১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে মহারাষ্ট্রের পানভেল"দেশের নানা প্রান্তের মানুষ এই ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন।

Pahalgam Terror Attack: মাত্র ৭ দিন আগেই বিয়ে করেছিলেন নৌ-কর্মকর্তা বিনয়, মুহূর্তেই সব শেষ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
  • / 283

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মাত্র ৭ দিন আগে বিয়ে। কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে প্রাণ গেল নৌ-কর্মকর্তার।  জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে হওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় Pahalgam Terror Attack) দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। “উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে মহারাষ্ট্রের পানভেল”দেশের নানা প্রান্তের মানুষ এই ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন। বলা বাহুল্য, মঙ্গলবার পর্যটকদের একটি দলের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে বেসামরিক মানুষের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে উল্লেখ করেছে। হামলাটি Pahalgam Terror Attack) হয়েছে পহেলগামে। যা সড়কপথে প্রধান শহর শ্রীনগর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জানা গেছে, ট্রেকিং অভিযানে অংশ নেওয়া একটি পর্যটক দলকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি চালায় অজ্ঞাত পরিচয়ধারী কয়েকজন অস্ত্রধারী। হামলার সময় আশপাশে থাকা মানুষজন আতঙ্কে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। মুহূর্তেই আনন্দঘন পরিবেশ রূপ নেয় রক্তাক্ত অস্থিরতায়।

আরও পড়ুন: পণ্ডিতরা কাশ্মীর ফিরুক, কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর

অনেক তরুণ-তরুণীর জীবন থেমে গেছে পহেলগামের এই নারকীয় সন্ত্রাসে। মাত্র সাত দিন আগে বিয়ে করে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছিলেন। স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন ছোট্ট এক ছুটিতে।  কিন্তু সেখানেই জীবনের যবনিকা পতন হল তরুণ নৌবাহিনীর অফিসার বিনয় নারওয়ালের। ২৬ বছরের এই তরুণ ছিলেন হরিয়ানার কার্নালের বাসিন্দা। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার Pahalgam Terror Attack) শিকার হয়েছেন তিনি। সেই হামলায় অন্যান্য নিরীহ পর্যটকদের সঙ্গেই প্রাণ হারিয়েছেন লেফটেন্যান্ট বিনয়।

আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সংকল্প দৃঢ়: সিওলেতে পৌঁছে লিখলেন অভিষেক

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: জঙ্গিদের গুলিতে নিহত ‘সৈয়দ হুসেন শাহ’

আরও পড়ুন: রাজৌরিতে পাক গোলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা

নৌসেনা সূত্রে জানা গেছে, মাত্র দুইবছর আগে বাহিনীতে যোগ দেন বিনয়। বর্তমানে তার পোস্টিং ছিল কোচিতে। চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল তিনি বিয়ে করেন, আর ১৯ এপ্রিল ছিল তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যান কাশ্মীরে। কিন্তু মধুচন্দ্রিমার আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে। জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বিনয়ের দেহ। ভবিষ্যতের হাজারো স্বপ্ন, সুখের শুরু, সবকিছু এক নিমেষে থেমে যায়।

বিনয়ের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এলাকার মানুষজন বলছেন, বিনয় ছিলেন ভদ্র, মেধাবী এবং ভীষণ আশাবাদী একজন যুবক। তার মৃত্যু যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না কেউ। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘মাত্র ক’দিন আগেই বিয়ে হয়েছিল ওর। সবাই খুব খুশি ছিল। কে জানত এমন খবর শুনতে হবে। সত্যিই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বিনয়ের মতো আরো এক যুবক শুভম দ্বিবেদী। তিনিও সদ্যবিবাহিত। স্ত্রীকে নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়ে হামলার শিকার হন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ তাদের বিয়ে হয়েছিল। মাত্র দুই মাস পরেই সেই আনন্দের ছুটি ভয়ঙ্কর এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী-প্রতিরক্ষামন্ত্রী, জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক?

শুভমের চাচাতো ভাই সৌরভ দ্বিবেদী এএনআই-কে জানান, ‘শুভম তার স্ত্রীকে নিয়ে পহেলগামে ছিলেন। আমার চাচা জানান শুভমের মাথায় গুলি লেগেছে। মৃতদেহ পেতে এখনও ২-৩ দিন লাগবে, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরই মরদেহ দেওয়া হবে।’ এই ভয়াবহ হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন তাদের বিদেশ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন। মোদি ছিলেন সউদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফরে। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামের একটি সংগঠন।  যা নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-তৈয়বার একটি উপধারা হিসেবে পরিচিত। এই সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, তারা এ হামলার দায় নিচ্ছে।

স্থানীয়দের প্রতিবাদ, মোমবাতি মিছিল পহেলগামের স্থানীয় ট্যাক্সি ড্রাইভাররা মোমবাতি মিছিল করে এ হামলার Pahalgam Terror Attack) প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কাশ্মীরের বারামুলা, শ্রীনগর, পুঞ্চ, আখনুর ও কুপওয়ারাতেও স্থানীয়রা মিছিল করেছেন। জম্মুতে বজরং দল কর্মীরাও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। পহেলগাম ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট গুলজার আহমদ ওয়ানি বলেন, ‘এই হামলা আমরা তীব্রভাবে নিন্দা করি। এরা কেবল পর্যটক নয়, আমাদের পরিবারের মতো। আমরা চাই সরকার এই ঘটনার আসল দোষীদের খুঁজে বার করুক। পহেলগাম সবসময় শান্তিপূর্ণ জায়গা ছিল।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে মহারাষ্ট্রের পানভেল"দেশের নানা প্রান্তের মানুষ এই ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন।

Pahalgam Terror Attack: মাত্র ৭ দিন আগেই বিয়ে করেছিলেন নৌ-কর্মকর্তা বিনয়, মুহূর্তেই সব শেষ

আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মাত্র ৭ দিন আগে বিয়ে। কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে প্রাণ গেল নৌ-কর্মকর্তার।  জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে হওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় Pahalgam Terror Attack) দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। “উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে মহারাষ্ট্রের পানভেল”দেশের নানা প্রান্তের মানুষ এই ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন। বলা বাহুল্য, মঙ্গলবার পর্যটকদের একটি দলের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে বেসামরিক মানুষের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে উল্লেখ করেছে। হামলাটি Pahalgam Terror Attack) হয়েছে পহেলগামে। যা সড়কপথে প্রধান শহর শ্রীনগর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জানা গেছে, ট্রেকিং অভিযানে অংশ নেওয়া একটি পর্যটক দলকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি চালায় অজ্ঞাত পরিচয়ধারী কয়েকজন অস্ত্রধারী। হামলার সময় আশপাশে থাকা মানুষজন আতঙ্কে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। মুহূর্তেই আনন্দঘন পরিবেশ রূপ নেয় রক্তাক্ত অস্থিরতায়।

আরও পড়ুন: পণ্ডিতরা কাশ্মীর ফিরুক, কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর

অনেক তরুণ-তরুণীর জীবন থেমে গেছে পহেলগামের এই নারকীয় সন্ত্রাসে। মাত্র সাত দিন আগে বিয়ে করে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছিলেন। স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন ছোট্ট এক ছুটিতে।  কিন্তু সেখানেই জীবনের যবনিকা পতন হল তরুণ নৌবাহিনীর অফিসার বিনয় নারওয়ালের। ২৬ বছরের এই তরুণ ছিলেন হরিয়ানার কার্নালের বাসিন্দা। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার Pahalgam Terror Attack) শিকার হয়েছেন তিনি। সেই হামলায় অন্যান্য নিরীহ পর্যটকদের সঙ্গেই প্রাণ হারিয়েছেন লেফটেন্যান্ট বিনয়।

আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সংকল্প দৃঢ়: সিওলেতে পৌঁছে লিখলেন অভিষেক

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: জঙ্গিদের গুলিতে নিহত ‘সৈয়দ হুসেন শাহ’

আরও পড়ুন: রাজৌরিতে পাক গোলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা

নৌসেনা সূত্রে জানা গেছে, মাত্র দুইবছর আগে বাহিনীতে যোগ দেন বিনয়। বর্তমানে তার পোস্টিং ছিল কোচিতে। চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল তিনি বিয়ে করেন, আর ১৯ এপ্রিল ছিল তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যান কাশ্মীরে। কিন্তু মধুচন্দ্রিমার আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে। জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বিনয়ের দেহ। ভবিষ্যতের হাজারো স্বপ্ন, সুখের শুরু, সবকিছু এক নিমেষে থেমে যায়।

বিনয়ের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এলাকার মানুষজন বলছেন, বিনয় ছিলেন ভদ্র, মেধাবী এবং ভীষণ আশাবাদী একজন যুবক। তার মৃত্যু যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না কেউ। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘মাত্র ক’দিন আগেই বিয়ে হয়েছিল ওর। সবাই খুব খুশি ছিল। কে জানত এমন খবর শুনতে হবে। সত্যিই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বিনয়ের মতো আরো এক যুবক শুভম দ্বিবেদী। তিনিও সদ্যবিবাহিত। স্ত্রীকে নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়ে হামলার শিকার হন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ তাদের বিয়ে হয়েছিল। মাত্র দুই মাস পরেই সেই আনন্দের ছুটি ভয়ঙ্কর এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী-প্রতিরক্ষামন্ত্রী, জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক?

শুভমের চাচাতো ভাই সৌরভ দ্বিবেদী এএনআই-কে জানান, ‘শুভম তার স্ত্রীকে নিয়ে পহেলগামে ছিলেন। আমার চাচা জানান শুভমের মাথায় গুলি লেগেছে। মৃতদেহ পেতে এখনও ২-৩ দিন লাগবে, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরই মরদেহ দেওয়া হবে।’ এই ভয়াবহ হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন তাদের বিদেশ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন। মোদি ছিলেন সউদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফরে। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামের একটি সংগঠন।  যা নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-তৈয়বার একটি উপধারা হিসেবে পরিচিত। এই সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, তারা এ হামলার দায় নিচ্ছে।

স্থানীয়দের প্রতিবাদ, মোমবাতি মিছিল পহেলগামের স্থানীয় ট্যাক্সি ড্রাইভাররা মোমবাতি মিছিল করে এ হামলার Pahalgam Terror Attack) প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কাশ্মীরের বারামুলা, শ্রীনগর, পুঞ্চ, আখনুর ও কুপওয়ারাতেও স্থানীয়রা মিছিল করেছেন। জম্মুতে বজরং দল কর্মীরাও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। পহেলগাম ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট গুলজার আহমদ ওয়ানি বলেন, ‘এই হামলা আমরা তীব্রভাবে নিন্দা করি। এরা কেবল পর্যটক নয়, আমাদের পরিবারের মতো। আমরা চাই সরকার এই ঘটনার আসল দোষীদের খুঁজে বার করুক। পহেলগাম সবসময় শান্তিপূর্ণ জায়গা ছিল।