হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্তে ইরান, বিশ্বজুড়ে তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা, ভারতের উপরও প্রভাব পড়তে পারে

- আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার
- / 10
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের পর পাল্টা বাণিজ্যিক পদক্ষেপের পথে হাঁটছে ইরান। বিশ্বজুড়ে তেলের সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ পথ ‘গ্লোবাল অয়েল লাইফলাইন’ বলে পরিচিত হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে ইরানের সংসদ। এই প্রণালী বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
ইরানি সাংসদ ইসমাইল কোসারি জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনও বিবেচনাধীন, তবে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পারস্য উপসাগরকে আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত করা এই হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ জ্বালানি সরবরাহ হয়। ইরান ও ওমানের মধ্যবর্তী এই ৪০ কিমি চওড়া জলপথ বন্ধ হলে বৈশ্বিক তেল সরবরাহে বড়সড় প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্র দুই কিমি ব্যবধানে দুটি জাহাজ চলাচল করতে পারে এই সংকীর্ণ প্রণালী দিয়ে। এই পথ ব্যবহার করে সৌদি আরব, ইরাক, কুয়েত, কাতার এবং ইরান বিপুল পরিমাণে তেল রপ্তানি করে। যদি ইরান এই সমুদ্রপথে নৌবাহিনী মোতায়েন করে পথ বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এর ফলে হু হু করে বেড়ে যেতে পারে তেলের দাম।
ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারী ও ব্যবহারকারী দেশ। প্রতিদিন ভারতের প্রায় ৫০-৫৫ লক্ষ ব্যারেল তেল প্রয়োজন, যার মধ্যে প্রায় ২০ লক্ষ ব্যারেল আসে হরমুজ প্রণালী দিয়ে। এই প্রণালী বন্ধ হলে ভারতের তেল আমদানিতে বড়সড় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ফলে দেশে তেল সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলস্বরূপ বাড়তে পারে জ্বালানির দাম এবং প্রভাব পড়তে পারে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়েও।
চীন এবং অন্যান্য এশীয় দেশগুলিও এই সংকটের মুখোমুখি হবে। অর্থাৎ, ইরানের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে তা কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতি এবং শক্তি নিরাপত্তার উপর বড় প্রভাব ফেলবে।