বিরুদ্ধেই গুরুতর ধারায় অভিযোগ- সেই প্রশ্ন করা হয়েছে? শেষ পর্যন্ত এনআইএ আধিকারিকদের রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর নির্দেশ-‘ওই আধিকারিকদের এখনই গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু ৭২ ঘন্টা আগে নোটিসের ভিত্তিতে ভিডিও কনফারেন্সে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে পুলিশ’।

আরও পড়ুন: মায়ানমারের তিন নাগরিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল এনআইএ

 

আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুর একাধিক জায়গায় এনআইএ হানা, বাজেয়াপ্ত নথি-নগদ টাকা

এদিন আদালতে এনআইএ-র তরফের আইনজীবী দাবি করেন, -‘সন্দেশখালিতে যা হয়েছিল ভূপতিনগরেও তাই হয়েছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশেই সেখানে কাজ করতে যায় এনআইএ। বিস্ফোরণ কাণ্ডেঅন্তত পাঁচ জন জড়িত ছিলেন বলে দাবি করে এনআইএ-র, এর মধ্যে চার জনকে তলব করা হয়েছিল দু’বার। তারপরও অভিযুক্তরা হাজিরা দেননি। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ উঠে থাকায় তল্লাশিতে গিয়েছিল এনআইএ’।

 

এনআইএ-র আইনজীবীর দাবি, গত ৬ এপ্রিল ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। তারপর তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানাকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু সেই সময় অন্তত ১০০ মহিলা উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি। তারাই হামলা চালায় কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের উপর। পাল্টা পুলিশের কাছে ধৃত মনোব্রত জানা এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। যা নিয়ে এ দিন আদালতে এনআইএ-র আইনজীবী দাবি করেছেন- মনোব্রত জানার স্ত্রীর অভিযোগ মিথ্যা। এরপরই সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ যাতে এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করতে পারে সেই আর্জি জানানো হয়। কেন এনআইএ অফিসারদের বিরুদ্ধে ৩২৫ ধারা যুক্ত করা হল? সেই প্রশ্ন তুলে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত পুলিশকে বলেন, ‘কেস ডায়েরিতে আঁচড় বা গুরুতর আঘাতের কোনও উল্লেখ নেই। তাহলে কীভাবে কোনও প্রমাণ ছাড়া অফিসারের বিরুদ্ধে গুরুতর আহত করার ধারা যুক্ত করলেন? কে তদন্ত করছিলেন? প্রাথমিক তদন্তের প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন? কেন অভিযুক্তের স্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে পুলিশ এত উদ্বিগ্ন?’

 

এর প্রতুত্তরে রাজ্যের যুক্তি -‘কোনও মহিলা যদি এসে ধর্তব্যযুক্ত অভিযোগ করেন থানায়, তাহলে সেটা পুলিশ গ্রহণ করতে বাধ্য’। তবে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণের পরবর্তীতে কোন মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া কেন গুরতর ধারা যুক্ত করলো? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিচারপতি।