২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার
  • / 40

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের শিরদাঁড়া সোজা রেখে কাজ করায় মোটেও সন্তুষ্ট নয় বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের নামে নালিশ জানিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা। পাশাপাশি  রাজ্যপালকে অবিলম্বে সরানোর দাবিও জানিয়েছেন।

যে দুই নেতা ওই দাবি জানিয়েছেন তার মধ্যে একজন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে না সরালে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেবেন।

আরও পড়ুন: আরবিআই-এর গভর্নরের মুকুটে নয়া পালক! পেলেন আন্তর্জাতিক সম্মান  

এ বিষয়ে বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র সুকান্ত মজুমদার কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন: Breaking: সাপ্তাহিক রিপোর্ট না পেয়ে, ৬ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে শো-কজ রাজ্যপালের

রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে জগদীপ ধনকড় যেভাবে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন তাতে যথেষ্ট খুশ ছিলেন সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারী-দিলীপ ঘোষরা। কিন্তু ধনকড়ের পরে অস্থায়ী রাজ্যপালের দায়িত্ব নিয়ে বাংলায় আসা লা গনেশনের সময়ে রাজভবনের সঙ্গে পদ্ম শিবিরের নেতাদের দুরত্ব তৈরি হয়।

আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে শপথ গ্রহণ সভায় রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা

সঙ্ঘের দীর্ঘদিনের প্রচারক লা গনেশন বঙ্গ বিজেপি নেতাদের কথা শুনে ধনকড়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কু-মন্তব্য করেননি। রাজ্য সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে চাননি। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধেও দিল্লির দরবারে নালিশ ঠুকেছিলেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।

এমনকী রাজ্যপালকে কু‍ৎসিত ভাষায় আক্রমণও করেছিলেন। বঙ্গ বিজেপি নেতাদের অশালীন আচরণে তিতিবিরক্ত হয়ে বাংলার সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছিলেন লা গনেশন। তাঁর জায়গায় নতুন রাজ্যপাল হয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ তথা দুঁদে আমলা সি ভি আনন্দ বোস।

নতুন রাজ্যপালকে নিয়ে প্রথম দিকে অনেকটাই উ‍ৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারীরা। কিন্তু দুঁদে আমলা সি ভি আনন্দ বোস কিছুদিনের মধ্যেই বুঝিয়ে দেন, তিনি কোনওভাবেই সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে জগদীফ ধনকড়ের মতো পায়ে পা বাঁধিয়ে প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্ঘাতে যাবেন না।

বরং রাজ্য প্রশাসন যাতে সুষ্ঠভাবে চলে, তা নিশ্চিত করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই একাধিক অনুষ্ঠানে তিনি যেমন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন, তেমনই বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে রাজ্য সরকারের লিখিত ভাষণও পাঠ করেছেন। আর তাতেই গাত্রদাহ শুরু হয়েছে বিরোধি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। বুধবারই রাজ্যপালের ভাষণ পাঠের সময়ে যেমন শোরগোল করেছেন বিজেপি বিধায়করা, তেমনই ভাষণ বয়কট করে সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। রাজ্যপালকে বেনজিরভাবে আক্রমণও করেছেন।

দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে রাজ্যপালের নামে নালিশ জানিয়ে বঙ্গ বিজেপির নেতারা বলেছেন, ‘সি ভি আনন্দ বোস কার্যত রাজ্য সরকারের হয়ে কাজ করছেন। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের কাজকর্মের যে প্রশংসা করে চলেছেন তা রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। জগদীফ ধনকড়ের সময়ে প্রতি মুহুর্তে চাপের মুখে থাকত তৃণমূল সরকার। সেই চাপ না থাকায় যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য প্রশাসনের কাছে। সি ভি আনন্দ বোস যত বেশি সময় রাজ্যপাল থাকবেন ততই তৃণমূলের রাজনৈতিক সুবিধা হবে।’

রাজ্যপালের নামে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানানো এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, ‘দিল্লি আশ্বাস দিয়েছে ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের ভোট মিটে গেলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। তাই চুপ করে থাকছি। রাজ্যপাল না সরলে যে দায়িত্ব রয়েছে তা ছেড়ে দেব।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপি

আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের শিরদাঁড়া সোজা রেখে কাজ করায় মোটেও সন্তুষ্ট নয় বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের নামে নালিশ জানিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা। পাশাপাশি  রাজ্যপালকে অবিলম্বে সরানোর দাবিও জানিয়েছেন।

যে দুই নেতা ওই দাবি জানিয়েছেন তার মধ্যে একজন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে না সরালে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেবেন।

আরও পড়ুন: আরবিআই-এর গভর্নরের মুকুটে নয়া পালক! পেলেন আন্তর্জাতিক সম্মান  

এ বিষয়ে বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র সুকান্ত মজুমদার কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন: Breaking: সাপ্তাহিক রিপোর্ট না পেয়ে, ৬ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে শো-কজ রাজ্যপালের

রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে জগদীপ ধনকড় যেভাবে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন তাতে যথেষ্ট খুশ ছিলেন সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারী-দিলীপ ঘোষরা। কিন্তু ধনকড়ের পরে অস্থায়ী রাজ্যপালের দায়িত্ব নিয়ে বাংলায় আসা লা গনেশনের সময়ে রাজভবনের সঙ্গে পদ্ম শিবিরের নেতাদের দুরত্ব তৈরি হয়।

আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে শপথ গ্রহণ সভায় রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা

সঙ্ঘের দীর্ঘদিনের প্রচারক লা গনেশন বঙ্গ বিজেপি নেতাদের কথা শুনে ধনকড়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কু-মন্তব্য করেননি। রাজ্য সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে চাননি। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধেও দিল্লির দরবারে নালিশ ঠুকেছিলেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।

এমনকী রাজ্যপালকে কু‍ৎসিত ভাষায় আক্রমণও করেছিলেন। বঙ্গ বিজেপি নেতাদের অশালীন আচরণে তিতিবিরক্ত হয়ে বাংলার সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছিলেন লা গনেশন। তাঁর জায়গায় নতুন রাজ্যপাল হয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ তথা দুঁদে আমলা সি ভি আনন্দ বোস।

নতুন রাজ্যপালকে নিয়ে প্রথম দিকে অনেকটাই উ‍ৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারীরা। কিন্তু দুঁদে আমলা সি ভি আনন্দ বোস কিছুদিনের মধ্যেই বুঝিয়ে দেন, তিনি কোনওভাবেই সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে জগদীফ ধনকড়ের মতো পায়ে পা বাঁধিয়ে প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্ঘাতে যাবেন না।

বরং রাজ্য প্রশাসন যাতে সুষ্ঠভাবে চলে, তা নিশ্চিত করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই একাধিক অনুষ্ঠানে তিনি যেমন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন, তেমনই বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে রাজ্য সরকারের লিখিত ভাষণও পাঠ করেছেন। আর তাতেই গাত্রদাহ শুরু হয়েছে বিরোধি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। বুধবারই রাজ্যপালের ভাষণ পাঠের সময়ে যেমন শোরগোল করেছেন বিজেপি বিধায়করা, তেমনই ভাষণ বয়কট করে সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। রাজ্যপালকে বেনজিরভাবে আক্রমণও করেছেন।

দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে রাজ্যপালের নামে নালিশ জানিয়ে বঙ্গ বিজেপির নেতারা বলেছেন, ‘সি ভি আনন্দ বোস কার্যত রাজ্য সরকারের হয়ে কাজ করছেন। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের কাজকর্মের যে প্রশংসা করে চলেছেন তা রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। জগদীফ ধনকড়ের সময়ে প্রতি মুহুর্তে চাপের মুখে থাকত তৃণমূল সরকার। সেই চাপ না থাকায় যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য প্রশাসনের কাছে। সি ভি আনন্দ বোস যত বেশি সময় রাজ্যপাল থাকবেন ততই তৃণমূলের রাজনৈতিক সুবিধা হবে।’

রাজ্যপালের নামে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানানো এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, ‘দিল্লি আশ্বাস দিয়েছে ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের ভোট মিটে গেলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। তাই চুপ করে থাকছি। রাজ্যপাল না সরলে যে দায়িত্ব রয়েছে তা ছেড়ে দেব।’