০২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের আতঙ্কের কিছু নেই, মিডিয়া আগের থেকে স্বাধীন: বললেন প্রেস সচিব

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, বুধবার
  • / 30

মীর আফরোজ জামান, ঢাকা: বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠে কে কি বলল সেটা নিয়ে সাংবাদিকদের আতঙ্কের কিছু নেই। সরকারের পক্ষ থেকে কিংবা রাষ্ট্রীয় এজেন্সির পক্ষ থেকে মিডিয়াকে কোন ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে না। যদি হুমকি থাকে আমরা সেটা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের পর মিডিয়া অন্তবর্তী কালীন সরকারের সময় একেবারে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারির পাল্টা প্রেস সচিব সফিকুল আলম এ কথা বলেন।

এর আগে সোমবার(১৩ জানুয়ারি)রাতে ঢাকায় ভারতীয় মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন  ইমক্যাবের সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন সফিকুল আলম। এ সময় তিনি বলেন, সাংবাদিকদের এক্টিডিটেশন কার্ড কৌশলগত কারণে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এটা আপনারা আবার ফিরে পাবেন, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি। প্রেস সচিবের কথায়, মিডিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক স্বাধীন ভাবে লিখতে পারছে। মত প্রকাশ করতে পারছে।

জানা যায, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর সংবাদপত্র অফিসে হামলা, বিপুল সংখ্যক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের এবং তিন দফায় সাংবাদিকদের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের ঘটনা ঘটেছে।  পরবর্তীতে বাকি সব এক্রিডিটেশন কার্ডের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।  এর আগে সর্বশেষ ১১৮ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছিল তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি)। ৭ নভেম্বর অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা  মো. নিজামুল কবিরের সই করা এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা সাংবাদিকদের মধ্যে সম্পাদক, উপসম্পাদক, টেলিভিশনের বার্তাপ্রধানসহ বিভিন্ন পদে কর্মরত সাংবাদিকেরা রয়েছেন। এছাড়াও  ২৯ অক্টোবর ২০ জন এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ২৯ সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করে তথ্য অধিদপ্তর।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনের কেন্দ্রস্থল হলো সচিবালয়। পেশাদার গণমাধ্যম কর্মীদেরকে সচিবালয়ে ঢুকতে হয়। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেছে বেছে কতিপয় মিডিয়া কর্মীর নামে পাস ইশু করা হয়েছে। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা নিজামুল কবির এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, যেসব ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট সচিবালয় ঢুকতে চান তাদেরকে পিআইডির মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হবে। পিআইডি দরখাস্ত গুলো  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠাবে। ওই মন্ত্রণালয় কাকে পাশ দিবে সেটি তাদের বিষয়। তবে জানা গেছে, সচিবালয় সাংবাদিক ফোরামের ও ইকোনোমিক রিপোটারর্স ফোরামের তালিকা অনুযাযী কিছু পাস ইসু করা হয়েছে।  এ পর্যন্ত ভারতীয় মিডিয়ায় কর্মরত কোন সাংবাদিকের নামে পাস ইস্যু হয়নি।

ইতোপুর্বের কোনো সরকারের সময়ে এত সংখ্যক কার্ড বাতিল করা হয়নি কিংবা কারো এক্রিডিটেশান কার্ড স্থগিতও করা হয়নি। কেউ কেউ মিডিয়ার স্বাধীনতার ওপর বড় ধরণের হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করছেন। তবে আবার কেউ কেউ বলছেন, গত শেখ হাসিনার সরকারের সময়ের ১৫ বৎসরে যে ভাবে কার্ড ইসু করা হয়েছে যা নজীরবিহীন। আমলা,মন্ত্রী,রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্রলীগের তদবিরে অধিক সংখ্যক কার্ড ইসু হয়েছে যার মধ্যে হয়তো ২০ ভাগ প্রফশনাল সাংবাদিক থাকতে পারে। সুতরাং যারা প্রফেশনাল সাংবাদিক নন তাদের কার্ড স্থগিত নয় বাতিলের পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।

ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের বিষয়ে সফিকুল আলম  বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধের ব্যাপারে কেউ কেউ দাবি তুলেছেন। আমি মনে করি, ধর্মীয় কোন সংগঠন নিষিদ্ধ করা ঠিক হবে না। ইসকনকে যদি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে বিশ্বের অনেক দেশই প্রতিবাদে সরব হবে।

এদিনের মত বিনিময় সভায উপস্থিত ছিলেন, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ,বিএনপির প্রেস উইং সদস্য সাহেরুল কবির খান, বিজেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শোভন ইসলামসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

Tag :

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের আতঙ্কের কিছু নেই, মিডিয়া আগের থেকে স্বাধীন: বললেন প্রেস সচিব

আপডেট : ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, বুধবার

মীর আফরোজ জামান, ঢাকা: বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠে কে কি বলল সেটা নিয়ে সাংবাদিকদের আতঙ্কের কিছু নেই। সরকারের পক্ষ থেকে কিংবা রাষ্ট্রীয় এজেন্সির পক্ষ থেকে মিডিয়াকে কোন ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে না। যদি হুমকি থাকে আমরা সেটা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের পর মিডিয়া অন্তবর্তী কালীন সরকারের সময় একেবারে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারির পাল্টা প্রেস সচিব সফিকুল আলম এ কথা বলেন।

এর আগে সোমবার(১৩ জানুয়ারি)রাতে ঢাকায় ভারতীয় মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন  ইমক্যাবের সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন সফিকুল আলম। এ সময় তিনি বলেন, সাংবাদিকদের এক্টিডিটেশন কার্ড কৌশলগত কারণে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এটা আপনারা আবার ফিরে পাবেন, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি। প্রেস সচিবের কথায়, মিডিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক স্বাধীন ভাবে লিখতে পারছে। মত প্রকাশ করতে পারছে।

জানা যায, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর সংবাদপত্র অফিসে হামলা, বিপুল সংখ্যক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের এবং তিন দফায় সাংবাদিকদের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের ঘটনা ঘটেছে।  পরবর্তীতে বাকি সব এক্রিডিটেশন কার্ডের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।  এর আগে সর্বশেষ ১১৮ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছিল তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি)। ৭ নভেম্বর অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা  মো. নিজামুল কবিরের সই করা এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা সাংবাদিকদের মধ্যে সম্পাদক, উপসম্পাদক, টেলিভিশনের বার্তাপ্রধানসহ বিভিন্ন পদে কর্মরত সাংবাদিকেরা রয়েছেন। এছাড়াও  ২৯ অক্টোবর ২০ জন এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ২৯ সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করে তথ্য অধিদপ্তর।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনের কেন্দ্রস্থল হলো সচিবালয়। পেশাদার গণমাধ্যম কর্মীদেরকে সচিবালয়ে ঢুকতে হয়। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেছে বেছে কতিপয় মিডিয়া কর্মীর নামে পাস ইশু করা হয়েছে। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা নিজামুল কবির এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, যেসব ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট সচিবালয় ঢুকতে চান তাদেরকে পিআইডির মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হবে। পিআইডি দরখাস্ত গুলো  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠাবে। ওই মন্ত্রণালয় কাকে পাশ দিবে সেটি তাদের বিষয়। তবে জানা গেছে, সচিবালয় সাংবাদিক ফোরামের ও ইকোনোমিক রিপোটারর্স ফোরামের তালিকা অনুযাযী কিছু পাস ইসু করা হয়েছে।  এ পর্যন্ত ভারতীয় মিডিয়ায় কর্মরত কোন সাংবাদিকের নামে পাস ইস্যু হয়নি।

ইতোপুর্বের কোনো সরকারের সময়ে এত সংখ্যক কার্ড বাতিল করা হয়নি কিংবা কারো এক্রিডিটেশান কার্ড স্থগিতও করা হয়নি। কেউ কেউ মিডিয়ার স্বাধীনতার ওপর বড় ধরণের হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করছেন। তবে আবার কেউ কেউ বলছেন, গত শেখ হাসিনার সরকারের সময়ের ১৫ বৎসরে যে ভাবে কার্ড ইসু করা হয়েছে যা নজীরবিহীন। আমলা,মন্ত্রী,রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্রলীগের তদবিরে অধিক সংখ্যক কার্ড ইসু হয়েছে যার মধ্যে হয়তো ২০ ভাগ প্রফশনাল সাংবাদিক থাকতে পারে। সুতরাং যারা প্রফেশনাল সাংবাদিক নন তাদের কার্ড স্থগিত নয় বাতিলের পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।

ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের বিষয়ে সফিকুল আলম  বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধের ব্যাপারে কেউ কেউ দাবি তুলেছেন। আমি মনে করি, ধর্মীয় কোন সংগঠন নিষিদ্ধ করা ঠিক হবে না। ইসকনকে যদি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে বিশ্বের অনেক দেশই প্রতিবাদে সরব হবে।

এদিনের মত বিনিময় সভায উপস্থিত ছিলেন, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ,বিএনপির প্রেস উইং সদস্য সাহেরুল কবির খান, বিজেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শোভন ইসলামসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।