আপনিই তো ব্যর্থ, পদত্যাগ করুন, শাহকে জবাব চন্দ্রিমার

- আপডেট : ১ জুন ২০২৫, রবিবার
- / 49
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে রবিবার, জামাইষষ্ঠীর দিন কলকাতায় কার্যত ঝটিকা সফর করে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বললেন, রিগিং ছাড়া ভোট হলে তাঁর ‘জামানত জব্দ’ হবে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং সীমান্ত অনুপ্রবেশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অমিত শাহর আপত্তিকর মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের মন্তব্য, আপনিই তো ব্যর্থ, পদত্যাগ করুন।
রবিবার শাহের সভা শেষের পর বিকেলে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সাগরিকা ঘোষরা। চন্দ্রিমা বলেন, মনে রাখবেন, জামাইষষ্ঠীর দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মতো বড় প্রেক্ষাগৃহে বিজেপির কর্মসূচির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই এমনটা করেছেন। আর বলছেন, হিংসা ছাড়া ভোট হলে নাকি তৃণমূলের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। আমরা প্রশ্ন করতে চাই, ভোট কি রাজ্য সরকার করায়? তা তো দিল্লির নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। ভোটে হিংসা হলে তাহলে নির্বাচন কমিশনেরই দায়।’
এদিন রাজ্যে সীমান্ত অনুপ্রবেশ নিয়ে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণের জবাবে চন্দ্রিমা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিএসএফ কার দায়িত্বে রয়েছে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজের ব্যর্থতারই প্রমাণ দিচ্ছেন। যার দায় নিয়ে আপনারই পদত্যাগ করা উচিত।
চন্দ্রিমা এদিন বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে কোনও রাজনীতি তৃণমূল চায় না। সেই কারণেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য দেশে দেশে গলা ফাটাচ্ছেন। আর অপারেশন সিঁদুর বলে বিজেপি নারীর সম্মান নিয়ে খেলা করছেন। আলিপুরদুয়ারের সভায় সুকান্ত মজুমদারের ‘অপারেশন বেঙ্গল’ -এর মন্তব্য নিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এদিন প্রশ্ন করেছেন, আপনারা আসলে জোর জবরদস্তি করে বাংলাকে দখলের চেষ্টা করছেন।
রবিবার নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে বকেয়া মেটানোর খতিয়ান তুলে ধরলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দাবি করলেন, গত ১০ বছরে অর্থাৎ এনডিএ আমলে বাংলার জন্য ৮ লক্ষ ২৭ হাজার কোটি টাকা ছেড়েছে কেন্দ্র। যা ইউপিএ আমলের চার গুণ।’
এর পালটা যুক্তি দিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বললেন, ‘মাছের তেলে মাছ ভাজা।’ আমাদের এখান জিএসটি বাবদ টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে তার প্রাপ্য অংশই দিচ্ছে না। বকেয়া মেটাচ্ছে না। এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এদিন বলেন, ‘এখনও রাজ্যের পাওয়া ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। মনরেগার টাকা দিচ্ছে না। মানুষের প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। এদিকে কুমিরের কান্না কাঁদছেন।’
এদিন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাগরিকা ঘোষ বলেন, অমিত শাহ শুধু বিভাজনের রাজনীতি করতে জানেন। এতে দেশ আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। আর এভাবে মানুষের মধ্যে বিভাজন করে বাংলার কোনও লাভ হবে না।
রবিবার নেতাজি ইন্ডোরে শাহ’র ‘সওয়াল’ আর ভবনে তৃণমূলের ‘জবাব’ নিয়েই ছাব্বিশের ভোটের যুগলবন্দি জমে উঠল শহরে।