২২ জুন ২০২৫, রবিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিভিসির বাড়তি জলে একাধিক জেলায় বন্যার শঙ্কা, ক্ষুব্ধ নবান্ন

সুস্মিতা
  • আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 25

ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তা রাজ্যের

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই বড় আকার ধারণ করছে। চন্দ্রকোনার পর ডুবতে শুরু করেছে ঘাটালের বিভিন্ন এলাকা। এরই মধ্যে আরও আশঙ্কার কালো মেঘ পশ্চিমবঙ্গের আকাশে। শুক্রবার রাত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে ডিভিসি। যার ফলে একাধিক জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১টা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ৭০,৪৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে। এদিকে নবান্নের কর্তাদের দাবি, বারবার বলা সত্ত্বেও রাজ্যকে না জানিয়ে এই জল ছেড়েছে ডিভিসি। যার ফলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তা দিয়েছে নবান্ন। ডিভিসি-র দাবি, ঝাড়খণ্ডে প্রবল বর্ষণের জেরে জল বাড়ছে দামোদর-বরাকরে, বৃষ্টির জেরে মাইথন-পাঞ্চেত থেকে আরও বেশি জল ছাড়া হচ্ছে। ফলে নিম্ন দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীতে জলস্তর আরও বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর সেটা হলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমানের একাধিক জায়গায়। রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তর জানিয়েছে, শিলাবতী নদীতে জল বাড়ায় মেদিনীপুর ও ঘাটাল ডিভিশনের বহু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছিল। কিন্তু দপ্তরের তৎপড়তায় গড়বেতা ১ ও ২ ব্লক ও চন্দ্রকোনা টাউন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। ঘাটাল ব্লকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে।

মন্ত্রীর কথায়, ৫৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। যা দুর্গতদের দেওয়া হবে। পানীয় জলের জন্য ট্র্যাঙ্কার ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০ হাজার জামাকাপড় বিলি করা হয়েছে প্লাবিত এলাকায়। মানস বলেন, ‘এই বন্যায় প্রায় ২২০৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাগাতার খোঁজ নিচ্ছেন। গ্রামবাসী থেকে প্রসাশনের উচ্চস্তরের প্রতিটি ব্যক্তি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। ‘৭৮ সালের পর এই রকম হড়পা বান আসেনি। আমাদের ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজও চলছিল। তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত শনিবার রূপনারায়ণ ফুলে উঠেছিল। এখন জল একটু নামছে। বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। আর বৃষ্টি না হয় সেটাই প্রার্থনা।’

এদিকে ঝাড়গ্রামের বিনপুর ১ ব্লকের লালগড় থানার নেপুরা অঞ্চলে ক্ষুদিরাম পাতর বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ব্লকের মাজুরার দিক থেকে কংসাবতী নদী সাঁতরে লালগড় থানার বলরামপুর গ্রামের দিকে আসছিলেন। কিন্তু নদীর জলে তীব্র স্রোতে তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে প্রশাসনিক কর্তাদের ফোনেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নবান্ন বৈঠক চলাকালীন তিনি মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের ফোন থেকে জেলায় জেলায় প্রশাসনিক কর্তাদের ফোন করেন। শনিবার রাতের খবর, এদিন সন্ধ্যার পর জল ছাড়া কিছুটা কমিয়েছে ডিভিসি।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ডিভিসির বাড়তি জলে একাধিক জেলায় বন্যার শঙ্কা, ক্ষুব্ধ নবান্ন

আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার

ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তা রাজ্যের

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই বড় আকার ধারণ করছে। চন্দ্রকোনার পর ডুবতে শুরু করেছে ঘাটালের বিভিন্ন এলাকা। এরই মধ্যে আরও আশঙ্কার কালো মেঘ পশ্চিমবঙ্গের আকাশে। শুক্রবার রাত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে ডিভিসি। যার ফলে একাধিক জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১টা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ৭০,৪৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে। এদিকে নবান্নের কর্তাদের দাবি, বারবার বলা সত্ত্বেও রাজ্যকে না জানিয়ে এই জল ছেড়েছে ডিভিসি। যার ফলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তা দিয়েছে নবান্ন। ডিভিসি-র দাবি, ঝাড়খণ্ডে প্রবল বর্ষণের জেরে জল বাড়ছে দামোদর-বরাকরে, বৃষ্টির জেরে মাইথন-পাঞ্চেত থেকে আরও বেশি জল ছাড়া হচ্ছে। ফলে নিম্ন দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীতে জলস্তর আরও বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর সেটা হলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমানের একাধিক জায়গায়। রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তর জানিয়েছে, শিলাবতী নদীতে জল বাড়ায় মেদিনীপুর ও ঘাটাল ডিভিশনের বহু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছিল। কিন্তু দপ্তরের তৎপড়তায় গড়বেতা ১ ও ২ ব্লক ও চন্দ্রকোনা টাউন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। ঘাটাল ব্লকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে।

মন্ত্রীর কথায়, ৫৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। যা দুর্গতদের দেওয়া হবে। পানীয় জলের জন্য ট্র্যাঙ্কার ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০ হাজার জামাকাপড় বিলি করা হয়েছে প্লাবিত এলাকায়। মানস বলেন, ‘এই বন্যায় প্রায় ২২০৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাগাতার খোঁজ নিচ্ছেন। গ্রামবাসী থেকে প্রসাশনের উচ্চস্তরের প্রতিটি ব্যক্তি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। ‘৭৮ সালের পর এই রকম হড়পা বান আসেনি। আমাদের ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজও চলছিল। তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত শনিবার রূপনারায়ণ ফুলে উঠেছিল। এখন জল একটু নামছে। বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। আর বৃষ্টি না হয় সেটাই প্রার্থনা।’

এদিকে ঝাড়গ্রামের বিনপুর ১ ব্লকের লালগড় থানার নেপুরা অঞ্চলে ক্ষুদিরাম পাতর বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ব্লকের মাজুরার দিক থেকে কংসাবতী নদী সাঁতরে লালগড় থানার বলরামপুর গ্রামের দিকে আসছিলেন। কিন্তু নদীর জলে তীব্র স্রোতে তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে প্রশাসনিক কর্তাদের ফোনেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নবান্ন বৈঠক চলাকালীন তিনি মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের ফোন থেকে জেলায় জেলায় প্রশাসনিক কর্তাদের ফোন করেন। শনিবার রাতের খবর, এদিন সন্ধ্যার পর জল ছাড়া কিছুটা কমিয়েছে ডিভিসি।