পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ চিপস খেতে খুব ভালোবাসেন!হালকা খিদে  মেটানো  হোক কিংবা প্রিয় ওয়েব সিরিজ দেখার সময় স্ন্যাকস, আলুর চিপস কি আপনার নিয়মিত সঙ্গী?  ভাবছেন এতে আলু ছাড়া অন্য কোনও ক্ষতিকারক উপাদান নেই। তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। এই ধরণের আলুর চিপস খেতে যতটাই সুস্বাদু এটি শরীরের জন্য ততটাই ক্ষতিকারক।নিয়মিত আলুর চিপস খান! তাহলে নিজেই নিজের অজান্তে ডেকে আনছেন অবাঞ্ছিত রোগ।

আলুর চিপস খেলে কী কী শারীরিক  সমস্যার সৃষ্টি করে তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

১ উচ্চ রক্তচাপঃ আলুর চিপসে প্রচুর পরিমাণ লবণ ও তেল থাকে। অতিরিক্ত লবণ ও তেলের কারণে এই চিপস খেতে সুস্বাদু ও লোভনীয় হয়। আর লবণ যুক্ত চিপসের প্রধান উপাদান সোডিয়াম।  দেহের খনিজ  উপাদান যোগানে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে অতিরিক্ত  সোডিয়াম দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অতিরিক্ত সোডিয়ামের ফলে রক্ত চাপ বেড়ে যায়। আর তার ফলে, হার্টের অসুখ, কিডনির অসুখ হয়। আলুর চিপসে সাধারন ভাবে ১২০ থেকে ১৮০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে, যেটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।

২ ওজন বৃদ্ধিঃ আলুর চিপসে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট ও ক্যালোরি থাকে। মূলত ১৫ থেকে ২০টি চিপসে কমপক্ষে ১০ গ্রাম ফ্যাট এবং ১৫৪  ক্যালোরি থাকে। কোল্ড ড্রিঙ্কস, খাসির মাংস, যে কোনও মিষ্টি জাতীয় খাবারের থেকে বেশি ক্যালোরি থাকে এই চিপস গুলিতে।  আলুর চিপসে প্রচুর পরিমানে ট্রান্স ফ্যাট,  তেল, লবণ এবং ক্যালোরি থাকে যা শারীরিক ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার থেকে শরীরে নানা ব্যাধি বাসা বাঁধে।

৩ বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকিঃ শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্য। এক প্যাকেট আলুর চিপস আপনার জীবনের সব থেকে খারাপ অভিজ্ঞতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সামান্য চিপস ডেকে আনতে পারে বন্ধ্যাত্বর মতো শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। আলুর চিপসে সাধারনত  ফ্যাট এবং কোলস্টেরল থাকে যা  প্রজননগত স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রান্স ফ্যাট মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে।

৪ ক্যানসারঃ আমাদের আশেপাশে অনেকেই আছেন যারা যখন তখন বাচ্চার হাতে ধরিয়ে দেন চিপসের প্যাকেট। কোথাও ঘুরতে গেলেও দোকান থেকে কয়েকটি চিপসের প্যাকেট কিনে নিয়ে যান। অনেক অভিভাবক আছেন যারা বাচ্চাদের স্কুলের টিফিনে পর্যন্ত চিপস দিয়ে থাকেন। বাজারে চলতি নানা মুখরোচক স্বাদের চিপস খাওয়ার ঝোঁক বাচ্চাদের মধ্যে  অনেকটাই বেশি। কিন্তু জানেন কি, বাজার চলতি  মুখরোচক এই চিপসের মধ্যেই রয়েছে এমন এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে! আমেরিকান ক্যানসার অ্যাসোসিয়েশনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, আলু চিপসের মতো প্রসেসড খাবারে অ্যাক্রিলামাইড নামে একটি রাসায়নিক থাকে যার মধ্যে কার্সিনোজেনিক উপাদান রয়েছে। এই কার্সিনোজেন নীরবে শরীরে ক্যানসারের কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৫ স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়ঃ  চিপসে প্রচুর পরিমাণে কোলস্টেরল থাকে। কারণ এটি ডুবো তেলে ভাজা হয়। কোলস্টেরল ধমনি ব্লক করে ফেলে, যার কারণে স্ট্রোকের আশঙ্কা প্রবল হয়।

তা হলে এখন প্রশ্ন হলো– আলু ভাজাও এখন ক্যানসারের ভয়ে খাওয়া যাবে না? এই বিষয়ে একদম চিন্তিত হবেন না। পুষ্টিবিদদের মতে, ঘরে তৈরি আলু ভাজা খাওয়া যেতেই পারে। তবে কোনো কিছুই মাত্রাতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।