১৬ জুন ২০২৫, সোমবার, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মামলাকারীদের নাম্বার না দেওয়ায় স্বশরীর হাজিরা দিয়ে ক্ষমা চাইলেন এসএসসির চেয়ারম্যান 

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার
  • / 22

পারিজাত মোল্লা:  শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠে এসএসসি সংক্রান্ত এক মামলা। যেখানে এসএসসির চেয়ারম্যানকে তলব করা হয়েছিল।

এদিন আদালতে হাজিরা দিয়ে ক্ষমা চাইলেন এসএসসির চেয়ারম্যান।  গত ২০১১ সালের টেট প্রার্থীদের ভুল ও সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নের জন্য নম্বর দেয়নি এসএসসি।আদালত অবমাননার মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে  হাজিরা দিতে এসেছিলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান  সিদ্ধার্থ মজুমদার।

আরও পড়ুন: তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ সম্ভব নয়, জানিয়ে দিলেন SSC চেয়ারম্যান

আদালতের কাছে ক্ষমা চান সিদ্ধার্থবাবু। এদিন তিনি বললেন, ‘আদালতের নির্দেশের ব্যাখ্যা করতে আমাদের ভুল হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সপার্টদের দিয়ে খতিয়ে দেখা হয়েছে ওইসব খাতা।

আরও পড়ুন: রাজ্য হজ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন খলিলুর রহমান

ইংরেজি ও চাইল্ড ডেভলপমেন্ট ও পেডাগগি বিভাগের খাতা খতিয়ে দেখে তাঁরা রিপোর্ট দিয়েছেন। যাদবপুরের রিপোর্ট সম্প্রতি  পাওয়া গিয়েছে। তার সবটা খতিয়ে দেখা হয়নি’।

আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

এসএসসি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের ভিত্তিতে, সবটা খতিয়ে দেখার জন্য শুক্রবার পর্যন্ত মামলা স্থগিত করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে এসএসসি খতিয়ে দেখবে এক্সপার্টদের রিপোর্ট।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এই কাজ করা হয়নি।   তাই নির্দেশ অমান্য করার জন্য এসএসসি চরম ভর্ত্‍সনা করে কলকাতা হাইকোর্ট। এছাড়া নতুন রিপোর্ট নিয়ে এসএসসি চেয়ারম্যানকে ব্যাক্তিগতভাবে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। এদিন হাজিরা দিলেন তিনি।

শুক্রবার আদালতে হাজিরা দিয়ে এসএসসি চেয়ারম্যান জানান, -‘ আদালতের প্রথম নির্দেশ বুঝতে ভুল হয়েছিল। দু’জন ইংরেজি বিশেষজ্ঞ দিয়ে আদালতের নির্দেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে’।

জানা গিয়েছে, মামলাকারীদের স্কুল সার্ভিস কমিশনের  অফিসে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ মার্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় কমিশনকে চরম ভর্ত্‍সনা করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার।

ওইদিন তিনি ( বিচারপতি) এই মামলার শুনানি পর্বে একপ্রকার  বিরক্তি প্রকাশ করেই বলেছিলেন, -‘ আদালতের সঙ্গে খেলা চলছে। এসএসসি নিয়োগ করছে, অথচ তারাই ভুল প্রশ্ন করছে। সব পরিকল্পিত। তাঁর বলতে দ্বিধা নেই, এসএসসি একটা প্রজন্মের ভবিষ্যত নিয়ে খেলছে’।

উল্লেখ্য , ২০১১ সালে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সিলেবাস-এর বাইরে থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৮৩জন প্রার্থী। গত বছর জুন মাসে মামলাকারীদের ভুল প্রশ্নের নিরিখে নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্ত, এসএসসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নে নম্বর দেওয়া হবে না। কারণ তাহলে যারা সেই প্রশ্ন অ্যাটেন্ড করেনি, তাদেরও নম্বর দিতে হবে। এই যুক্তি কে সামনে রেখে মামলাকারীদের নাম্বার দেয়নি এসএসসি কর্তৃপক্ষ ।

প্রসঙ্গত,  ২০১১ সালে উচ্চ প্রাথমিক টেটের পরীক্ষাকে কেন্দ্রে করে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নের জন্য পরীক্ষার্থীদের নম্বর না দেওয়া সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে হাইকোর্টে। মামলাটি চলছে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এর এজলাসে। বিচারপতি মান্থার নির্দেশের পরেও কেন নম্বর দেওয়া হয়নি, সেই নিয়ে এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল হাইকোর্টে। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও অবহেলার  মনোভাব দেখে এসএসসি চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগতভাবে শুক্রবার  হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই মতো এদিন হাইকোর্টে হাজিরা দিয়েই ক্ষমা চাইলেন এসএসসির চেয়ারম্যান।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মামলাকারীদের নাম্বার না দেওয়ায় স্বশরীর হাজিরা দিয়ে ক্ষমা চাইলেন এসএসসির চেয়ারম্যান 

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার

পারিজাত মোল্লা:  শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠে এসএসসি সংক্রান্ত এক মামলা। যেখানে এসএসসির চেয়ারম্যানকে তলব করা হয়েছিল।

এদিন আদালতে হাজিরা দিয়ে ক্ষমা চাইলেন এসএসসির চেয়ারম্যান।  গত ২০১১ সালের টেট প্রার্থীদের ভুল ও সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নের জন্য নম্বর দেয়নি এসএসসি।আদালত অবমাননার মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে  হাজিরা দিতে এসেছিলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান  সিদ্ধার্থ মজুমদার।

আরও পড়ুন: তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ সম্ভব নয়, জানিয়ে দিলেন SSC চেয়ারম্যান

আদালতের কাছে ক্ষমা চান সিদ্ধার্থবাবু। এদিন তিনি বললেন, ‘আদালতের নির্দেশের ব্যাখ্যা করতে আমাদের ভুল হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সপার্টদের দিয়ে খতিয়ে দেখা হয়েছে ওইসব খাতা।

আরও পড়ুন: রাজ্য হজ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন খলিলুর রহমান

ইংরেজি ও চাইল্ড ডেভলপমেন্ট ও পেডাগগি বিভাগের খাতা খতিয়ে দেখে তাঁরা রিপোর্ট দিয়েছেন। যাদবপুরের রিপোর্ট সম্প্রতি  পাওয়া গিয়েছে। তার সবটা খতিয়ে দেখা হয়নি’।

আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

এসএসসি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের ভিত্তিতে, সবটা খতিয়ে দেখার জন্য শুক্রবার পর্যন্ত মামলা স্থগিত করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে এসএসসি খতিয়ে দেখবে এক্সপার্টদের রিপোর্ট।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এই কাজ করা হয়নি।   তাই নির্দেশ অমান্য করার জন্য এসএসসি চরম ভর্ত্‍সনা করে কলকাতা হাইকোর্ট। এছাড়া নতুন রিপোর্ট নিয়ে এসএসসি চেয়ারম্যানকে ব্যাক্তিগতভাবে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। এদিন হাজিরা দিলেন তিনি।

শুক্রবার আদালতে হাজিরা দিয়ে এসএসসি চেয়ারম্যান জানান, -‘ আদালতের প্রথম নির্দেশ বুঝতে ভুল হয়েছিল। দু’জন ইংরেজি বিশেষজ্ঞ দিয়ে আদালতের নির্দেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে’।

জানা গিয়েছে, মামলাকারীদের স্কুল সার্ভিস কমিশনের  অফিসে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ মার্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় কমিশনকে চরম ভর্ত্‍সনা করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার।

ওইদিন তিনি ( বিচারপতি) এই মামলার শুনানি পর্বে একপ্রকার  বিরক্তি প্রকাশ করেই বলেছিলেন, -‘ আদালতের সঙ্গে খেলা চলছে। এসএসসি নিয়োগ করছে, অথচ তারাই ভুল প্রশ্ন করছে। সব পরিকল্পিত। তাঁর বলতে দ্বিধা নেই, এসএসসি একটা প্রজন্মের ভবিষ্যত নিয়ে খেলছে’।

উল্লেখ্য , ২০১১ সালে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সিলেবাস-এর বাইরে থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৮৩জন প্রার্থী। গত বছর জুন মাসে মামলাকারীদের ভুল প্রশ্নের নিরিখে নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্ত, এসএসসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নে নম্বর দেওয়া হবে না। কারণ তাহলে যারা সেই প্রশ্ন অ্যাটেন্ড করেনি, তাদেরও নম্বর দিতে হবে। এই যুক্তি কে সামনে রেখে মামলাকারীদের নাম্বার দেয়নি এসএসসি কর্তৃপক্ষ ।

প্রসঙ্গত,  ২০১১ সালে উচ্চ প্রাথমিক টেটের পরীক্ষাকে কেন্দ্রে করে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নের জন্য পরীক্ষার্থীদের নম্বর না দেওয়া সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে হাইকোর্টে। মামলাটি চলছে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এর এজলাসে। বিচারপতি মান্থার নির্দেশের পরেও কেন নম্বর দেওয়া হয়নি, সেই নিয়ে এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল হাইকোর্টে। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও অবহেলার  মনোভাব দেখে এসএসসি চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগতভাবে শুক্রবার  হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই মতো এদিন হাইকোর্টে হাজিরা দিয়েই ক্ষমা চাইলেন এসএসসির চেয়ারম্যান।