১৮ জুন ২০২৫, বুধবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাল্যবিবাহ রুখতে বিশেষ উদ্যোগ বিডিও সেখ আবদুল্লাহ-র

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, বুধবার
  • / 20

নাজির হোসেন লস্কর, মগরাহাট:  কোভিড পরিস্থিতি সামাল দেওয়া পর কয়েক মাস হল শুরু হয়েছে স্কুলের পঠনপাঠন। এরই মধ্যেই ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে দেখা যাচ্ছে উপস্থিতির হার অনেকটাই কম। শুরু করেন খোঁজ খবর।

জানা যাচ্ছে, কোভিডের মধ্যে অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে কম বয়সেই। অন্য দিকে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে খবর আসছে যে,  এলাকায় প্রি-ম্যারেজ প্রেগনেন্সি বাড়ছে। ঘটছে শিশুমৃত্যুও। এমন পরিস্থিতিতে বাল্যবিবাহ রোখা না গেলে এই বৃদ্ধির হার আটকানো সম্ভব হবে না। মাঠে নেমে পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট-২ ব্লক প্রশাসন।

আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থান রুখতে ১৪০০-রও বেশি খুন, ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু: রাষ্ট্রসংঘ

বাল্যবিবাহ, মানব পাচার ও নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এক সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করল মগরাহাট-২ ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতি।

আরও পড়ুন: বুলডোজার, উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে হঠাৎ বাঙালি মুসলিমদের প্রতি ভিন্নসুর হিমন্তর

বাল্যবিবাহ রুখতে বিশেষ উদ্যোগ বিডিও সেখ আবদুল্লাহ-র

আরও পড়ুন: ওজন-উচ্চতা নিয়ে বৈষম্য রুখতে আইন নিউ ইয়র্কে

 

মগরাহাট-২ বিডিও সেখ আবদুল্লাহর উদ্যোগে স্থানীয় জন প্রতিনিধি, পুলিশ-প্রশাসন, চিকিৎসক, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, পুরোহিত, ইমাম-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে মঙ্গলবার ওই সচেতনতা শিবির অনুষ্ঠিত হয় মগরাহাট মুসলিম অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল ইন্সটিটিউট ময়দানে।

এ ধরনের সামাজিক সমস্যা থেকে মুক্ত করতে উপস্থিত সকলকে শপথবাক্য পাঠ করান সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহ এবং মানব পাচার ও শিশু নিগ্রহ সম্পর্কিত দুটি নাটক প্রদর্শিত হয়। বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত নাটকে দেখানো হয়, অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার পর গার্হস্থ্য ঝামেলায় নিজেকে শেষ করে দেয় এক গৃহবধূ। ওই নাটকের প্রসঙ্গ তুলে সাংসদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই ঘটনার জন্য বেশিরভাগই দায়ী হন অভিভাবক। তাঁরা আপদ মনে করে নিজের কন্যাসন্তানকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেন। সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করুন। সমাজকে এঁরা এগিয়ে নিয়ে যাবে।

নারী শিক্ষায় অভিভাবকরা জোর দিলেই বাল্যবিবাহ অনেকটাই রুখে দেওয়া যাবে, বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। ইউনিসেফ ও আমেরিকান জেসিশ ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের মতো বিশ্বমানের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে মানব পাচার ও বাল্যবিবাহ নিয়ে কাজ করেছেন রুবিনা খাতুন।

২০১৭-১৮ সালে মগরাহাট ২ ব্লকে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা, মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে না, এই আত্মসম্মান থেকে বাঁচতে অভিভাবকরা কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন। উপস্থিত ছিলেন ডিএসডব্লুও সঞ্জীব রক্ষিত, ডিএসপিসি-র চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় টামটা,  বিধায়ক নমিতা সাহা, মহকুমাশাসক অঞ্জন ঘোষ, মহিলা থানার ওসি পিঙ্কি ঘোষ প্রমুখ।

এ ধরনের এক সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সচেতনতা শিবির আয়োজনের জন্য স্থানীয় বিডিও সেখ আবদুল্লাহকে প্রশংসা করেন সর্বস্তরের মানুষ।

এ বিষয়ে সেখ আবদুল্লাহ বলেন, সম্প্রতি স্কুল খোলার পর বাল্যবিবাহর তথ্য আমাদের সামনে আসে। আর এটাকে রুখতে সব ধরনের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই সচেতনতা শিবিরের আয়োজন। তিনি মনে করেন, যৌথ প্রচেষ্টাই সামাজিক এই সমস্যাকে দূর করা সম্ভব হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাল্যবিবাহ রুখতে বিশেষ উদ্যোগ বিডিও সেখ আবদুল্লাহ-র

আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, বুধবার

নাজির হোসেন লস্কর, মগরাহাট:  কোভিড পরিস্থিতি সামাল দেওয়া পর কয়েক মাস হল শুরু হয়েছে স্কুলের পঠনপাঠন। এরই মধ্যেই ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে দেখা যাচ্ছে উপস্থিতির হার অনেকটাই কম। শুরু করেন খোঁজ খবর।

জানা যাচ্ছে, কোভিডের মধ্যে অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে কম বয়সেই। অন্য দিকে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে খবর আসছে যে,  এলাকায় প্রি-ম্যারেজ প্রেগনেন্সি বাড়ছে। ঘটছে শিশুমৃত্যুও। এমন পরিস্থিতিতে বাল্যবিবাহ রোখা না গেলে এই বৃদ্ধির হার আটকানো সম্ভব হবে না। মাঠে নেমে পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট-২ ব্লক প্রশাসন।

আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থান রুখতে ১৪০০-রও বেশি খুন, ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু: রাষ্ট্রসংঘ

বাল্যবিবাহ, মানব পাচার ও নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এক সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করল মগরাহাট-২ ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতি।

আরও পড়ুন: বুলডোজার, উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে হঠাৎ বাঙালি মুসলিমদের প্রতি ভিন্নসুর হিমন্তর

বাল্যবিবাহ রুখতে বিশেষ উদ্যোগ বিডিও সেখ আবদুল্লাহ-র

আরও পড়ুন: ওজন-উচ্চতা নিয়ে বৈষম্য রুখতে আইন নিউ ইয়র্কে

 

মগরাহাট-২ বিডিও সেখ আবদুল্লাহর উদ্যোগে স্থানীয় জন প্রতিনিধি, পুলিশ-প্রশাসন, চিকিৎসক, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, পুরোহিত, ইমাম-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে মঙ্গলবার ওই সচেতনতা শিবির অনুষ্ঠিত হয় মগরাহাট মুসলিম অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল ইন্সটিটিউট ময়দানে।

এ ধরনের সামাজিক সমস্যা থেকে মুক্ত করতে উপস্থিত সকলকে শপথবাক্য পাঠ করান সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহ এবং মানব পাচার ও শিশু নিগ্রহ সম্পর্কিত দুটি নাটক প্রদর্শিত হয়। বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত নাটকে দেখানো হয়, অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার পর গার্হস্থ্য ঝামেলায় নিজেকে শেষ করে দেয় এক গৃহবধূ। ওই নাটকের প্রসঙ্গ তুলে সাংসদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই ঘটনার জন্য বেশিরভাগই দায়ী হন অভিভাবক। তাঁরা আপদ মনে করে নিজের কন্যাসন্তানকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেন। সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করুন। সমাজকে এঁরা এগিয়ে নিয়ে যাবে।

নারী শিক্ষায় অভিভাবকরা জোর দিলেই বাল্যবিবাহ অনেকটাই রুখে দেওয়া যাবে, বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। ইউনিসেফ ও আমেরিকান জেসিশ ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের মতো বিশ্বমানের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে মানব পাচার ও বাল্যবিবাহ নিয়ে কাজ করেছেন রুবিনা খাতুন।

২০১৭-১৮ সালে মগরাহাট ২ ব্লকে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা, মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে না, এই আত্মসম্মান থেকে বাঁচতে অভিভাবকরা কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন। উপস্থিত ছিলেন ডিএসডব্লুও সঞ্জীব রক্ষিত, ডিএসপিসি-র চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় টামটা,  বিধায়ক নমিতা সাহা, মহকুমাশাসক অঞ্জন ঘোষ, মহিলা থানার ওসি পিঙ্কি ঘোষ প্রমুখ।

এ ধরনের এক সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সচেতনতা শিবির আয়োজনের জন্য স্থানীয় বিডিও সেখ আবদুল্লাহকে প্রশংসা করেন সর্বস্তরের মানুষ।

এ বিষয়ে সেখ আবদুল্লাহ বলেন, সম্প্রতি স্কুল খোলার পর বাল্যবিবাহর তথ্য আমাদের সামনে আসে। আর এটাকে রুখতে সব ধরনের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই সচেতনতা শিবিরের আয়োজন। তিনি মনে করেন, যৌথ প্রচেষ্টাই সামাজিক এই সমস্যাকে দূর করা সম্ভব হবে।