২০ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘সত্যি প্রমাণিত হলে শাস্তি মাথা পেতে নেব’, মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস কার্তিক মহারাজের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২০ মে ২০২৪, সোমবার
  • / 13

পুবের কলম প্রতিবেদক: ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ (স্বামী প্রদীপ্তানন্দ)-এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে আইনি চিঠি পাঠালেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ।

মহারাজের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য বিভ্রান্তিমূলক। প্রমাণ দিতে পারলে শাস্তি মাথা পেতে নেব। কার্তিক মহারাজ মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি চিঠি পাঠিয়ে জানালেন, ‘সন্ন্যাসীদের নিয়ে বলা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ক্ষমা না চাইলে, আইনি মামলা করবেন। এই নিয়ে কার্তিক মহারাজ জানিয়েছেন, ‘আমি কিছুই বলিনি। ‘উনার’ অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। তৃণমূল কর্মীদের বুথ থেকে বার করে দেওয়ার কথা আমি কোথাওই কখনও বলিনি। আমি সন্ন্যাসী। আমি কোনও দল করি না।’

প্রসঙ্গত, গত শনিবার আরামবাগের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘সব সাধু তো সমান হয় না। এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ রয়েছেন, কার্তিক মহারাজ। আমি শুনেছি ওখানে অনেক দিন ধরে রয়েছেন তিনি। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্টকে বুথে বসতে দেব না। তাকে আমি আর শ্রদ্ধা করি না।

মমতা আরও বলেন, ‘আমি চিহ্নিত করেছি, কারা এগুলো করেছে। আসানসোলের একটা রামকৃষ্ণ মিশন রয়েছে। আমি কি রামকৃষ্ণ মিশনকে সাহায্য করিনি? সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, আপনাদের অস্তিত্ব নিয়ে, স্বাধিকার নিয়ে, তখন কিন্তু আমি পুরো সমর্থন করেছিলাম। ইসকনেও আমি ৭০০ একর জমি দিয়েছি। দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে, বলে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলো। কেন করবে সাধু-সন্তরা একাজ?

সন্ন্যাসীদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষ দিলীপ মহারাজ বলেন, ‘দেশ জুড়ে তো প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই খোদ এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। আর আমরা কী বলব? প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছেন।’

এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘ভারতের যে কোনও নাগরিক যে কোনও বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকনের মতো সংস্থাগুলির প্রতি আমাদের আস্থা, বিশ্বাস এবং সমর্থন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই সংগঠনগুলিকে বরাবর সাহায্য করে এসেছেন। পাশে থেকেছেন। আগামী দিনেও থাকবেন। কিন্তু বিজেপি যে ভাবে এই সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলির রাজনীতিকরণ করে তাদের রাজনীতি করতে বাধ্য করেছে, আমাদের আসল প্রতিবাদ তার বিরুদ্ধে। অন্য কারোর প্রতি নয়।’

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘সত্যি প্রমাণিত হলে শাস্তি মাথা পেতে নেব’, মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস কার্তিক মহারাজের

আপডেট : ২০ মে ২০২৪, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ (স্বামী প্রদীপ্তানন্দ)-এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে আইনি চিঠি পাঠালেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ।

মহারাজের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য বিভ্রান্তিমূলক। প্রমাণ দিতে পারলে শাস্তি মাথা পেতে নেব। কার্তিক মহারাজ মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি চিঠি পাঠিয়ে জানালেন, ‘সন্ন্যাসীদের নিয়ে বলা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ক্ষমা না চাইলে, আইনি মামলা করবেন। এই নিয়ে কার্তিক মহারাজ জানিয়েছেন, ‘আমি কিছুই বলিনি। ‘উনার’ অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। তৃণমূল কর্মীদের বুথ থেকে বার করে দেওয়ার কথা আমি কোথাওই কখনও বলিনি। আমি সন্ন্যাসী। আমি কোনও দল করি না।’

প্রসঙ্গত, গত শনিবার আরামবাগের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘সব সাধু তো সমান হয় না। এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ রয়েছেন, কার্তিক মহারাজ। আমি শুনেছি ওখানে অনেক দিন ধরে রয়েছেন তিনি। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্টকে বুথে বসতে দেব না। তাকে আমি আর শ্রদ্ধা করি না।

মমতা আরও বলেন, ‘আমি চিহ্নিত করেছি, কারা এগুলো করেছে। আসানসোলের একটা রামকৃষ্ণ মিশন রয়েছে। আমি কি রামকৃষ্ণ মিশনকে সাহায্য করিনি? সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, আপনাদের অস্তিত্ব নিয়ে, স্বাধিকার নিয়ে, তখন কিন্তু আমি পুরো সমর্থন করেছিলাম। ইসকনেও আমি ৭০০ একর জমি দিয়েছি। দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে, বলে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলো। কেন করবে সাধু-সন্তরা একাজ?

সন্ন্যাসীদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষ দিলীপ মহারাজ বলেন, ‘দেশ জুড়ে তো প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই খোদ এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। আর আমরা কী বলব? প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছেন।’

এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘ভারতের যে কোনও নাগরিক যে কোনও বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকনের মতো সংস্থাগুলির প্রতি আমাদের আস্থা, বিশ্বাস এবং সমর্থন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই সংগঠনগুলিকে বরাবর সাহায্য করে এসেছেন। পাশে থেকেছেন। আগামী দিনেও থাকবেন। কিন্তু বিজেপি যে ভাবে এই সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলির রাজনীতিকরণ করে তাদের রাজনীতি করতে বাধ্য করেছে, আমাদের আসল প্রতিবাদ তার বিরুদ্ধে। অন্য কারোর প্রতি নয়।’