রাতের অন্ধকারে দরজায় লাথি মেরে ভেঙে ফেলার উপক্রম: আঞ্জারুল
বাংলা বললেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ ,হরিয়ানায় বাঙালি নির্যাতন চরমে

- আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার
- / 232
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বিজেপি সরকারের প্ররোচনায় সমস্ত ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর আক্রমণ অব্যাহত। ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের। এই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বাঙালি মানেই ‘বিদেশি’ এমন ধারণা পোষণ করছে ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের সরকার গুলো।
ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, দিল্লির মতো রাজ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশি হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। ব্যতিক্রম নয় গুরুগ্রাম। সে রাজ্যে ইতিমধ্যেই ১০ জনকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্কের রেশ ছড়িয়েছে সেখানকার বাঙালি পরিযায়ী বস্তিগুলিতে। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে তাঁদের দরজায় এসে জোরে জোরে লাথি মারা হচ্ছে। মধ্য রাতে বাধ্য করা হচ্ছে দরজা খুলতে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনীয় সব নথি দেখিয়েও মিলছে না শান্তি। আধার কার্ড দেখালেও তাদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। টেনেহিঁচ়ড়ে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে থানায়। তারপর আটক।
এমনই ঘটনার শিকার হয়েছেন মালদার এক বাসিন্দা। নাম নাম আঞ্জারুল। পাঁচ বছর আগে পেটের দায়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন তিনি। যান হরিয়ানায়। সেখানে টিগরগাঁওতেই থাকেন তিনি। পেশায় রঙ মিস্ত্রি তিনি। দিন তিনেক আগেই নিজের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
এই প্রেক্ষিতে আঞ্জারুল সংবাদ মাধ্যমে জানান, বাংলাদেশি সন্দেহে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। আধার কার্ড দেখিয়েও কাজ হয়নি। আপাতত তাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আঞ্জারুলের আধার কার্ড নিজেদের জিম্মায় রেখে দিয়েছেন তারা।
আঞ্জারুলের স্ত্রী বলেন, ‘আমাকেও মেরেছিল ওরা (হরিয়ানা পুলিশ)। আধার কার্ড দিয়েছিলাম। বলেছিলাম পরিচয়পত্র দেখার দেখে নিন। এত রাতে কেন তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই কথা বলতেই সেই পুলিশ সজোর চড় মারে আমাকে। যার জেরে ডান কানে কম শুনছি।’
পুলিশের এহেন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে একে একে রাজ্যফিরছে ওই বাঙালি বস্তির বাসিন্দারা। যারা রয়ে গিয়েছেন, তারা পালানোর কথা ভাবছেন। বাকি ঘরগুলোতে তালা ঝুলছে। কিন্তু যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা কোথায় যাচ্ছেন?এই প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয়রা বলেন, ডিটেনশন ক্যাম্পে। গুরুগ্রামের সেক্টর ৪০-এর একটি কমিউনিটি সেন্টারে ডিটেনশন ক্যাম্প গড়ে তুলেছেন তারা। স্থানীয়দের দাবি, গত পাঁচদিন ধরে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক হওয়া ১০০-এর অধিক বাঙালিকে এনে রাখা হয়েছিল সেই সরকারি কমিউনিটি হলেই। তবে আপাতত সেটিও ফাঁকা। হাতেগোনা দু-এক জন থাকলেও, সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আটক বাঙালিদের।