০৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কার্বনমুক্ত গ্রিড, স্বর্ণপদক বর্ধমানের লতিফের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 26

সফিকুল ইসলাম (দুলাল), বর্ধমান: অপ্রচলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কার্বনমুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং মাইক্রোগ্রিড নিয়ে গবেষণা করে তাক লাগিয়ে দিলেন আবদুল লতিফ। বর্ধমান শহরের জেলখানা মোড়ের মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে আবদুল লতিফ ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। জেদ ছিল বড় হয়ে একটা কিছু করে দেখাবে। সেখানে তিনি আজ অনেকটাই সফল। তার সাফল্যে গর্বিত বর্ধমানবাসী।

সম্প্রতি তাঁকে ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি (শিলচর)। এনআইটি-তে সবার মধ্যে সেরা হয়ে পেয়েছেন গোল্ড মেডেল।

আরও পড়ুন: বর্ধমানে শুরু কৃষ্ণসায়র উৎসব, গোলাপবাগকে গোলাপের বাগান দিয়ে সাজানোর অনুরোধ মন্ত্রী রথীন ঘোষের

আমরা সাধারণত যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তা বিদ্যুৎকেন্দ্র, সোলার প্ল্যান্ট, জলবিদ্যুৎ, বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ একই জায়গায় যুক্ত করতে গ্রিডের ব্যবহার হয়। এর কাজ হল বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আগত বিদ্যুৎকে বণ্টন করা। তবে এসব ক্ষেত্রে কার্বনের ব্যবহার পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। কার্বন-দূষণের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটছে, যা নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানী মহল। এইখানেই রয়েছে আবদুল লতিফের গবেষণার গুরুত্ব। পিএইচডি করার সময় তাঁর গবেষণাপত্রের অন্যতম বিষয় ছিল গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে কার্বনমুক্ত মাইক্রোগ্রিড এবং তার নিয়ন্ত্রণ। আর তার এই গবেষণার স্বীকৃতি দিয়ে তাকে পিএইচডি ডিগ্রি দিয়েছে এনআইটি-শিলচর।

আরও পড়ুন: কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি, বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ

ইতিমধ্যে তাঁর এই গবেষণা কাজ ২৫টি খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

আরও পড়ুন: বর্ধমানে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, জেলা কার্যালয়ের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ

এ ছাড়াও গত ৪ নভেম্বর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজির ২০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে সমস্ত বিভাগের মধ্যে ‘বেস্ট ডক্টরাল অ্যাওয়ার্ড অফ ইন্সটিটিউট’ এবং স্বর্ণপদক সম্মানে ভূষিত করা হয়। লতিফের পিতা আবদুস শরিফ বর্ধমানের একজন ব্যবসায়ী। তার এই সাফল্যে বাবা ছাড়া মা এবং ভাইয়ের অবদানও উল্লেখযোগ্য। পিতা আবদুস শরীফ বলেন, ‘ছেলের সাফল্যে আমরা খুবই খুশি। ছেলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করুক। আগামী প্রজন্মের পথনির্দেশক হোক।’

তাঁর এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীরা। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানী ড. হুসেইন, জাপানের বিজ্ঞানী ড. উস্তন, কাতারের অধ্যাপক ড. ইকবাল প্রমুখ। পিএইচডি চলাকালীন এই কৃতী গবেষক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি ফেলোশিপ (ড্যাড) পেয়ে জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ড্রেসডেনে ইন্টার্নশিপ করেন। ড. আবদুল লতিফ হাওড়ার আল-আমীন মিশনের প্রাক্তন ছাত্র। তাঁর এই সাফল্যের জন্য তিনি মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম. নুরুল ইসলামকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি তাঁর পিএইচডি সুপার ভাইজার প্রফেসর দুলালচন্দ্র দাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন।

বর্তমানে ড. লতিফ আবু ধাবির খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার পদে কর্মরত।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কার্বনমুক্ত গ্রিড, স্বর্ণপদক বর্ধমানের লতিফের

আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার

সফিকুল ইসলাম (দুলাল), বর্ধমান: অপ্রচলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কার্বনমুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং মাইক্রোগ্রিড নিয়ে গবেষণা করে তাক লাগিয়ে দিলেন আবদুল লতিফ। বর্ধমান শহরের জেলখানা মোড়ের মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে আবদুল লতিফ ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। জেদ ছিল বড় হয়ে একটা কিছু করে দেখাবে। সেখানে তিনি আজ অনেকটাই সফল। তার সাফল্যে গর্বিত বর্ধমানবাসী।

সম্প্রতি তাঁকে ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি (শিলচর)। এনআইটি-তে সবার মধ্যে সেরা হয়ে পেয়েছেন গোল্ড মেডেল।

আরও পড়ুন: বর্ধমানে শুরু কৃষ্ণসায়র উৎসব, গোলাপবাগকে গোলাপের বাগান দিয়ে সাজানোর অনুরোধ মন্ত্রী রথীন ঘোষের

আমরা সাধারণত যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তা বিদ্যুৎকেন্দ্র, সোলার প্ল্যান্ট, জলবিদ্যুৎ, বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ একই জায়গায় যুক্ত করতে গ্রিডের ব্যবহার হয়। এর কাজ হল বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আগত বিদ্যুৎকে বণ্টন করা। তবে এসব ক্ষেত্রে কার্বনের ব্যবহার পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। কার্বন-দূষণের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটছে, যা নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানী মহল। এইখানেই রয়েছে আবদুল লতিফের গবেষণার গুরুত্ব। পিএইচডি করার সময় তাঁর গবেষণাপত্রের অন্যতম বিষয় ছিল গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে কার্বনমুক্ত মাইক্রোগ্রিড এবং তার নিয়ন্ত্রণ। আর তার এই গবেষণার স্বীকৃতি দিয়ে তাকে পিএইচডি ডিগ্রি দিয়েছে এনআইটি-শিলচর।

আরও পড়ুন: কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি, বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ

ইতিমধ্যে তাঁর এই গবেষণা কাজ ২৫টি খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

আরও পড়ুন: বর্ধমানে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, জেলা কার্যালয়ের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ

এ ছাড়াও গত ৪ নভেম্বর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজির ২০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে সমস্ত বিভাগের মধ্যে ‘বেস্ট ডক্টরাল অ্যাওয়ার্ড অফ ইন্সটিটিউট’ এবং স্বর্ণপদক সম্মানে ভূষিত করা হয়। লতিফের পিতা আবদুস শরিফ বর্ধমানের একজন ব্যবসায়ী। তার এই সাফল্যে বাবা ছাড়া মা এবং ভাইয়ের অবদানও উল্লেখযোগ্য। পিতা আবদুস শরীফ বলেন, ‘ছেলের সাফল্যে আমরা খুবই খুশি। ছেলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করুক। আগামী প্রজন্মের পথনির্দেশক হোক।’

তাঁর এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীরা। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানী ড. হুসেইন, জাপানের বিজ্ঞানী ড. উস্তন, কাতারের অধ্যাপক ড. ইকবাল প্রমুখ। পিএইচডি চলাকালীন এই কৃতী গবেষক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি ফেলোশিপ (ড্যাড) পেয়ে জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ড্রেসডেনে ইন্টার্নশিপ করেন। ড. আবদুল লতিফ হাওড়ার আল-আমীন মিশনের প্রাক্তন ছাত্র। তাঁর এই সাফল্যের জন্য তিনি মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম. নুরুল ইসলামকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি তাঁর পিএইচডি সুপার ভাইজার প্রফেসর দুলালচন্দ্র দাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন।

বর্তমানে ড. লতিফ আবু ধাবির খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার পদে কর্মরত।