১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিমানবন্দরের আকাশে পাখির আনাগোনা রুখতে বিশেষ উদ্যোগ

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 57

ইন্তেখাব আলম: গুজরাতের আহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ঢিলছোড়া দূরে অবস্থিত মেঘানি নগর এলাকায় এয়ার ইন্ডিয়া ড্রিমলাইনার বিমানের ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবরে বিচলিত এবং স্তব্ধ গোটা দেশ। গত বৃহস্পতিবার মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার পর আরও কড়া এবং নিরাপদ বিমান পরিচালনার জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দেশের অধিকাংশ বিমানবন্দরেই।

কলকাতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়ান এবং অবতরণের ক্ষেত্রে যেন কোনও ধরনের সমস্যা না হয় তার জন্য সজাগ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যাত্রী সুরক্ষার পাশাপাশি নিরাপদ বিমান পরিচালনার জন্য রানওয়ে, ট্যাক্সি বে, হ্যাঙার এলাকা ছাড়াও বিমানবন্দরের আকাশসীমায় যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বিমানবন্দরের রানওয়ে এলাকায় পাখির আনাগোনা রুখতে পটকা ফাটানো হয়। এ ছাড়াও বিমানবন্দরের রানওয়েতে রাতে মাঝেমধ্যেই শেয়াল ঢুকে পড়ে। শিয়ালের উপদ্রব ঠেকাতে নৈশ টহলদারি এবং বিমানবন্দরের ভেতরের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিমানবন্দরের আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কাক-চিল জাতীয় পাখির বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায় ঘুড়ি, ফানুস কিংবা লেজার আলোর ব্যবহারে সমস্যায় পড়েন বিমানের পাইলটরা।

এ ব্যাপারে কলকাতা বিমানবন্দরের মুখ্য জনসংযগ আধিকারিক রাজেশ কুমার বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার জন্য গত মাসে বিমানক্ষেত্র পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং করা হয়েছে। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক ড. প্রভাত রঞ্জন বেউরিয়া, রাজ্যের মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য দফতর) নন্দিনী চক্রবর্তী, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক, বিধাননগর পুলিশ কমিশনার, স্থানীয় ৫ পুরসভার প্রতিনিধিরা। বিমানবন্দরের কাছাকাছি বিভিন্ন এলাকায় আবর্জনার স্তূপ জমে থাকায় কাক এবং চিলের আনাগোনা বাড়ছে।

ওই এলাকায় নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কারের পাশাপাশি পুরসভার ভ্যাটের মুখগুলি বন্ধ করার ব্যাপারে আলোচনা হয়। এ ছাড়া খোলা নর্দমা এবং নোংরার স্তূপ নিয়মিত সাফাই করার কথাও বলা হয়েছে। বিমানবন্দরের আশেপাশে থাকা নারকেল, সুপারি জাতীয় উচ্চতার গাছগুলিকেও চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই বৈঠকে। বিমানবন্দরের আশেপাশে লেজার বিমের ব্যবহারের ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন বিমানের পাইলটরা।

বিমানবন্দর পরিচালক জানান, এ ব্যাপারে ডিজিসিএ-র পক্ষ থেকে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে এবং এসওপি জারি করা হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের আশেপাশের অঞ্চলে লেজার আলোর ব্যবহার বন্ধ করতে জেলা প্রশাসন সহ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে কড়া নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য দফতর) নন্দিনী চক্রবর্তী।

কলকাতা বিমানবন্দর পরিচালক ড. প্রভাত রঞ্জন বেউরিয়া জানান, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বর্তমানে দেশের ৫ম ব্যস্ততম বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন ৪০০ টিরও বেশি বিমান যাতায়াত করে।’ বিমানের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিরাপদ বিমান পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বিমানবন্দর পরিচালক।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিমানবন্দরের আকাশে পাখির আনাগোনা রুখতে বিশেষ উদ্যোগ

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার

ইন্তেখাব আলম: গুজরাতের আহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ঢিলছোড়া দূরে অবস্থিত মেঘানি নগর এলাকায় এয়ার ইন্ডিয়া ড্রিমলাইনার বিমানের ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবরে বিচলিত এবং স্তব্ধ গোটা দেশ। গত বৃহস্পতিবার মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার পর আরও কড়া এবং নিরাপদ বিমান পরিচালনার জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দেশের অধিকাংশ বিমানবন্দরেই।

কলকাতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়ান এবং অবতরণের ক্ষেত্রে যেন কোনও ধরনের সমস্যা না হয় তার জন্য সজাগ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যাত্রী সুরক্ষার পাশাপাশি নিরাপদ বিমান পরিচালনার জন্য রানওয়ে, ট্যাক্সি বে, হ্যাঙার এলাকা ছাড়াও বিমানবন্দরের আকাশসীমায় যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বিমানবন্দরের রানওয়ে এলাকায় পাখির আনাগোনা রুখতে পটকা ফাটানো হয়। এ ছাড়াও বিমানবন্দরের রানওয়েতে রাতে মাঝেমধ্যেই শেয়াল ঢুকে পড়ে। শিয়ালের উপদ্রব ঠেকাতে নৈশ টহলদারি এবং বিমানবন্দরের ভেতরের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিমানবন্দরের আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কাক-চিল জাতীয় পাখির বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায় ঘুড়ি, ফানুস কিংবা লেজার আলোর ব্যবহারে সমস্যায় পড়েন বিমানের পাইলটরা।

এ ব্যাপারে কলকাতা বিমানবন্দরের মুখ্য জনসংযগ আধিকারিক রাজেশ কুমার বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার জন্য গত মাসে বিমানক্ষেত্র পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং করা হয়েছে। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক ড. প্রভাত রঞ্জন বেউরিয়া, রাজ্যের মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য দফতর) নন্দিনী চক্রবর্তী, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক, বিধাননগর পুলিশ কমিশনার, স্থানীয় ৫ পুরসভার প্রতিনিধিরা। বিমানবন্দরের কাছাকাছি বিভিন্ন এলাকায় আবর্জনার স্তূপ জমে থাকায় কাক এবং চিলের আনাগোনা বাড়ছে।

ওই এলাকায় নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কারের পাশাপাশি পুরসভার ভ্যাটের মুখগুলি বন্ধ করার ব্যাপারে আলোচনা হয়। এ ছাড়া খোলা নর্দমা এবং নোংরার স্তূপ নিয়মিত সাফাই করার কথাও বলা হয়েছে। বিমানবন্দরের আশেপাশে থাকা নারকেল, সুপারি জাতীয় উচ্চতার গাছগুলিকেও চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই বৈঠকে। বিমানবন্দরের আশেপাশে লেজার বিমের ব্যবহারের ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন বিমানের পাইলটরা।

বিমানবন্দর পরিচালক জানান, এ ব্যাপারে ডিজিসিএ-র পক্ষ থেকে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে এবং এসওপি জারি করা হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের আশেপাশের অঞ্চলে লেজার আলোর ব্যবহার বন্ধ করতে জেলা প্রশাসন সহ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে কড়া নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য দফতর) নন্দিনী চক্রবর্তী।

কলকাতা বিমানবন্দর পরিচালক ড. প্রভাত রঞ্জন বেউরিয়া জানান, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বর্তমানে দেশের ৫ম ব্যস্ততম বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন ৪০০ টিরও বেশি বিমান যাতায়াত করে।’ বিমানের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিরাপদ বিমান পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বিমানবন্দর পরিচালক।