০১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজানে হাউছিদের সাথে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা সউদি জোটের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, বুধবার
  • / 30

পুবের কলম প্রতিবেদক : সউদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোট আসন্ন রমজানে এক মাসের জন্য ইয়েমেনে সব ধরনের সামরিক তৎপরতা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। জোটের মুখপাত্র ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল তুরকি আল-মালিকি এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল ড. নায়েফ আল-হাজরাফের অনুরোধে রমজানে হাউছিদের সাথে যুদ্ধবিরতিতে যাচ্ছে আরব জোট।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রয়োজনে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরির দৃষ্টিকোণ থেকে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় রমজানের পবিত্র মাসের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে এবং ইয়েমেনে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য সম্মিলিত জোটের কমান্ড ইয়েমেনে বুধবার, ২০২২ সালের ৩০ মার্চ তারিখে সকাল ৬টা থেকে সবধরনের সামরিক তৎপরতা বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছে।’

আরও পড়ুন: ৯ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ২ মাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত দিল হামাস

এর আগে শনিবার সউদি নেতৃত্বের আরব জোটের সাথে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলো হাউছি যোদ্ধারা। সউদি জোটের অবরোধের সমাপ্তি ও চূড়ান্তভাবে ইয়েমেন থেকে আগ্রাসন বন্ধ করা সাপেক্ষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় লক্ষ্যে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় হাউছিরা।

আরও পড়ুন: অনির্দিষ্টকালের জন্য যুদ্ধবিরতি অব্যাহত: ভারতীয় সেনাবাহিনী

তবে এই বিষয়ে সউদি আরবের পক্ষ থেকে এর কোনো প্রতু্যত্তর দেয়া হয়নি। ২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের বিক্ষোভের জেরে ইয়েমেনে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক আলী আবদুল্লাহ সালেহ সরকারের পতন ঘটে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি দায়িত্ব নেন। নতুন সরকার গঠন হলেও ইয়েমেনের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকে।

আরও পড়ুন: কেন যুদ্ধবিরতি! সবকিছুর ব্যাখ্যা চেয়ে সংসদে বিশেষ অধিবেশনের দাবি রাহুলের

 

বিবাদমান পক্ষগুলোর দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৪ সালের শেষে ইরান সমর্থিত উত্তর ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করলে প্রেসিডেন্ট হাদি সউদি আরবে আশ্রয় নেন। ২০১৫ সালের মার্চে সউদি নেতৃত্বের জোট হাউছিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে আগ্রাসন করলে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মুখে পড়ে আরব উপদ্বীপের দরিদ্রতম দেশটি।

 

সাত বছরের বেশি চলমান এই যুদ্ধে হাউছি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানাসহ উত্তর ইয়েমেন নিয়ন্ত্রণে রাখে। অপরদিকে সউদি জোটের সহায়তায় আবদ রাব্বু মানসুর হাদি দক্ষিণের বন্দরনগরী এডেনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ইয়েমেনে সরকার প্রতিষ্ঠা করেন।

 

ইয়েমেনে চলমান এই যুদ্ধে এক লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোকজন। এছাড়া যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ। সাত বছরের টানা যুদ্ধ ও অবরোধে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ইয়েমেন। ইতোমধ্যে ক্ষুধায় ৫০ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রমজানে হাউছিদের সাথে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা সউদি জোটের

আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, বুধবার

পুবের কলম প্রতিবেদক : সউদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোট আসন্ন রমজানে এক মাসের জন্য ইয়েমেনে সব ধরনের সামরিক তৎপরতা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। জোটের মুখপাত্র ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল তুরকি আল-মালিকি এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল ড. নায়েফ আল-হাজরাফের অনুরোধে রমজানে হাউছিদের সাথে যুদ্ধবিরতিতে যাচ্ছে আরব জোট।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রয়োজনে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরির দৃষ্টিকোণ থেকে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় রমজানের পবিত্র মাসের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে এবং ইয়েমেনে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য সম্মিলিত জোটের কমান্ড ইয়েমেনে বুধবার, ২০২২ সালের ৩০ মার্চ তারিখে সকাল ৬টা থেকে সবধরনের সামরিক তৎপরতা বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছে।’

আরও পড়ুন: ৯ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ২ মাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত দিল হামাস

এর আগে শনিবার সউদি নেতৃত্বের আরব জোটের সাথে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলো হাউছি যোদ্ধারা। সউদি জোটের অবরোধের সমাপ্তি ও চূড়ান্তভাবে ইয়েমেন থেকে আগ্রাসন বন্ধ করা সাপেক্ষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় লক্ষ্যে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় হাউছিরা।

আরও পড়ুন: অনির্দিষ্টকালের জন্য যুদ্ধবিরতি অব্যাহত: ভারতীয় সেনাবাহিনী

তবে এই বিষয়ে সউদি আরবের পক্ষ থেকে এর কোনো প্রতু্যত্তর দেয়া হয়নি। ২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের বিক্ষোভের জেরে ইয়েমেনে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক আলী আবদুল্লাহ সালেহ সরকারের পতন ঘটে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি দায়িত্ব নেন। নতুন সরকার গঠন হলেও ইয়েমেনের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকে।

আরও পড়ুন: কেন যুদ্ধবিরতি! সবকিছুর ব্যাখ্যা চেয়ে সংসদে বিশেষ অধিবেশনের দাবি রাহুলের

 

বিবাদমান পক্ষগুলোর দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৪ সালের শেষে ইরান সমর্থিত উত্তর ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করলে প্রেসিডেন্ট হাদি সউদি আরবে আশ্রয় নেন। ২০১৫ সালের মার্চে সউদি নেতৃত্বের জোট হাউছিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে আগ্রাসন করলে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মুখে পড়ে আরব উপদ্বীপের দরিদ্রতম দেশটি।

 

সাত বছরের বেশি চলমান এই যুদ্ধে হাউছি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানাসহ উত্তর ইয়েমেন নিয়ন্ত্রণে রাখে। অপরদিকে সউদি জোটের সহায়তায় আবদ রাব্বু মানসুর হাদি দক্ষিণের বন্দরনগরী এডেনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ইয়েমেনে সরকার প্রতিষ্ঠা করেন।

 

ইয়েমেনে চলমান এই যুদ্ধে এক লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোকজন। এছাড়া যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ। সাত বছরের টানা যুদ্ধ ও অবরোধে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ইয়েমেন। ইতোমধ্যে ক্ষুধায় ৫০ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে।