‘যুদ্ধ শুরু করেনি ইরান, প্রতিক্রিয়া ছিল আত্মরক্ষামূলক ও সীমিত’: রাষ্ট্রসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত

- আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, বুধবার
- / 22
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত সাইয়েদ ইরাভানি জোরালো ভাষায় ইসরাইলের ধারাবাহিক ‘আগ্রাসী পদক্ষেপ’-এর নিন্দা করে বলেছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তা ‘আত্মরক্ষার অংশ এবং সীমিত পরিসরে।’
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সদর দফতরে এক সেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইরাভানি স্পষ্ট করে বলেন, ‘ইরান কখনও কোনও সংঘাত শুরু করেনি।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইরান আগ্রাসনকারী নয়।’ সেই সঙ্গে ইরাভানি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ইসরাইলি শাসন ব্যবস্থা আমেরিকার সমর্থনে যে হামলা চালাচ্ছে তা রাষ্ট্রসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। ইরানের ভূখণ্ডে ইসরাইলের ‘উদ্দাম আগ্রাসনের’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতির ‘লঙ্ঘনের জ্বলন্ত উদাহরণ।’
ইরাভানি তেল আবিব প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেন, কারণ তারা বেসামরিক কাঠামো এবং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনার উপর হামলা চালিয়েছে; যেগুলো রাষ্ট্রসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থার নজরদারিতে রয়েছে। তিনি সতর্ক করেন, এই ধরনের হামলা যদি চলতেই থাকে তাহলে তা ‘ভয়াবহ পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে।
সেশনে ইরাভানি বলেন, ‘রাষ্ট্রসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইরান আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছে। আমাদের প্রতিক্রিয়া ছিল সুনির্দিষ্ট, সীমিত এবং কেবল সেইসব উৎসকে লক্ষ্য করে, যেখান থেকে আক্রমণ এসেছিল।’ তিনি বলেন, ‘প্রি-এম্পটিভ সেলফ-ডিফেন্স’ বা আগেই আক্রমণ ঠেকাতে হামলা চালানোর যে যুক্তি কিছু ইসরাইলি নেতা দিচ্ছেন, সেটা আইনত ভুল ও বিপজ্জনক। যদি সবাই এই যুক্তি মানতে শুরু করে, তাহলে যুদ্ধ না করার যে গুরুত্বপূর্ণ নীতি রাষ্ট্রসংঘ মেনে চলে, সেটা ভেঙে পড়বে।
ইরাভানি পশ্চিমা শক্তিগুলোর দ্বিচারিতারও তীব্র সমালোচনা করেন; বিশেষ করে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের; যারা শুধু ইরানের ক্ষেত্রেই নয়, বরং গাজা, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনেও ইসরাইলের আগ্রাসন থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই সব অঞ্চলের তিক্ত অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তার মৌলিক দায়িত্ব পালন করতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে।’ ইরানের এই রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি তারা এখন কার্যকর কোনও পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ইরান নিজের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় দৃঢ়ভাবে লড়াই চালিয়ে যাবে। ‘এটা শুধু আমাদের অধিকার নয়,’ তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের দায়িত্ব।’